কলেজের পরিচালন সমিতির বৈঠকে তৃণমূলের ব্লক সভাপতির দাদাগিরির ভিডিও ভাইরাল, দুই অধ্যাপককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ। সমালোচনা সব দলের, অভিযোগ অস্বীকার অভিযুক্তের।
দিন কয়েক আগে প্রকাশ্যে মদ্যপানের ঘটনার প্রতিবাদ করায় বেলিয়াতোড় যামিনী রায় কলেজের এক আদিবাসী অধ্যাপককে শাসক দলের মদতে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল। যে ঘটনার প্রতিবাদে গর্জে উঠেছিল আদিবাসী সমাজ। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে আবার সংবাদের শিরোনামে উঠে এলো বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় যামিনী রায় কলেজ। সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে ওই কলেজেরই পরিচালন সমিতির বৈঠকে তৃণমূলের ব্লক সভাপতিকে দেখা গেল তুমুল হম্বিতম্বি করতে। অভিযোগ পরিচালন সমিতির ওই বৈঠকে কলেজের দুই অধ্যাপককে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেন তৃণমূলের ওই নেতা। বিষয়টি নিয়ে ওই দুই অধ্যাপক ই মেইলের মাধ্যমে লিখিত অভিযোগও জানান। এই ঘটনার কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিজেপি ও সিপিএম। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় যামিনী রায় কলেজকে। গত ১৪ অগাস্ট রাতে প্রকাশ্যে মদ্যপানের প্রতিবাদ করায় আক্রান্ত হন ওই কলেজেরই ইতিহাস বিষয়ের আদিবাসী অধ্যাপক মার্সাল সোরেন। শাসক দলের মদতেই ওই হামলা হয়েছে এই দাবি তুলে দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে রবিবার বেলিয়াতোড় বাজারে মিছিল করে আদিবাসী সমাজ। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার যামিনী রায় কলেজের পরিচালন সমিতির বৈঠকের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওর সত্যতা যাচাই না করা গেলেও জানা গেছে গত ২৬ মার্চ কলেজের সেমিনার রুমে পরিচালন সমিতির বৈঠকটির আয়োজন করা হয়েছিল। সেই বৈঠকে কলেজের অধ্যক্ষ ও অধ্যাপকেরা ছাড়াও পরিচালন সমিতির সরকারি প্রতিনিধি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের বড়জোড়া ব্লকের সভাপতি কালীপদ মুখোপাধ্যায় ও স্থানীয় তৃনমূল নেতা জয়ন্ত দাস। অভিযোগ কলেজের অধ্যক্ষর উস্কানিতে তৃনমূলের ওই দুই নেতা তুমুল হম্বিতম্বি শুরু করেন। ওই বৈঠকে তৃণমূলের ওই দুই নেতা কলেজের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক লক্ষ্মীনারায়ণ যাদব ও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক কুন্তল সিনহাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন বলেও অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে সেই সময় ওই দুই অধ্যাপক বেলিয়াতোড় থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলেও পুলিশ সেই অভিযোগ নেয়নি বলে অভিযোগ। পরে ই মেইলের মাধ্যমে বিষয়টি বাঁকুড়ার পুলিশ সুপারকে জানানো হলেও পুলিশ কোনো পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ। নিগৃহীত অধ্যাপকদের দাবি এমন ঘটনায় একদিকে যেমন কলেজের পঠন পাঠনের পরিবেশ লাটে উঠেছে তেমনই নিরাপত্তাহীনতায় ভূগে অধ্যাপকেরা একে একে অন্য কলেজে বদলীর আবেদন জানাবেন । যার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়বে কলেজের পঠন পাঠনে।
এদিকে কলেজের পরিচালন সমিতির বৈঠকে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সহ তৃণমূল নেতাদের হম্বিতম্বি ও শাসানির ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে কড়া সমালোচনা করেন বড়জোড়ার প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক সুজিত চক্রবর্তী। পোস্ট করার কিছু সময়ের মধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যেতেই সমালোচনায় সরব হয়েছে বিজেপি ও সিপিএম। অভিযুক্ত ব্লক সভাপতি অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে অভিযোগকারী দুই অধ্যাপক এবং সিপিএম এর প্রাক্তন বিধায়ক সুজিত চক্রবর্তীর বিরুদ্ধেই পাল্টা সুর চড়িয়েছেন।


