১৯৯৫ সালের ভোটার কার্ড, দুবারের প্রিসাইডিং অফিসারের নাম বাদ পড়ল ভোটার লিস্ট থেকে। আধার কার্ড বাতিল, আশঙ্কার কালো মেঘ রাজ্যে থাকা বৈধ ভোটারদের মনে। 

রাজ্যে SIR প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ ভারতীর নেতৃত্বে এসেছেন কমিশনের প্রতিনিধি দল। বুধবার সকাল থেকেই রাজ্যের SIR সংক্রান্ত প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে উত্তরবঙ্গ বাদে সব জেলার নির্বাচন আধিকারিক তথা জেলাশাসকের সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠক করেন তারা। নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর আগামী ১৫অক্টোবরের পরই রাজ্যে শুরু হতে পারে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন বা SIR। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই শাসক-বিরোধীদের মধ্যে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। কিন্তু ভোটার তালিকার সংশোধন নিয়ে রাজ্যের সাধারণ মানুষের মনে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতেই সেই আশঙ্কা বা দুশ্চিন্তা আরও বাড়িয়ে দিল বারুইপুরের বাসিন্দা উৎপল সর্দারের ভোটার লিস্ট থেকে নাম বাদ পড়ার ঘটনা।

আর নির্বাচন কমিশনের এসআইআর নিয়ে তৎপরতার মাঝেই দু দুবারের ফাস্ট পোলিং অফিসার ও দু দু'বারের প্রিসাইডিং অফিসারের ভোটার লিস্ট থেকে নাম বাদ যাওয়া, আধার কার্ড বাতিল হওয়া নিয়ে আশঙ্কার কালো মেঘ ঘনাচ্ছে রাজ্যে থাকা বৈধ ভোটার ও ভারতীয় নাগরিকদের মধ্যে। বারুইপুরের উৎপল সর্দার, কলকাতা কর্পোরেশনে উচ্চপদে কর্মরত। যিনি দু-দুবার ফাস্ট পোলিং অফিসার হিসেবে নির্বাচন করিয়েছেন। আবার গত ২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন ও গত ২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে নিজের দায়িত্ব পালন করেছেন। আর তার নিজের ভোটার কার্ড বাতিল হওয়া, ভোটার লিস্ট থেকে নাম বাদ যাওয়া, আধার কার্ড বাতিল হওয়াতেই উঠছে একাধিক প্রশ্ন?

উৎপল বাবুর ১৯৯৫ সালের ভোটার কার্ড। তখন থেকেই তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে আসছেন নিজের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ অর্থাৎ ভোট দানের মধ্য দিয়ে। গত বছর উৎপল বাবুর স্ত্রী রেনু সর্দারের নাম বাদ যায় ভোটার লিস্ট থেকে। তারপর তিনি অনলাইনে আবেদন করলেও তা রিজেক্ট হয়ে গিয়েছে। আর সপ্তাহখানেক আগে নিজের ব্যক্তিগত কাজ করতে গিয়ে তিনি দেখেন, তার নিজের ভোটার কার্ড বাতিল হয়ে গিয়েছে। ভোটার লিস্ট থেকে বাদ গিয়েছে নাম। এর মধ্যেই আবার মোবাইলে মেসেজ এসেছে আধার কার্ড বাতিল নিয়ে। ব্যাংক থেকেও কেওয়াইসি লিংক করতে বলে মেসেজ এসেছে। উৎপল বাবু ভেবেই পাচ্ছেন না কি করবেন। একদিকে বাতিল হয়েছে ভোটার কার্ড, বাতিল হয়েছে আধার কার্ড, ব্যাঙ্কে কেওয়াইসি আপডেট করবেন কিভাবে?

তিনি আশঙ্কা করছেন তার একাউন্টে আদৌ মাইনে ঢুকবে কিনা? আর মাইনে ঢুকলেও তা তিনি তুলতে পারবেন কিনা? একদিকে ব্যাংক একাউন্ট থেকে মাইনে তুলতে না পারলে সংসার কি করে চলবে তার চিন্তা। অন্যদিকে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড বাতিল হওয়াতে রীতিমতো মানসিক চাপে নাজেহাল তার পরিবার। যদিও তিনি মনে করেন, রাজ্যে এস আই আর হওয়া প্রয়োজন। তিনি কোনভাবেই রাজ্যে এস আই আর হওয়া নিয়ে আশঙ্কা বা আতঙ্কবোধ করছেন না। তিনি ইতিমধ্যেই অনলাইনে ভোটার কার্ডের জন্য আবেদন করেছেন।

তিনি রাজ্যে এস আই আর কে স্বাগত জানাচ্ছেন। পাশাপাশি রাজ্যে আসা নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধি দলের কাছে তিনি আবেদন জানিয়েছেন, কিভাবে? কি কারণে? তার ভোটার লিস্ট থেকে নাম বাদ গেল, আধার কার্ড বাতিল হল? তা ক্ষতিয়ে দেখা হোক। আর এ রাজ্যে থাকা কোন বৈধ ভোটারের যাতে ভোটার লিস্টের তালিকা থেকে নাম বাদ না যায় সেটাও সুনিশ্চিত করুক নির্বাচন কমিশন।।