করোনার পর কেরলে নিপা ভাইরাস সংক্রমণের পরিস্থিতিও ক্রমে খারাপ হচ্ছে। কিশোরের মৃত্যুর পর, আরও ২ জন সংক্রামিত, ২০ জন উচ্চ ঝুঁকিতে।
করোনার পর কেরলে নিপা ভাইরাস সংক্রমণের পরিস্থিতিও ক্রমে খারাপ হতে শুরু করেছে। রবিবারই কোঝিকোরে এক ১২ বছর বয়সী কিশোরের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছিল। সে নিপা পজিটিভ ছিল বলে নিশ্চিত করেছিল ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি (এনআইভি)। আর তারপর, এইদিনই আরও ২টি নিপা সংক্রমণের ঘটনা সনাক্ত হল এই দক্ষিণী রাজ্যে। নিপা সংক্রমণ ঠেকাতে তৎপর হয়ে উঠেছে কেরল প্রশাসন। অন্তত ২০ জনের নিপা সংক্রামিত হওয়ার উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে বলে সনাক্ত করা হয়েছে।
এদিন, কোঝিকোড়র এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যুর হয় ওই ১২ বছরের কিশোরের। তারপরই কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীনা জর্জ নিশ্চিত করেছিলেন তার মৃত্যুর কারাণ নিপা ভাইরাস সংক্রমণ। কেরহলের স্বাস্থ্য দফতর থেকে জানানো হয়েছে, মোট ১৮৮ জন ব্যক্তি ওই মৃত কিশোরের সংস্পর্শে এসেছিলেন। তাঁদের প্রত্যেকেরই সংক্রামিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এঁদের মধ্যে ২০ জন সরাসরি ওই কিশোরের সংস্পর্শে এসেছিলেন। তাঁদের সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। এদের মধ্যেই দুইজন স্বাস্থ্যকর্মী আছেন, যাদের দেহে ইতিমধ্যেই নিপা সংক্রমণের উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। উচ্চ ঝুঁকির ২০ জনকেই কোঝিকোড় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বীনা জর্জ।
তবে এর বাইরেও কেউ ওই কিশোরের সংস্পর্শে এসে থাকতে পারেন। কিংবা ওই কিশোরের যেখান থেকে সংক্রামিত হয়েছিল, সেখান থেকে সংক্রামিত হতে পারেন। এই কারণে ওই কিশোর গত কয়েকদিনে কোন কোন জায়গায় গিয়েছিল, তার একটি রুট ম্যাপও প্রকাশ করেছে কেরল সরকার। চিহ্নিত এলাকাগুলিতে যারা যারা গিয়েছেন, তাদের সকলকে সরকারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। এতে করে সম্ভাব্য সংক্রামিতদের যাতে কেউ বাদ না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে চাইছে সরকার।
আরও পড়ুন- এবার তালিবানি ধর্ষণের শিকার পুরুষও - দেশ ছাড়ার টোপ দিয়ে তৈরি ফাঁদ, দেখুন ছবিতে ছবিতে
আরও পড়ুন - ২০ বছর পর সামনে এল আল-কায়েদার গোপন ষড়যন্ত্র - ৯/১১-র পরই ছিল আরও বড় হামলার ছক, দেখুন
সেইসঙ্গে সরকারে পক্ষ থেকে কিছু তাত্ক্ষণিক জনস্বাস্থ্যমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। যার মধ্যে ওই কিশোরের পরিবার, গ্রাম এবং বিশেষ করে মলপ্পুরমের মতো অনুরূপ টপোগ্রাফিযুক্ত এলাকায় সংক্রামিতের অনুসন্ধান করতে বলা হয়েছে। কেরলের স্বাস্থ্য মন্ত্রক আরও জানিয়েছে, গত ১২ দিনের আক্রান্তদের সংস্পর্শে কারা এসেছিলেন, সেইসব যোগাযোগের সন্ধান, তাদের পৃথকীকরণ এবং সন্দেহভাজন সংক্রামিতদের বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে। পরীক্ষার জন্য ব্যাপকহারে নমুনা সংগ্রহও করা হচ্ছে।
২০১৮ সালের মে মাসে কেরলের কোঝিকোড় জেলায় প্রথম নিপা ভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। সেইবার এই ভাইরাল সংক্রমণএ ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল। বর্তমানে করোনাভাইরাস সংক্রমণেও দেশের প্রধান হটস্পট হয়ে উঠেছে কেরল।