- Home
- West Bengal
- West Bengal News
- ভরা বর্ষায় 'ইলিশ বাঁচাও' উৎসব, ব্যতিক্রমী ভাবনায় নজর কেড়ে নিল ডায়মন্ড হারবার
ভরা বর্ষায় 'ইলিশ বাঁচাও' উৎসব, ব্যতিক্রমী ভাবনায় নজর কেড়ে নিল ডায়মন্ড হারবার
Hilsa Fish: বর্ষাকাল মানেই বাঙালির পাতে ইলিশের নানা পদের আশা থাকে। কিন্তু বাজারে বড় ইলিশের জোগান কম। ফলে দাম বেশি। তুলনায় খোকা ইলিশের দাম কম। কিন্তু বড় ইলিশের স্বাদের তুলনায় খোকা ইলিশের স্বাদ ফিকে। ফলে বড় ইলিশের জোগান বাড়ানো দরকার।

বর্ষাকালের শুরু থেকেই বিভিন্ন জায়গায় চলছে ইলিশ উৎসব, ব্যতিক্রম ডায়মন্ড হারবার
'ইলিশ বাঁচাও' উৎসব
বর্ষাকালে সুন্দরবন, কলকাতা-সহ বিভিন্ন জায়গায় যখন 'ইলিশ উৎসব' চলছে, তখন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারে চলছে 'ইলিশ বাঁচাও' উৎসব। বাঙালির প্রিয় এই মাছ যাতে বিলুপ্ত না হয়ে যায়, সবার পাতে বড় ইলিশ পড়ে, সেই লক্ষ্যে এই বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রসনাপ্রিয় বাঙালিরা ইলিশ বাঁচানোর উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন।
KNOW
গত কয়েক বছরে ডায়মন্ড হারবারে ইলিশের আকাল দেখা যাচ্ছে, এই কারণেই বিশেষ উদ্যোগ
ইলিশ বাঁচানোর উদ্যোগ
পুকুর বা নদীতে মাছ ধরার সময় মৎস্যজীবীরা সাধারণত জীবন্ত ছোট পেলে সেগুলিকে আবার জলে ছেড়ে দেন। কারণ, এই মাছগুলি পরবর্তীকালে বড় হয়ে উঠবে। কিন্তু ইলিশের ক্ষেত্রে সেরকম করা হয় না বা যায় না। কারণ, সমুদ্রে ইলিশ মাছ ধরতে গেলে জেলেরা যে বিশেষ জাল ব্যবহার করেন, তাতে ছোট মাছও ধরা পড়ে। ইলিশ খুব অল্প সময়ের জন্যই বেঁচে থাকে। এই কারণেই ইলিশ মাছের সঙ্কট তৈরি হয়েছে।
কয়েক বছরে ইলিশ মাছের আকাল দেখা দিতেই ডায়মন্ড হারবারে সচেতনতা তৈরি হয়েছে
ইলিশ বাঁচানোর সচেতনতা
রাজ্যের যে প্রান্তগুলি বর্ষাকালে ইলিশ মাছের আড়ত হিসেবে পরিচিত, তার অন্যতম ডায়মন্ড হারবার। সেখানে দীর্ঘদিন ধরে ইলিশ উৎসব হয়ে আসছে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে চাহিদার তুলনায় ইলিশের জোগান কম। এই কারণেই এবার ডায়মন্ড হারবারে ইলিশ বাঁচানোর বিষয়ে সচেতনতা তৈরি হয়েছে। এবার ইলিশ মাছ খাওয়ার উৎসবের পরিবর্তে ভবিষ্যতের কথা ভেবে ইলিশ মাছ বাঁচানোর জন্য উৎসবের আয়োজন করা হল।
বাংলাদেশের মতো এবার পশ্চিমবঙ্গেও ইলিশ মাছ বাঁচানোর জন্য বিশেষ উদ্যোগ
ছোট ইলিশ না ধরার বার্তা
ডায়মন্ড হারবারে এই ইলিশ বাঁচাও উৎসবে ছিলেন পুরসভার চেয়ারম্যান প্রণব দাস, ইলিশ বাঁচাও কমিটির প্রধান শাকিল আহমেদ, বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু কলেজের অধ্যক্ষ মানিক চৌধুরী, রফিকুল ইসলাম। মৎস্যজীবীরা যাতে ছোট মাছ ধরা যায় এমন জাল ব্যবহার না করেন, সে বিষয়ে সচেতনতা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে বড় ইলিশ না পেলেও, মৎস্যজীবীরা যাতে ছোট মাছ না ধরেন, সেই বার্তা দেওয়া হয়েছে।
ছোট ইলিশ ধরা বন্ধ করার জন্য মৎস্যজীবীদের সরকারি নিয়ম মেনে চলার বার্তা
সরকারি নিয়ম মানবেন মৎস্যজীবীরা
মৎস্যজীবীদের জাল ব্যবহার, ছোট ইলিশ না ধরা, বছরের নির্দিষ্ট সময়ে ইলিশ না ধরা সংক্রান্ত নানা নিয়ম রয়েছে। কিন্তু অনেক মৎস্যজীবীই সেই নিয়ম মানেন না। এই কারণেই বড় ইলিশের আকাল দেখা যাচ্ছে। খোকা ইলিশ ধরা বন্ধ না হলে ভবিষ্যতে ইলিশের সঙ্কট তীব্র হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই কারণেই ডায়মন্ড হারবারে ইলিশ বাঁচানোর জন্য উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
ইলিশ বাঁচানোর উৎসবের প্রশংসায় সাধারণ মানুষ, মৎস্যজীবীরা সচেতন হয়ে উঠবেন?
'ইলিশ বাঁচাও' উৎসবের অন্যতম আয়োজক শাকিল আহমেদ বলেছেন, ‘খোকা ইলিশ ধরা বন্ধ না হলে আগামীদিনে ইলিশ মাছকে জাদুঘরে দেখতে হবে। ইলিশ মাছ বাঁচাতে হবে। তবেই বাঙালির ইলিশ আবেগ রক্ষা পাবে।’ এই উদ্যোগ সফল হলে এবং মৎস্যজীবী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হলে ভবিষ্যতে ফের বড় ইলিশ পাওয়া যাবে বলে আশায় উদ্যোক্তারা।

