শাহনাজ পদত্যাগপত্রে লিখেছেন, 'চোর জেলা পরিষদের অংশীদার হয়ে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই আমি ১৭ ডিসেম্বর ডিভিশনাল কমিশনার সাহেবের কাছে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সদস্যপদ থেকে আমরা ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছি।' 

মুর্শিদাবাদে সংকটে তৃণমূল কংগ্রেস। হুমায়ুন কবীরের পর এবার পদ ছাড়লেন তাঁরই ঘনিষ্ট এক নেত্রী শাহনাজ বেগম। শুধু তাই নয়, মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদকে 'চোর' বলে দুর্নাম দিয়েই তিনি পদ ছাড়লেন। তবে তিনি হুমায়ুন কবীরের নতুন দলে যোগ দেবেন কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। শাহনাজ শুধুমাত্র জেলা পরিষদেরই পদ ছেড়েছেন। তিনি এখনও দল থেকে ইস্তফা দেননি।

শাহনাজ বেগমের চিঠি 

শাহনাজ পদত্যাগপত্রে লিখেছেন, 'চোর জেলা পরিষদের অংশীদার হয়ে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই আমি ১৭ ডিসেম্বর ডিভিশনাল কমিশনার সাহেবের কাছে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সদস্যপদ থেকে আমরা ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছি।' জেলার মানুষের উদ্দেশ্যে শাহনাজের বক্তব্য সোমপাড়া-১, সোমপাড়া ২, রামপাড়া ১ ও রামনগর বাছড়ার মানুষ ২০১৩ সাল থেকে একই আসনে পরপর তিনবার তাঁকে নির্বাচিত করেছেন। এলাকার উন্ন.নের স্বার্থে দলমত জাতি বর্ণ ধর্ম নির্বিশেষে অভিভাবক হয়ে তাঁকে আশীর্বাদ করেছেন। সেই মানুষদের প্রতি তাঁর কৃতজ্ঞতা, ভালবাসা ও শ্রদ্ধা চিরদিন থাকবে। কিন্তু তাদের দেওয়া পদের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন।

২০২৩ সালে জেলার মহিলা সভানেত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন শাহনাজ। সেই সময় তাঁর দাবি ছিল তিনি অন্যায়ের সঙ্গে আপোস করবেন না বলেই ইস্তফা দিয়েছন। এর আগেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুর্শিদাবাদ সফরের সময় তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছিলেন। সেই সময়েই তিনি জেলা পরিষদের অনিয়ম, বেনিয়ম নিয়ে একাধিকবার তিনি দল ও প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর দফতরেও চিঠি লিখেছিলেন। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। তিনি আরও জানিয়েছিলেন, সেই চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর দফতর পর্যন্ত যায়নি বলেই তাঁর আশঙ্কা।

শাহনাজ এক সময় কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ২০১৬ সালের আগে মুর্শিদাবাদে তৃণমূল কংগ্রেসের তেমন দাপট ছিল না। সেই সময় কংগ্রেসের জেলা পরিষদের সদস্য ছিলেন তিনি। পরবর্তীকালে তিনি দলবদল করেন। তাঁর হাত ধরেই মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ কংগ্রেসের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর তাঁকে বাদ দিয়ে রুবিয়া সুলতানাকে। স্থানীয় সূত্রে খবর তারপরই নিজেকে গুটিয়ে নেয় শাহনাজ। তবে বরাবরই তিনি ছিলেন হুমায়ুন কবীরের ঘনিষ্ট। আর সেই কারণে জেলায় গুঞ্জন এবার শাহনাজও হুমায়ুন কবীরের নতুন দলের সদস্য হতে পারে।