সংক্ষিপ্ত
সুন্দরবনের নদীপথ দিয়ে সন্দেশখালির সরবেড়িয়া ও আশপাশের গ্রামে কারা এসে ঢুকছে, সেই প্রসঙ্গেই সরগরম হয়ে উঠেছে রাজ্য রাজনীতি।
উত্তর ২৪ পরগণা জেলার সন্দেশখালি থানার সরবেড়িয়া গ্রামে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের(ইডি) আধিকারিকরা আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই বঙ্গ রাজনীতির আলোচনায় উঠে এসেছে শাসকদল তৃণমূল -কংগ্রেসের জেলবন্দি মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ‘ঘনিষ্ঠ’ তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের নাম । বামফ্রন্ট সরকারের আমলে বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে শাহজাহান শেখ স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছিলেন বলে অভিযোগ । উত্তর ২৪ পরগনায় তৎকালীন সিপিএম নেতা মজিদ মাস্টার ও বাবু মাস্টারদের কল্যাণে ভোটার কার্ডও পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি । এই শাহজাহান শেখের ‘ধনকুবের’ হওয়ার পিছনে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বড় ভূমিকা আছে বলে মনে করেন বিরোধী দলের নেতানেত্রীরা।
শাহজাহান শেখকে নিয়ে টালমাটালের মধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি মুখপাত্র ড. অর্চনা মজুমদার । তাঁর অভিযোগ, হিন্দু ধর্মীয় মানুষদের কাছ থেকে প্রায় ১৩৯ একর জমি কেড়ে নিয়ে রোহিঙ্গা কলোনি ও তিনটি ট্রাস্ট গড়েছেন সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখ । একটি বিতর্কসভায় বিজেপি নেত্রী বলেন, ‘আমি বসিরহাটের বিজেপির দায়িত্বে আছি । সন্দেশখালিতে কাজ করি । শেখ শাহজাহান সম্বন্ধে শুভেন্দুদা কি বলছেন…. আমি যেটা দেখেছি, তিনি (শাহজাহান) ২০২১ সালের পরে অবিচারে হিন্দুদের সম্পত্তি ১ টাকা দরে জোর করে গান পয়েন্টে পাওয়ার অফ এটর্নি করে নিয়েছেন । তিনটি ট্রাস্ট- সুমাইয়া আবেদা ট্রাস্ট, হাবু আবু সিদ্দিকি ট্রাস্ট এবং বাসন্তী এডুকেশনাল ট্রাস্ট ও রোহিঙ্গা কলোনি গড়েছেন প্রায় ১৩৯ একর জায়গার উপর । যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৬ কোটি টাকার উপরে।’
তিনি আরও বলেন, 'ওই জমিগুলি কোনও মুল্য না দিয়েই গায়ের জোরে তিনি দখল করেছেন। বাকি কথা আর বললাম না। এখন এই লোকটার বাড়িতে ইডি অভিযানে গেলে সেটা অন্যায়? …. হিন্দুদের সম্পত্তি দখল করে রোহিঙ্গা কলোনি গড়ে শেখ শাজাহান রোহিঙ্গা পুষে রেখেছেন । একশ দিনের কাজ রোহিঙ্গাদের দিয়ে করান। সেখানে তাঁর অসংখ্য ফিশারি আর অবৈধ ইঁট ভাটা রয়েছে। ওখানে কিছুই আর অবশেষ নেই । সুন্দরবনের সব কাঠ পাচার হয়ে গেছে।’
উল্লেখ্য, বিজেপি নেত্রীর উল্লেখ করা এলাকাতেই রোহিঙ্গাদের জায়গা দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সুন্দরবনের নদীপথ দিয়ে সন্দেশখালির সরবেড়িয়া ও আশপাশের গ্রামে কারা এসে ঢুকছে, সেই প্রসঙ্গে চুপ থাকতে দেখা গেছে এলাকার স্থানীয় মানুষদেরও। তাঁরাও অনেকে বলেছেন যে, এলাকার পুলিশ-প্রশাসনও ওই অঞ্চলটি এড়িয়ে চলেন।