সংক্ষিপ্ত

প্রেমের মরশুমে কাঁটা হয়েছে নিয়োগ দুর্নীতি। সেই দুর্নীতির কোপে পড়ে কিছু কিছু মানুষ চাকরি হারাচ্ছেন তো বটেই, কিন্তু, তাঁদের সেই শাস্তির ফল ভুগতে হচ্ছে বিয়ে করতে যাওয়া অগুন্তি পাত্র বা পাত্রীদের।

নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে জেরবার বঙ্গবাসী। একের পর এক সরকারি ক্ষেত্রে নিয়োগে যে বিপুল পরিমাণ কারচুপি হয়েছে, তার তল খুঁজতে নাজেহাল হয়ে যাচ্ছেন তদন্তকারীরা। হাজার হাজার মানুষ দুর্নীতির মাধ্যমেই চাকরিতে বহাল হয়েছিলেন বলে দেখা যাচ্ছে, এবার হাইকোর্টের বিচারপতির রায়ে সেই হাজার হাজার মানুষ আবার চাকরি থেকে বরখাস্তও হতে শুরু করে দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে একেবারেই বিপদের মুখোমুখি হতে চাইছেন না বাংলার পাত্র বা পাত্রীর বাবা-মায়েরা। কোনওরকম ঝুঁকির মধ্যেই যেতে চান না তাঁরা। মেয়ের বিয়ের সম্বন্ধ দেখতে সরাসরি পাত্রপক্ষের কাছ থেকে চেয়ে বসছেন টেট পাশ করার সার্টিফিকেট।

যদিও, শুধুমাত্র শিক্ষকের চাকরিই নয়, দুর্নীতির কোপে পড়ে চাকরি হারিয়েছেন বহু অশিক্ষক কর্মীও। জলপাইগুড়িতে এরকমও নজির রয়েছে যে, বিয়ের একেবারে পরের দিনেই চাকরি হারানোর খবর পেয়েছেন নববিবাহিত পাত্র। কালরাত্রির দিনে কাল ঘনিয়ে আসায় তাঁর জীবনে নেমে এসেছে সমূহ বিপদ। বিয়ের পর বরের চাকরি চলে যাওয়ায় ডিভোর্স দিয়েও বাপের বাড়ি চলে গিয়েছেন বহু ঘরণী, এমনও নজির রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। সেই ধরনের কোনও পন্থাই অবলম্বন করতে না চেয়ে একেবারে গোড়ার গলদ নির্মূল করেই শুভ কাজে নামতে চাইছেন পাত্রী বা পাত্রের বাবা-মায়েরা। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় এবার শুরু হয়েছে স্কুল-শিক্ষকের চাকরির আসল-নকল যাচাই।

ইতিমধ্যেই পাত্রপাত্রীর বিজ্ঞাপনে স্পষ্ট লিখে দেওয়াও শুরু হয়ে গেছে যে, ‘শিক্ষকের চাকরি থাকলে যোগাযোগ করবেন না’। কারণ, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এখনও পশ্চিমবঙ্গের বহু মানুষের সরকারি চাকরি রয়েছে তদন্তকারীদের আতস কাঁচের তলায়। যেকোনও মুহূর্তে আবার চাকরি হারাতে পারেন হাজার হাজার মানুষ। তাই, নিজের সন্তানের বৈবাহিক জীবনের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কায় ভুগছেন বাবা-মায়েরা। পাত্র বা পাত্রীকে জিজ্ঞেস করা হচ্ছে, তাঁরা কোন সালে চাকরি পেয়েছেন, বা, কীভাবে চাকরিতে ঢুকেছেন, ইত্যাদি খুঁটিনাটি। তার সঙ্গে এবার চাকরির আগে টেট পাশের জন্য কে কত নম্বর পেয়েছিলেন, তা-ও যাচাই করে নিচ্ছেন পাত্রীর বাবামায়েরা। এখানেই শেষ নয়। অনেক বাবা-মা এটাও প্রশ্ন করছেন যে, পাত্র তৃণমূল সরকারের আমলে চাকরি পেয়েছিলেন, নাকি, বাম আমলে? কোনও কোনও তরুণ-তরুণীকে এরও জবাবদিহি করতে হচ্ছে যে, তিনি চাকরির সময় কাউকে কোনওপ্রকারের ঘুষ দিয়েছিলেন কিনা। জীবনের মধুরতম পদক্ষেপ নেওয়ার আগে এইসমস্ত বিব্রতকর প্রশ্নের মুখোমুখি হতে থাকায় কার্যত বিরক্তই হচ্ছেন বহু পাত্র বা পাত্রী। ফলে, ২০২৩-এর বিয়ের মরশুমের আগে জীবনসঙ্গী খুঁজতে যাওয়া স্থগিতও করে দিচ্ছেন অনেক মানুষ। ‘এইসব ঝামেলা মিটলে, তবেই পাত্রী খুঁজতে যাওয়া হবে’, এইরূপ আশা রেখে আগামী মরশুমের দিকে চেয়ে বসে আছে বাঙালির তরুণ প্রজন্ম।

আরও পড়ুন-
আরশোলার কেক, নাকি, কেকের ওপর আরশোলা? JW Marriott-এর মতো খাস বেকারিতে এ কি দেখলেন অভিনেত্রী মিষ্টি সিং!
প্রধান শিক্ষকের অনুমতি সত্ত্বেও শুভেন্দুর সভা বাতিল করল চন্দ্রকোণার স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি, ‘সভা হবেই’ জানাল বিজেপি
Earthquake News: মধ্যরাতে থরথর করে কেঁপে উঠল মাটি, আফগানিস্তান থেকে উত্তর ভারত, পাপুয়া নিউগিনিতেও ভূমিকম্প