যোগীর রাজ্যে আন্দোলনকারী কৃষকদের বিশাল জনসভা। তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে অনড় আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনকারী কৃষকরা এবার সরাসরি বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমে পড়ল। উত্তর প্রদেশের মুজাফ্ফরনদরে একটি বিশাল সভার আয়োজন করা হয়েছে। এই সভায় থেকে উত্তর প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরোধিতা শুরু করেছে আন্দোলনকারী কৃষকরা। কেন্দ্রের নতুন তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু হয়েছে দিল্লির সীমানায়। তারপর থেকে ধীরে ধীরে গোটা দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে সেই আন্দোলন। এতদিন এই আন্দোলন কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ছিল।তবে এদিন আন্দোলনকারী কৃষকদের বিজেপি বিরোধিতার স্পষ্ট রূপ দেখল দেশের মানুষ।
কৃষক আন্দোলনের অন্যতম নেতা তথা ভারতীয় কৃষক ইউনিয়নের প্রধান রাকেশ টিকাইত রবিবার উত্তর প্রদেশের জনসভা থেকে স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করে না নেওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলনস্থল পরিত্যাগ করবেন না। প্রয়োজনে তারা দিল্লি সীমানাতেই মৃত্যু বরণ করবেন।
আগামী বছর উত্তর প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। মুখ্যমুন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা যোগী আদিত্যনাথের ওপর চাপ তৈরি করতে, আন্দোলনকারী কৃষকরা একাধিক পন্থা গ্রহণ করেছে। যদিও কেন্দ্র বলেছে মুষ্টিমেয় কিছু কৃষকই এই আন্দোলনে সামিল হয়েছে। তবে আন্দোলনকারী কৃষকরা তাতে দমার নয়। তারা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে উত্তর প্রদেশের এই জনসভা থেকেই তারা কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবি আরও জোরালো করতে চায়। সংসদে যারা বসে রয়েছে তাদের কানে যাতে কৃষকদের দাবি পৌঁছায় তার জন্যই এই জনসভার আয়োজন করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে আন্দোলনকারীরা।
করোনা-মহামারিকালে বদলে গেছে প্রেমের সংজ্ঞা, ভার্চুয়াল প্রেমে আস্থা নতুন প্রজন্মের
বিধানসভা ভোটের আগে কোনও রকম কোনও অরাজক পরিস্থিতি এড়াতে সতর্ক রয়েছে উত্তর প্রদেশ সরকার। প্রায় ৮ হাজার নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা বাজায় রাখতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। জনসভায় উপস্থিত রয়েছে রাজেশ টিকাইত, তার দাদা নরেশ টিকাইত ও কৃষক আন্দোলনের প্রথম সারির নেতৃত্ববৃন্দ। ঐতিহাসিক জিআইসি মাঠেই আয়োজন করা হয়েছে এই জনসভার।
এদিনের সভা থেকে রাকেশ টিকাইত স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে হবে। সরকার যদি আইন প্রত্যাহার না করে তাহলে গোটা দেশেই এজাতীয় সভার আয়োজন করা হবে। এই দেশ কাউকে বিক্রি করতে কৃষকরা দেবে না বলেও স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে। এদিনের সভায় হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। আগামী বছর উত্তর প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচন। কিন্তু তার আগেই কৃষকরা বিজেপির বিরুদ্ধে একাধিক কর্মসূচি গ্রহণ করে চাপে ফেলতে চাইছে যোগী সরকারকে। কৃষকদের পক্ষ থেকে জানান হয়েছে রাজ্যের একাধিক গ্রামে গিয়ে আন্দোলনের সপক্ষে প্রচার চালাবে তারা। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর ভারত বন্ধেরও ডাক দেওয়া হয়েছে।
এক সন্তান নীতির পক্ষে জোর সওয়াল, প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিষয়টি তুলবেন বলে জানালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী
অন্যদিকে কিছুটা হলেও আবারও তাল কাটলেন বিজেপি নেতা বরুণ গান্ধী। সোশ্যাল মিডিয়া বার্তা দিয়ে আন্দোলনকারী কৃষকদের পক্ষেই সওয়াল করেন তিনি। তিনি বলেন সরকারকে কৃষকদের যন্ত্রণা বুঝতে হবে। তিনি আরও বলেন, মুজাফ্ফরপুরে লক্ষ লক্ষ কৃষক আজ বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। তাদের রক্ত-মাংসের সঙ্গে আমাদের রক্ত-মাংসের কোনও পার্থক্য নেই। তাদের সঙ্গে সম্মানজনক ব্যব
হার করা হবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। পাশাপাশি কৃষকদের দৃষ্টিভঙ্গি বুঝতে আর তাদের সঙ্গে কাজ করতে হবে বলেও জানিয়েছেন।
এদিনের সভায় উপস্থিত রয়েছে রাষ্ট্রীয় লোকদলের নেতা জয়ন্ত চৌধুরী। তিনি বলেন কৃষকদের থেকে সরকারের কী বিপদ থাকতে পারে তা তিনি বুঝতে পারছেন না। এদিনের সভায় হাপুর, বুলন্দশহর, আলিগড়সহ উত্তর প্রদেশের একাধিক এলাকা থেকে প্রচুর কৃষক যোগ দিয়েছে। দিল্লির উপকণ্ঠে গত ৯ মাস ধরেই চলছে কৃষক আন্দোলন। তবে উত্তর প্রদেশ কৃষকদের সবথেকে বড় মহাপঞ্চায়েত এটাই বলে দাবি করেছে বিক্ষোভকারীরা। মোর্চার তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, জাতি, ধর্ম, রাজ্য শ্রেণী নির্বিশেষে সকল মানুষই তাদের সমর্থন করেছে।