ভারতের একেবারের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত মণিপুরের ইম্ফলের এই বাজারে খুঁজলে কোন দোকানদার চোখে পড়বে না। প্রতিটি দোকানে পাবেন মহিলা দোকানদার।
এই বাজারে প্রবেশ করলে আচমকাই মনে হবে সমাজে কোনও পুরুষ নেই। কারণ এই বাজার পুরোপুরি মহিলা দ্বারা নিয়্ন্ত্রিত। এই বাজারটিতে কোনও পুরুষ দোকানদার খুঁজে পাওয়া যাবে না। এখানে প্রতিটি দোকান নিয়ন্ত্রণ করেন মহিলারা। শুনতে অবাক লাগলেও, এটাই সত্যি। এই বাজারের পোশাকি নাম ইমা (Ima) কেইঠাল মার্কেট (Koithal market)। তবে লোকে জানে মাদারস মার্কেট (Mother’s Market) নামে।
ভারতের একেবারের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত মণিপুরের ইম্ফলের এই বাজারে খুঁজলে কোন দোকানদার চোখে পড়বে না। প্রতিটি দোকানে পাবেন মহিলা দোকানদার। পুরো বাজারটি নিয়ন্ত্রণ করেন তারা। কি নেই সেই বাজারে। টাটকা ফুল,ফল, সবজি থেকে মাছ, মাংস, সনপত্র সবই পাওয়া যায়। বিক্রি করেন মহিলারা।
বাড়ির সদর দরজায় ছোট্ট কিছু পরিবর্তন, ফিরিয়ে দেবে আপনার অর্থ ভাগ্য
Vastu Tips: বেডরুমের এক কোণায় রেখে দিন নুন, সংসারে ফিরবে শান্তি-সমৃদ্ধি
সূর্যের গা থেকে ছিটকে বেরোচ্ছে আগুনের গোলা, ভয়ঙ্কর সুন্দর ভিডিও প্রকাশ করল নাসা
তবে এই বাজারের ইতিহাস খুব একটা সুখকর নয়। প্রচলিত কাহিনী জানাচ্ছে, স্থানীয় মানুষদের জোর করে খাটিয়ে নেওয়ার জন্যই ১৫৩৩ খ্রীষ্টাব্দে এই বাজার গড়ে তোলা হয়। স্থানীয় ভাষায় সেই জোর করে শ্রম নেওয়ার পদ্ধতিকে লালুপ কাবা বলে। সেই নিষ্ঠুর পদ্ধতিতে মণিপুরী ছেলেদের ঘর-পরিবার ছেড়ে অনেক দূরে তাদের কাজের জায়গাতেই পড়ে থাকতে হত। ফলে বাড়ি সামলে বাইরের সব কাজ করতে হত মেয়েদেরই। এভাবে দিনের পর দিন সব সামলাতে গিয়ে তাঁরা বাইরের সব কাজে দক্ষ হয়ে ওঠেন।
শুধু বাড়ি সামলানো বা দোকান বাজার করাই নয়, মহিলাদের করতে হত চাষাবাদ, ফসল ফলানোর কাজও। সেই উৎপাদিত শষ্য বাজারে বিক্রিও করতে হত বাড়ির মহিলাদের। সেই থেকেই গোড়া পত্তন এই বাজারের। পুরুষবিহীন পরিবার চালাতে চালাতে মহিলারা নিজেদের স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তুলেছিলেন এই কাজে।
শুধু বাজার বা নিজেদের সমাজ চালানোই নয় । ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে লড়াইয়েও সমান পারদর্শী ছিলেন তারা | ব্রিটিশদের নিষ্ঠুর নীতির বিরুদ্ধে এখানকার মহিলারা সংঘটিত করেছিলেন ওম্যান মার্চ বা নুপি ল্যান। ঔপনিবেশিক অত্যাচারের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠার পরম্পরা আজও অব্যাহত। সিএএ (CAA) বিরোধিতার আঁচ পড়েছিল এখানেও। ৫০০০ মহিলার মিছিলে উঠেছিল স্লোগান।