সংক্ষিপ্ত

সুজন চক্রবর্তী, দিলীপ ঘোষ শুভেন্দু অধিকারীরাই বেআইনি ভাবে নিয়োগের জন্য তদ্বির করেছিল। তিনি সরাসরি না করে দিয়েছিলেন।

অবশেষে মৌনতা ভাঙলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানির দিন আদালতে ঢোকার মুখে বিস্ফোরক মন্তব্য প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের অপসারিত মগাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দুর্নীতিকাণ্ডে সুজন চক্রবর্তী, দিলীপ ঘোষ শুভেন্দু অধিকারীর যোগ নিয়ে বড় অভিযোগ করলেন পার্থ। বিআইনি নিয়োগের ক্ষেত্রে হেভি ওয়েটদের তদ্বির করার দাবি তুললেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমকে স্পষ্ট জানান সুজন চক্রবর্তী, দিলীপ ঘোষ শুভেন্দু অধিকারীরাই বেআইনি ভাবে নিয়োগের জন্য তদ্বির করেছিল। তিনি সরাসরি না করে দিয়েছিলেন। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্যে নতুন করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।

বৃহস্পতিবার নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সরাসরি তিন নেতার নাম করে তোপ দাগলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সরাসরি সুজন চক্রবর্তী, দিলীপ ঘোষ শুভেন্দু অধিকারীর নাম করে তিনি বললেন,'যে সুজন চক্রবর্তী, দিলীপ বাবু, শুভেন্দু বাবুরা আজ বড় বড় কথা বলছেন, তাঁরা নিজের দিকে দেখুন। উত্তরবঙ্গে তাঁরা কী করেছেন? ২০০৯-১০ সালের সিএজি রিপোর্ট দেখুন। সমস্ত জায়গায় তদ্বির করেছে। কারণ আমি স্পষ্ট বলেছি করতে পারব না। আমি নিয়োগকর্তা নই।' এখানেই শেষ নয়, শুভেন্দু অধিকারী প্রসঙ্গে তিনি বলেন,'ও বড় বড় কথা বলছে। শুভেন্দুর ২০১১-২০১২ সালটা খুঁজে দেখুন। ও ডিপিএস নিয়ে কী অবস্থা করেছে দেখুন।' পাশাপাশি নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে পার্থ বলেন,'জন চক্রবর্তী, দিলীপ বাবু, শুভেন্দু বাবুরা সমস্ত জায়গায় চাকরির জন্য তদ্বির করেছেন। আমি বলেছিলাম এবিষয় কোনও সাহায্য করা তো দূরের কথা আমি কোনও বেআইনি কাজ করতে পারব না।'

প্রসঙ্গত এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার জেল হেফাজতের মেয়াদ শেষ হল রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। এদিন তাঁকে আদালতে হাজির করা হলে ফের জামিনের আর্জি জানান পার্থ। এজলাসে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন,'আমার কাছ থেকে একটা টাকাও উদ্ধার হয়নি। আমি এক টাকাও নিইনি।' পাশাপাশি তিনি আরও বলেন,'আমি তো জেল থেকে বেরিয়ে শিক্ষা দফতরে ফিরে যাচ্ছি না। অযোগ্য প্রার্থীদের কথা বলা হচ্ছে। আমার এখানে কী ভূমিকা? আর কতদিন বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের কথা বলে সময় নেবে সিবিআই?'

প্রসঙ্গত, এর আগেও শারীরিক অবস্থার কথা জানালেও জামিন মঞ্জুর হয়নি পার্থ-অর্পিতা্র। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় শনিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে ভার্চুয়াল শুনানিতে হাজিরা দেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। এদিন ফের শারীরিক অবস্থার কথা বলে জামিনের জন্য আবেদন করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু এদিনও জামিনে না করলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পার্থ-অর্পিতার ফের এক মাসের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিলেন বিচারক। এদিন আদালতে পার্থ-অর্পিতার দু'জনের কাছেই কিছু বলার আছে কি না, জানতে চান বিচারক। এদিন নগর দায়রা আদালতে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জনান তাঁর শারীরিক অবস্থা ভালো নেই। জেলে পর্যাপ্ত চিকিৎসা হচ্ছে না বলেও দাবি করেন পার্থ। অপরদিকে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ও জানান তাঁর শরীর বিশেষ ভালো যাচ্ছে না। জেল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিলেও সেখানে প্রয়োজনীয় ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না বলে দাবি করেন তিনি। পাশাপাশি জেলের ওয়ার্ডে থাকাও কষ্টকর বলেও জানান তিনি। কিন্তু আদালতে পার্থ-অর্পিতার কোনও যুক্তিই ধোপে টেকেনি। আরও একমাস তাঁদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত।