সংক্ষিপ্ত

শুক্রবার কাশ্মীরের রাজৌরি সেক্টরে এই সন্ত্রাসবাদী হামলার ঘটনা। যাতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর মোট ৫ জওয়ান নিহত হন। আপাতত রাজৌরি এবং পুঞ্চ এলাকায় চলছে কড়া তল্লাশি। সেইসঙ্গে ড্রোনেও চলছে নজরদারি।

 

২ মাস আগেই সেরেছেন বিয়ে। পাত্রী প্রজ্ঞা গুরুং। এই মুহূর্তে দার্জিলিং কলেজের পড়ুয়া। নববিবাহিতা স্ত্রীর সঙ্গে ছুটি কাটিয়ে বাংলা নববর্ষের দিন সেনাবাহিনীর ডিউটিতে যোগ দিয়েছিলেন সিদ্ধান্ত ছেত্রী। বৃহস্পতিবারও পরিবারের সঙ্গে তাঁর কথা হয়। কিন্তু, শুক্রবার সন্ধ্যায় দার্জিলিং-এর বিজনবাড়িতে সিদ্ধান্তের পরিবারের কাছে যে খবর পৌঁছায় তার জন্য কেই প্রতীক্ষা করছিল না। সেনাবাহিনীর পাঠানোর বার্তায় জানানো হয় কাশ্মীরের রাজৌরিতে সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে লড়াই-এর সময় নিহত হয়েছেন সিদ্ধান্ত। তাঁর সঙ্গে প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৪ জন সেনাবাহিনীর সদস্য। সিদ্ধান্তের এই খবর আসার পর থেকেই মন মরে গিয়েছে বিজনবাড়ির। পাহাড়ি এই ছোট্ট লোকালয়ের সকলেই সকলকে চেনেন পারতপক্ষে। কারও খবরই কারও কাছে অজানা নয়। আর এর জন্যই সকলের সঙ্গে সকলের আত্নীয়তা। যার ফলে সিদ্ধান্তের মৃত্যু গভীরভাবে শোকাহত করে তুলেছে দার্জিলিং-এর বিজনবাড়িকে।

সিদ্ধান্তের মৃত্যউর খবর পৌঁছায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও। এরপরই শনিবার সকালে এক টুইট বার্তায় সিদ্ধান্তের জন্য শোকপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি লেখেন, '২৫ বছরের এক তরতাজা তরুণ সিদ্ধান্তের মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। দার্জিলিং-এর বিজনবাড়ির ছেলে সিদ্ধান্ত, কাশ্মীরের রাজৌরিতে প্রাণ হারানো ভারতীয় সেনাবাহিনী ৫ জওয়ানদের মধ্যে অন্যতম। রাজৌরিতে এক সন্ত্রাসবাদীদের খোঁজে চলা এক বিশেষ অভিযানে এই ঘটনা ঘটে। দেশেপ্রেমর খাতিরে আমাদের সাহসী বীর জওয়ানরা সন্ত্রাসবাদীদের নির্মূল করতে গিয়ে নিজেদের প্রাণ বলিদানেও পিছপা হন না। তাঁদের এই চরম বলিদান কেউ ভুলে যাবে না। সিদ্ধান্ত ছেত্রীর পরিবারের প্রতি আমি আমার গভীর শোক ও সমবেদনা জানাচ্ছি। এমনকী অন্যান্য বীর জওয়ানদের যারাও গতকাল সিদ্ধান্তের সঙ্গে প্রাণ বলিদান দিয়েছেন তাঁদের পরিবারের প্রতিও আমি গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করছি।' 
 

 

২০১৯সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন সিদ্ধান্ত। বিভাগ ছিল প্যারাকমান্ডার। ২০২১ সালে প্যারা-এসএফ-এ নিযুক্তি পান তিনি। সেনাবাহিনীর সতীর্থদের মতে দার্জিলিঙের ছেলে সিদ্ধান্ত ছিলেন প্রচন্ড সাহসী এবং একজন পরাক্রমী যোদ্ধা। যিনি যুদ্ধক্ষেত্রে আক্রমণের সঙ্গে সঙ্গে রণকৌশলে প্রতিপক্ষকে চমক দেওয়ার ক্ষমতা রাখতেন। বিজনবাড়িতে সিদ্ধান্তের মরদেহ পৌঁছাতে পৌঁছাতে মঙ্গলবার লেগে যাওয়ার কথা।

শুক্রবার গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সিদ্ধান্তদের টিম জঙ্গিদের খোঁজে বেরিয়েছিল সার্চ অপারেশনে। তল্লাশি অভিযানের সময় সিদ্ধান্তদের লক্ষ করে গুলি বর্ষণ করতে থাকে জঙ্গিরা। সিদ্ধান্তরা প্রত্যুত্তর দিলেও ততক্ষণে জঙ্গলের মধ্যে থেকে ছুটে বুলেটে সিদ্ধান্ত ও তাঁর ৪ সঙ্গী ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন।

আরও পড়ুন- 
পুলওয়ামা হামলায় জড়িত ১৯ জন সন্ত্রাসবাদীর মধ্যে নিহত আট, গ্রেফতার করা হয়েছে সাত জনকে, জানালেন এডিজিপি বিজয় কুমার 
৩০ হাজার টাকার বিনিয়ম ভারতে হামলার ছক, জঙ্গি পাঠিয়েছিল পাক কর্নেল- দাবি ভারতীয় সেনার 
'কাশ্মীর শান্ত, বাংলা কেন অশান্ত? মনে হয় সরকার ইচ্ছা করে করাচ্ছে', পাল্টা দিলীপ ঘোষ