সংক্ষিপ্ত

বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হান্ডা এক প্রেস বিবৃতিতে এই অডিটকে ‘শিক্ষক হয়রানি’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি এর প্রতিবাদ করে বলেন, মিড ডে মিলে বরাদ্দ নামমাত্র অর্থ, অথচ বারবার অডিট করে শিক্ষকদের আসামির কাঠগড়ায় তুলতে চাইছে রাজ্য। 

একশো দিনের কাজ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মতো এবার মিড ডে মিলের প্রকল্পেও আলাদাভাবে সোশ্যাল অডিট করার জন্য নির্দেশিকা জারি করল পশ্চিমবঙ্গের মিড ডে মিল দফতর। এই নির্দেশিকা অনুযায়ী রাজ্যের প্রতিটি জেলা এবং মহকুমা থেকে ২০টি স্কুলে সোশ্যাল অডিট করার নির্দেশিকা জারি হয়েছে। জেলাশাসক, মহকুমা শাসকদের ২৮ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিটি জেলা থেকে ২০টি স্কুলের নাম অডিটের জন্য পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রের নির্দেশেই মিড ডে মিল প্রকল্প বা 'প্রধানমন্ত্রী পোষণ শক্তি' নির্মাণ যোজনার সামাজিক অডিট করা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর।

নির্দেশিকা অনুযায়ী, ২ ডিসেম্বর থেকে রাজ্যের স্কুলগুলিতে মিড ডে মিল প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের অডিট শুরু হবে। ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে জমা দিতে হবে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট। দ্বিতীয় পর্যায়ের অডিট শুরু হবে আগামী বছর অর্থাৎ, ২০২৩-এ। এভাবে ছয় মাস অন্তর অন্তর মিড ডে মিলের প্রকল্পের উপর অডিট চলবে বলে জানা গেছে।

অডিটের সময় প্রতিটি স্কুল থেকে তিনজন অভিভাবককে সঙ্গে রাখা হবে। তাদের বিশেষ প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে। রাজ্যের সোশাল অডিট ইউনিট এই প্রশিক্ষণ দেবেন বলে নির্দেশিকায় উল্লেখ করা রয়েছে। অডিটের প্রথম দিনেই সামাজিক নিরীক্ষা দল স্কুলের পারিপার্শ্বিক অবস্থা, রান্নাঘর, ডাইনিং রুম, স্কুলের পানীয় জলের ব্যবস্থা, স্টোর রুম প্রভৃতি খতিয়ে দেখবেন। তারপর ব্যালেন্স শিট যাচাই, মিড ডে মিলের ব্যালান্স অ্যাকাউন্ট বুক খতিয়ে দেখা হবে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে মিড ডে মিলের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের। তারপর স্কুলের অভিভাবকদের দিয়ে সেগুলি যাচাই করা হবে।

সরকারি সূত্রে খবর, স্কুলগুলিতে মিড ডে মিল প্রকল্পে অনিয়মের প্রবণতা কমবে এবং স্বচ্ছতা আনতে নাকি এই অডিটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যদিও বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হান্ডা এক প্রেস বিবৃতিতে এই অডিটকে ‘শিক্ষক হয়রানি’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি এর প্রতিবাদ করে বলেন, মিড ডে মিলে বরাদ্দ নামমাত্র অর্থ, অথচ বারবার অডিট করে শিক্ষকদের আসামির কাঠগড়ায় তুলতে চাইছে রাজ্য।

আনন্দ হান্ডার দাবি, যখন দেশের প্রতি ৩ জন শিশুর মধ্যে ১জন অপুষ্টিতে ভুগছে এবং দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি আকাশছোঁয়া, তখন প্রাথমিকে মাথাপিছু বরাদ্দ ৪৯ পয়সা বৃদ্ধি করে মাত্র ৫.৪৫ টাকা এবং উচ্চ প্রাথমিকে ৭৪ পয়সা বৃদ্ধি করে ৮.১৭ টাকা দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে বেশিরভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র সংখ্যা ৫০-এর নীচে। ফলে সামান্য টাকায় মিড ডে মিল চালাতে শিক্ষকদের নাভিশ্বাস উঠছে। সেখানে পুষ্টি তো দূরের কথা শিশুদের পেট ভরানোই এখন বালাই হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অন্যদিকে, বেশিরভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ই এখন চালানো হচ্ছে ১ বা ২ জন শিক্ষক দিয়ে। কোনও অশিক্ষক কর্মী না থাকায় শিক্ষাদানটাই গৌণ হয়ে গেছে। তার ওপর কেবলমাত্র মিড ডে মিলের নানা ধরনের খাতা সারা এবং অডিট শিক্ষক হয়রানি ছাড়া কিছু নয়। এহেন হয়রানি বন্ধ করবার পাশাপাশি শিক্ষকদের বাদ দিয়ে মিড ডে মিল পরিচালনার দাবি করেন প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক।


আরও পড়ুন-
সুপ্রিম কোর্টের নজরে এবার সমলিঙ্গের বিয়ে, আইনি মর্যাদা নিয়ে যুগান্তকারী রায়ের আশায় গোটা ভারত
প্রত্যেক ১১ মিনিটে নিজের পরিবারের দ্বারাই খুন হচ্ছেন ১ জন করে মহিলা, আন্তর্জাতিক হিংসা দূরীকরণ দিবসে চাঞ্চল্যকর বার্তা রাষ্ট্রসঙ্ঘের
সোনা পাচারেও জড়িয়ে গেল রাজ্যের শাসক দলের নাম, গ্রেফতার বনগাঁর দাপুটে তৃণমূল নেতার ছেলে