সংক্ষিপ্ত
আজিজুলের জন্ম ১৯৩৯ সালে। অবিভক্ত বাংলার বর্ধমানের যবগ্রামে জন্ম হয়েছিল তাঁর। এমনকী, তাঁর শৈশবও কেটেছে এই দেশে। তারপর তাঁরা চলে যান বাংলাদেশে। তখন অবশ্য তা ছিল পূর্ব পাকিস্তান।
প্রয়াত বাংলাদেশের (Bangladesh) কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক (Hasan Azizul Huq)। বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। স্থানীয় সময় অনুসারে, সোমবার রাত ৯টা নাগাদ নিজের রাজশাহীর বাড়িতেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। কয়েক মাস ধরেই তাঁর শরীর (Health) ভালো যাচ্ছিল না। সেপ্টেম্বর (September) মাসে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি (Hospitalized) করা হয়েছিল। তারপর অবশ্য সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন। কিন্তু, এরপর ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। অবশেষে ১৫ নভেম্বর নিজের বাড়িতেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
আজিজুলের জন্ম ১৯৩৯ সালে। অবিভক্ত বাংলার বর্ধমানের (Burdwan) যবগ্রামে জন্ম হয়েছিল তাঁর। এমনকী, তাঁর শৈশবও কেটেছে এই দেশে। তারপর তাঁরা চলে যান বাংলাদেশে। তখন অবশ্য তা ছিল পূর্ব পাকিস্তান। ছাত্রাবস্থাতেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন। সেই সময় পাকিস্তান (Pakistan) সেনার হাতে নির্যাতিত হতে হয়েছিল তাঁকে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর। পরে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন- 'ময়নাতদন্তের রিপোর্টে পরিবর্তন আনতে বিজেপি কর্মীর দেহ স্থানান্তর', অভিযোগ শুভেন্দুর
বাংলাদেশের প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক ও ছোটগল্পকার হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। ১৯৬০-এর দশকে লেখালিখি শুরু করলেও প্রথম উপন্যাস লেখেন ২০০৬ সালে। তাঁর উপন্যাস 'আগুন পাখি'-র ভক্ত দুই বাংলাতেই রয়েছেন। এছাড়া নিয়মিত বিভিন্ন পত্রিকায় তাঁর ছোটগল্প প্রকাশিত হয়েছে। প্রথম গল্পগ্রন্থ 'সমুদ্রের স্বপ্ন শীতের অরণ্য'। এ বইয়ের শকুন গল্পটি বিশেষ ভাবে প্রশংসা পেয়েছিল। এ ছাড়াও তাঁর অন্য গল্পগন্থগুলির মধ্যে রয়েছে ‘আত্মজা ও একটি করবী গাছ’, 'তৃষ্ণা', 'উত্তর বসন্তে', 'বিমর্ষ রাত্রি', ‘নামহীন গোত্রহীন', 'প্রথম প্রহর'। পাঠক মনে স্থান পেয়েছে এই বইগুলি। ১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান তিনি। আর ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে একুশে পদক সম্মানে সম্মানিত করে। এরপর ২০১৯ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি।
আরও পড়ুন- ‘তৃণমূল বাবুলকে ঝুনঝুনি দেবে’, মেয়র প্রার্থী প্রসঙ্গে বললেন দিলীপ
তবে বাংলাদেশে পাকাপাকিভাবে বসবাস করলেও পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল খুবই ভালো। আর হবে নাই বা কেন তাঁর ছেলেবেলাই যে কেটেছে সেখানে। তাঁর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “আমার খুব প্রিয় মানুষ, প্রিয় লেখক উনি। আমার সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কও খুব ভালো ছিল। ওঁর রাজশাহীর বাড়িতে আমি অনেকবার গিয়েছি। তাঁর লেখা সত্যিই ব্যাতীক্রমী। একদম অন্য ধারার লেখা লিখতেন। তাঁর মৃত্যুতে শুধু বাংলাদেশের সাহিত্য নয়, আমাদের এপার বাংলার, গোটা বাংলা সাহিত্য জগতেরই ক্ষতি হল। তাঁর পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা রইল। আমি নিজেও শোকস্তব্ধ।”
আরও পড়ুন- চারিদিকে গোবর-বিচালি, মজিদ মাস্টারের শাসনের পার্টি অফিস এখন পশুখামার