সংক্ষিপ্ত

কোর্টে আসার ও যাওয়ার সময় শান্তনু সব দায়ই ঝেড়ে ফেলেন। পাল্টা তৃণমূলের অপর নেতা কুন্তল ঘোষেক কোর্টেই বল ঠেলে দেন। যাওয়ার সময়ই আদালতের বাইরে থাকা সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন সব দেখতে পারেন।

 

নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের জামিনের আবেদন খারিজ। আগামী ২৪ মার্চ পর্যন্ত এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের হেফাজতে থাকার নির্দেশ দিল ব্যাঙ্কশাল কোর্ট। আজই শেষ হয়েছিল শান্তনু ইডি হেফাজতের দুই দিন। শান্তনুর আইনজীবী জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন , পাল্টা ইডি হুগলির যুব তৃণমূল নেতাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আবেদন জানিয়েছিল।

তবে এদিন কোর্টে আসার ও যাওয়ার সময় শান্তনু সব দায়ই ঝেড়ে ফেলেন। পাল্টা তৃণমূলের অপর নেতা কুন্তল ঘোষেক কোর্টেই বল ঠেলে দেন। যাওয়ার সময়ই আদালতের বাইরে থাকা সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন সব দেখতে পারেন। কুন্তলই টাকা নিয়ে দুর্নীতি করেছে। তিনি আরও বলেন তিনি কোনও টাকা দেননি। অন্যদিকে আদালতে যাওয়ার সময়ই কুন্তলের দিকেই অভিযোগের তীর ছুঁড়ে দিয়েছিলেন।

অন্যদিকে ইডি এদিন আদলতে যাজান শান্তনুর কাছে প্রচুর তথ্য প্রমাণ রয়েছে। চাকরি প্রার্থীদের তালিকা থেকে শুরু করে তাদের অ্যাডমিট কার্ডের ছবিও রয়েছে। তার ফোনগুলি সোনার খনির মতই মূল্যবান। ইতি আরও জানিয়েছে শান্তনুর বিশাল সম্পত্তির হদিস তারা পেয়েছে। সেগুলি কতটা বৈধ আর কতটা অবৈধ তা জানারও প্রয়োজন রয়েছে। তারা আরও বলেন কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক শান্তনু। কোথা থেকে এল এই বিপুল অর্থ- জানতেও জেরার প্রয়োজন রয়েছে। পাশাপাশি ইডি এদিন আদালতে জানিয়ে দেয়- নিয়োগ দুর্নীতিতে হয়েছে ৩৫০ কোটি টাকার আর্থিক কেলেঙ্কারি হয়েছে। তদন্ত আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সামনে আসবে।

আগে তাদের মনে হয়েছিল এই দুর্নীতি ১১০ কোটি টাকার। কিন্তু এখন তাদের অনুমান এই রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে ৩৫০ কোটি টাকার। তবে এখানেই শেষ নয়, আগামী দিনে আরও বড় কোনও ব্রেকথ্রু তাদের হাতে আসবে বলেও আশাবাদী তারা। ইডির আইনজীবী বলেন, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে আগামী দিনে নতুন তথ্য সামনে আসবে। তাই শান্তনুকে আরও জেরা করার প্রয়োজন রয়েছে। শান্তনুর বিপুল সম্পত্তির সন্ধান পেয়েছে, তার উৎসও জানতে চায় ইডি।

শুক্রবার গ্রেফতার করা হয়েছিল হুগলির যুব তৃণমূল কংগ্রেস নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে। শনিবার আদালতে পেশ করা হয়েছিল। সেই সময় তাকে দুই দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল ব্যাঙ্কশাল আদালত। আজই শেষ হয়েছে হেফাজতের দিন। এদিন আদালতে পেশ করা হয় শান্তনুকে। এদিন আদালতে যাওয়ার সময় শান্তনু সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডের মাথা কুন্তল। যে তদন্ত অন্যদিকে চালিত করার চেষ্টা করছে। আর সেই ফাঁকে টাকা অন্যরাজ্যে পাচার করছে।

যদিও তদন্তকারীদের হাতে যা তথ্য রয়েছে তাতে স্পষ্ট যে কুন্তল শান্তনু আর তাপস একে অপরকে চিনতি। শান্তনু নিজের ডায়েরিতে সমস্ত তথ্য লিখে রাখত। রীতিমত খাতা মেনটেইন করেই নিয়োগ দুর্নীতি টাকা তোলা হয়েছে। যারা চাকরি পেয়েছে তাদের নামও যেমন লেখা রয়েছে, তেমনই লেখা রয়েছে যাদের চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়া সম্ভব হয়নি। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির কথায় দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিল রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা।