Mahalaya 2025: মহালয়ার ভোরে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের গলায় গ্রামোফোনেই শোনা যায় চণ্ডীপাঠ। বংশপরম্পরায় এখনও অক্ষত সেই অতীত ঐতিহ্য।  বিশদে জানতে পড়ুন সম্পূর্ণ প্রতিবেদন…

Mahalaya 2025:  আজ থেকে পিতৃপক্ষের অবসান। শুরু দেবীপক্ষের। রবিবার মহালয়া। আর এই মহালয়া মানেই ছোটোবেলার সেই নস্টালজিয়ার কথা মনে করিয়ে দেয়। ভোরবেলা উঠেই রেডিওতে কান পাতলেই শোনা যেত বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের গলায় চণ্ডীপাঠ। কিন্তু জানেন কী?কৃষ্ণনগরে মহালয়ার ভোরে আজও বাজে গ্রামোফোন রেকর্ড।

আজকের দিনে অনেক বাড়ি থেকে হারিয়ে গেলেও কৃষ্ণনগরের দেব পরিবারের ঘরে আজও অক্ষত রয়েছে গ্রামোফোন আর দুষ্প্রাপ্য রেকর্ড। প্রতিবছর মহালয়ার ভোরে আশপাশের মানুষ ভিড় করেন সেখানে, বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে অমর মহিষাসুরমর্দিনী শুনতে।

গ্রামোফোনে মহালয়া:-

নদীয়ার কৃষ্ণনগর পৌরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের সীমান্তপল্লীর এই দেব পরিবার প্রায় অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে আগলে রেখেছেন ঐতিহ্য। পরিবার প্রধান রমেশচন্দ্র দেবের সংগ্রহ উত্তরাধিকার সূত্রে বর্তমানে সামলাচ্ছেন। পেশায় রেলকর্মী, সমাজসেবক ও শিল্পী অরিন্দম দেব। তাঁর সংগ্রহে রয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচশো রেকর্ড ও পাঁচটি সচল গ্রামোফোন। লখনউ ও হায়দরাবাদ থেকে আনা ঠুমরি, রামকুমার চট্টোপাধ্যায়ের টপ্পা, প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়-সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের গান থেকে শুরু করে পুরনো যাত্রাপালা—সবই তাঁর ভাণ্ডারে। এমনকি আছে বীরেন্দ্রকিশোর ভদ্রের মহিষাসুরমর্দিনীর আসল রেকর্ডও।

অরিন্দম দেবের কথায়, ‘’গ্রামোফোন আর পুরনো রেকর্ড সচল রাখতে বেশ খরচা হয়, তবে এটাই তাঁর নেশা আর জীবনের মূলধন। প্রতিবছর মহালয়ার দিনে কচিকাঁচা থেকে প্রবীণ সবাই ভোরে চলে আসেন দেব বাড়িতে। তাদের মতে, টিভি বা মোবাইলে মহালয়া শোনার থেকে গ্রামোফোনে শোনার আনন্দ একেবারেই আলাদা—চোখ বিশ্রাম পায়, মনোযোগ বাড়ে, আর নস্ট্যালজিয়া ফিরে আসে।''

এদিকে, রবিবার মহালয়া উপলক্ষে শারদীয়ার আগমনী উল্লাসে মেতে উঠেছে কচিকাঁচারা। জীবন্ত‌ দেবদেবীর রূপে সকলকে মুগ্ধ করছে‌ তারা। দেবী দুর্গা, অসুর, কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতীকে শহরের রাস্তায় দেখে আনন্দে মেতে উঠছেন সকলেই। জলপাইগুড়ির নেতাজিপাড়া ও পরেশ মিত্র কলোনি এলাকার বাসিন্দা কয়েকজন মহিলা মিলে নিজের ছেলেমেয়েদের দেব-দেবীর রূপে সাজিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের আনন্দ দিচ্ছেন। 

দুর্গা সেজেছে মেরি বিশ্বাস নামে এক ছাত্রী। এছাড়া রণবীর বিশ্বাস, শ্বেতা‌ ঠাকুর সহ অন্যান্য কচিকাঁচার দল মিলে অসুর, সরস্বতী, লক্ষ্মী ও কার্তিক, গণেশের রূপ ধারণ করেছে। মহালয়ার আগে আগমনির সাজে জীবন্ত দুর্গা পরিবারের সদস্যরা মিলে আনন্দ দিচ্ছে এলাকার বাসিন্দাদের।

 মেরি বিশ্বাস জানায়, গত কয়েক বছর ধরেই মহালয়ার আগে এভাবে আমরা দুর্গা, অসুর, লক্ষ্মী, সরস্বতী ও কার্তিক, গণেশের রূপ ধারণ করে মানুষকে আনন্দ দিই। আমাদের সাজপোশাক সহ সমস্ত আয়োজন করে দিয়েছে মায়েরা।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।