দিল্লির নিক্কি যাদব হত্যাকাণ্ডের নয়া মোড়। দ্বিতীয় বিয়ের আগেই প্রেমিকা নিক্কিকে মন্দিরে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছিল সাহিল। ২০২০ সালে তাদের বিয়ের কথা জানত পরিবারও।
২৩ বছর বয়সী নিক্কি যাদবের সঙ্গে শুধুমাত্র প্রেমের সম্পর্কই ছিল না সাহিল গেহলটের। সাহিল নিক্কির সঙ্গে বিয়েও করেছিল। তাদের বিবাহিত সম্পর্ক প্রায় তিন বছররের। দিল্লি পুলিশ সূত্রের খবর ২০২০ সালে একটি মন্দিরে নিয়ে গিয়ে সাহিল নিক্কিকে বিয়ে করেছিল। ইতিমধ্যেই দিল্লি পুলিশের হাতে এসেছে তাদের বিয়ের ছবি। প্রাথমিক তদন্তে বাড়ির লোকদের পছন্দ করা মেয়েকে বিয়ে করতেই সাহিল নিক্কি যাদবকে হত্যা করেছে।
দিল্লি পুলিশ সূত্রের খবর, সাহিলের দ্বিতীয় বিয়ে হয়েছিল গত ৯ ফেব্রুয়ারি। বিয়ের দিন সকালে প্রায় তিন ঘণ্টা নিক্কির সঙ্গে এদিক সেদিক ঘোরাঘুরির পর একটি পার্কিং লটে নিক্কির গলায় ডেটা কেবিলের তার পেঁচিয়ে শ্বাসরোধকে হত্যা করে। তারপর নিক্কির দেহ দুমড়ে মুচড়ে একটি ব্যাগে ভরে সে গাড়িতে করে নিয়ে যায় তাদের পৈত্রিক ধাবা। সেখানেই একটি ফ্রিজারের মধ্যে দেহ লুকিয়ে রাখে। দিল্লি পুলিশের অনুমান লোকচক্ষুর অন্তরানে নিক্কির দেহ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু তার আগেই পুলিশ ফ্রিজ থেকে নিক্কির দেহ উদ্ধার করে। তারপরই গ্রেফতার করা হয়েছে সাহিলকে।
দিল্লি পুলিশ সূত্রের খবর ফার্মা গ্রাজুয়েট সাহিল ২০২০ সালের অক্টোবরে উত্তর প্রদেশের নয়ডার একটি আর্য মন্দিরে বিয়ে করেছিল। পুলিশের অনুমান সাহিল - নিক্কি বিয়ের কথা সাহিলের পরিবারের সদস্যরাও জানত। কিন্তু বিয়ে মেনে নেয়নি। তারা বিয়েতে যথেষ্ট অসন্তুষ্টও ছিল। আর সেই কারণে নিক্কির কোনও দিনও গেহলট পরিবারের বউ হয়ে সাহিলের পৈত্রিক বাড়িতে ওঠা সম্ভব হয়নি।
পুলিশ সূত্রের খবর আর্য মন্দিরের পুরোহিত নিক্কি আর সাহিলের বিয়ের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন বিয়ের সময় দম্পতি খুব খুশি ছিল। তবে পরিবারের কোনও সদস্যই উপস্থিত ছিল না। দিল্লি পুলিশ ইতিমধ্যেই সাহিল আর নিক্কির বিয়ের সংশাপত্র উদ্ধার করেছে।
অন্যদিকে দিল্লি পুলিশ ইতিমধ্যেই সাহিলার বাবা বীরেন্দ্র , ভাই অনীশ ও নবীনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার করা হয়েছে সাহিলের বন্ধু লোকেশ ও অমরকে। দিল্লি পুলিশের অনুমান নাক্কি খুনের বিষয়ে এরা প্রত্যেকেই জড়িত। পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডের তদন্তে এরা প্রত্যেকেই কমবেশি পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে। দিল্লি পুলিশ সূত্রের খবর নিক্কির সঙ্গে ছেলের বিয়ে কথা জানা সত্ত্বেও সাহিলের পরিবারে ২০২২ সালে তার অন্যত্র বিয়ের ঠিক করে। বাগদানের রাত্রে নিক্কির সঙ্গে বেরিয়ে ছিল সাহিল। আর বিয়ের দিন সকালেই নিক্কিকে সে হত্যা করে।
পুলিশের এখনও পর্যন্ত তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, নিক্কি, তার সম্পর্ক নিয়ে খুবই কঠোর ছিল। সাহিলকে সে খুব ভালবাসত। সাহিল অন্যত্র বিয়ে করলে সে মামলা করারও হুমকি দিয়ে রেখেছিল। সাহিলকে কাছে পেতে মরিয়া ছিল নিক্কি। সে সাহিলের সঙ্গে গোয়া যাওয়ারও পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু তার আগেই সাহিল তাকে হত্যা করে বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুনঃ
শ্রদ্ধার ছায়া! সহবাস-সঙ্গীকে হত্যা করে দেহ লুকিয়ে রাখল ধাবার ফ্রিজে, পুলিশের জালে প্রেমিক
বিয়ের দিন সকালেই নিক্কিকে হত্যা করে মোবাইল ডেটা মুছে দেয় সাহিল, তারপরই দেহ ফ্রিজে রাখে
Delhi crime: আফতাবের কথা আমান্য করায় শ্রদ্ধাকে খুন , ৬ হাজার পাতার চার্জশিটে দাবি পুলিশের