সংক্ষিপ্ত
এর আগেও অয়নের বিপুল পরিমান হিসাব বহির্ভূত সম্পত্তির হদিশ পেয়েছিল তদন্তকারীরা। এবার পুরসভা ও হাইস্কুলের বাইরেও এবার প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতেও 'অয়ন-যোগের' প্রমাণ মিলছে।
নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে উঠে এল আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। শুধু পুরসভা নয়, নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত অয়ন শীলের অবাধ বিচরন ছিল প্রাথমিক স্কুলের নিয়োগেও। ইডি সূত্রে জানা যাচ্ছে, অয়নকে টাকা দিলে নাকি ধরাবাঁধা ছিল চাকরি। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ১০ জনের চাকরি নিয়ম বহির্ভূতভাবে করিয়েছিলেন অয়ন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই হুগলির বাসিন্দা। এবং এদের প্রত্যেকেরই চাকরি হয়েছে টাকার বিনিময় বলে দাবি ইডির। প্রসঙ্গত, এর আগেও অয়নের বিপুল পরিমান হিসাব বহির্ভূত সম্পত্তির হদিশ পেয়েছিল তদন্তকারীরা। এবার পুরসভা ও হাইস্কুলের বাইরেও এবার প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতেও 'অয়ন-যোগের' প্রমাণ মিলছে।
তদন্তকারী সংস্থার দাবি অয়ন শীলরা মূলত ওএমআর শিট বিকৃত করার কাজ করত। অর্থাৎ যোগ্য প্রার্থীদের খাতায় ঠিক উত্তরের পাশে ভুল উত্তরে টিক দিয়ে তাঁদের নম্বর কমিয়ে দেওয়াই ছিল অয়নদের কাজ। সেই জায়গায় টাকার বিনিময় নিয়োগ পেতেন অযোগ্য প্রার্থীরা। শুধু তাই নয় অযোগ্য প্রার্থীদের খালি ওএমআর শিটের পাশে সঠিক উত্তর লিখে খাতা ভরিয়েও দিতেন তাঁরা। শুধু শিক্ষক নিয়োগেই নয়, ওএমআর শিট বিকৃত করার অভিযোগ উঠেছে আরও নানা পরীক্ষায়। সব ক্ষেত্র মিলিয়ে অয়ন প্রায় ১,০০০ চাকরিপ্রার্থীর থেকে ৪৫ কোটি টাকা নিয়েছিলেন বলে দাবি ইডির।
উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার তৃণমূলনেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্য়ায় ঘনিষ্ঠ প্রোমোটার অয়ন শীল। তাঁর বিরুদ্ধে প্রায় ১০০ কোটি টাকার চাকর বিক্রির অভিযোগ। অয়নের সল্টলেকের ফ্ল্যাট থেকে মিলেছে ২০১২ থেকে ২০১৪ চালের টেট পরীক্ষার ওএমআর শিটও। অয়ন শীলের সূত্র ধরেই নিয়োগ দুর্নীতিতে উঠে এসেছে আরও এক নতুন নাম। অয়নের ঘনিষ্ঠ বন্ধবী শ্বেতা চক্রবর্তীর সঙ্গে মোটা টাকার লেনদেনের হিসেবও এসেছে ইডির হাতে। তবে এখানেই শেষ নয়। জানা যাচ্ছে নিয়োগ দুর্নীতির টাকা টলিউডেও ঢেলেছিলেন অয়ন শীল। বান্ধবী শ্বেতাকে সিনেমায় নামাতে নিজের প্রোডাকশন হাউসো খোলেন তিনি। শ্বেতা একাধারে কামারহাটি পুরসভায় ইঞ্জিনিয়ার পদে চাকরি করতেন আবার পাশাপাশি মডেলিংও করতেন। সূত্রের খবর ২০১৭ সালে অয়নের স্ত্রীর মাধ্যমেই শ্বেতার সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। অয়নের সংস্থার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে কাজ করতেন শ্বেতা।
পরে অয়ন শীলের হাত ধরেই টলিউডে পা রাখেন শ্বেতা। অয়নের প্রোডাকশন হাউসের প্রোযোজনায় নির্মিত ছবি 'কবাডি কবাডি'তেই ডেবিউ করেছিলেন তিনি। ওই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন ঋত্বিক চক্রবর্তী, সোহিনী সরকার, অর্জুন চক্রবর্তীর মতো অভিনেতারা। ছবির পরিচালনায় ছিলেন কৌশিক গাঙ্গুলী। যদিও ছবির কাজ শুরু হলেও শেষ হয়নি বলেই জানা যাচ্ছে। বড় পর্দায় দেখা না গেলেও বহু শর্ট ফিল্ম ও মডেলিং প্রজেক্টে দেখা গিয়েছে শ্বেতাকে। অয়ন শীলের সল্ট লেকের ফ্ল্যাট থেকে মিলেছে 'কাবাড্ডি কাবাড্ডি' ছবি-সংক্রান্ত কাগজপত্রও। এই সিনেমায় কে কত টাকা পারিশ্রমিক পেত সেই সংক্রান্ত নথিও মিলেছে। প্রসঙ্গত আগেই জানা গিয়েছে অয়নের অ্যাকাউন্ট থেকে শ্বেতার অ্যাকাউন্টে ২৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। অয়নের ৩২টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মধ্যে একটি রয়েছে শ্বেতারও। শুধু তাই নয় শ্বেতার নামে রয়েছে একটি হন্ডা সিটি গাড়িও। ইডির সন্দেহ এই বিলাসবহুল গাড়ির টাকা আসে অয়নের অ্যাকাউন্ট থেকে শ্বেতার অ্যাকাউন্টে ট্রেনসফার হওয়া ২৫ লাখ টাকা থেকেই।
আরও পড়ুন -
ভাড়াটে গুন্ডা এনে রাজ্যে অশান্তি করছে বিজেপি, মুঙ্গেরের 'সুমিত' তীরে কুণালের নিশানা বিজেপিকে
'দাঙ্গাবাজরা রেহাই পাবে না', দিঘা থেকে শিবপুর আর রিষড়া নিয়ে কড়া বার্তা মমতার