সংক্ষিপ্ত
- খড়দহ বিধানসভা বরাবরই একটা গুরুত্ব পেয়েছে
- বাম আমলে খড়দহ বিধানসভার গুরুত্ব ছিল অপরিসীম
- এই বিধানসভা থেকেই অর্থমন্ত্রী হয়েছিলেন অসীম দাশগুপ্ত
- পরবর্তীতে অসীমকে হারা মানানো অমিত মিত্র অর্থমন্ত্রী হন
তাপস দাস- ১৯৬২ সাল থেকে খড়দহ বিধানসভা নিজেদের দখলে রেখেছিল সিপিএম। ২০০৬ সাল পর্যন্ত। মাঝে ১৯৭২ সালে এই কেন্দ্রে জিতেছিলেন তৎকালীন ইন্দিরা কংগ্রেস সহযোগী সিপিআই প্রার্থী। ১৯৮৭ সাল থেতে পরপর পাঁচ বার এই কেন্দ্র থেকে জিতেছিলেন বাম সরকারের অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত। ২০১১ সালে তাঁকে হারান তৃণমূল কংগ্রেসের অমিত মিত্র, যিনি মমতা সরকারের অর্থমন্ত্রী হবেন।
আরও পড়ুন- ভারতী ঘোষের রোডশোতে 'লুঙ্গি পড়া লোক'এর হামলা, পুলিশের সামনেই বেধড়ক মার বিজেপি কর্মীদের
১০৯ নং খড়দহ বিধানসভাটি দমদম লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্ভুক্ত। ২০১১ সালে এই কেন্দ্র থেকে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী অমিত মিত্র পেয়েছিলেন ৮৩ হাজার ৬০৮ ভোট। অসীম হারেন ২৬ হাজারেরও বেশি ভোটে। ৫৭ হাজার ৪৫৪ ভোট পেয়েছিলেন তিনি। ২০১৬ সালে ফের এই কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ওই দুই মহারথী। এবার অসীম হারেন ২১ হাজার ভোটে। অমিত মিত্র পান ৮৩ হাজার ৬৮০ ভোট। অসীম পান ৬২ হাজার ৪৮৮ ভোট। ভোট সংখ্যা বাড়লেও প্রাপ্ত ভোটের হার কিন্তু কমেছিল সিপিএমের। ২০১১ সালে মোট ভোটের ৩৮.৮২ শতাংশ পেয়েছিল সিপিএম, ২০১৬-র নির্বাচনে তা কমে দাঁড়ায় ৩৭.০৭ শতাংশে।
আরও পড়ুন- সভায় গিয়ে সোজা হোম আইসোলেশনে অধীর, তাঁকে ঘিরেও বাড়ছে করোনার ভ্রুকুটি
২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে খড়দহ কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী ৩৬৭৩ ভোট। ২০১৬ সালে বিজেপি প্রার্থী এই কেন্দ্র থেকে ১৬ হাজার ৩২১ ভোট পান। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে খড়দহ বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী সৌগত রায় খুব সামান্য ভোটে এগিয়েছিলেন। তিনি পেয়েছিলেন ৭৩ হাজার ৭৬৭ ভোট। বিজেপির শমীক ভট্টাচার্য পেয়েছিলেন ৭২ হাজার ৪৯৯ ভোট। সিপিএমের নেপালদেব ভট্টাচার্য কুড়ি হাজারের সামান্য বেশি ভোট পেয়েছিলেন এই কেন্দ্র থেকে। এবার এ কেন্দ্রে তিন দলের তিন প্রার্থীই এ কেন্দ্রে নতুন। সিপিএম দাঁড় করিয়েছে দেবজ্যোতি দাসকে। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী কাজল সিনহা। বিজেপির প্রার্থী শীলভদ্র দত্ত।
শীলভদ্র পুরনো তৃণমূল কংগ্রেস। ভোটের আগে তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তাঁর কেন্দ্র ছিল ব্যারাকপুর। দুবারের ব্যারাকপুরে বিধায়ক এবার সে কেন্দ্র ছেড়ে দিয়েছেন খুন হওয়া বিজেপি নেতা মণীশ শুক্লার বাবা চন্দ্রমণি শুক্লাকে। কাজল সিনহা মাসখানেক আগে পুলিশের মাথা ফাটানোর হুমকি দিয়ে সংবাদ শিরোনামে এসেছিলেন, বিপাকেও পড়েছিলেন। পরে তিনি অবশ্য ক্ষমা চেয়ে নেন। সিপিএমের হয়ে এই কেন্দ্রের যিনি প্রতিদ্বন্দ্বী, তিনি বামেদের তরুণ ব্রিগেডের অন্যতম। যে এক ঝাঁক উজ্জ্বল তরুণতরুণীকে এবারের ভোটে দাঁড় করিয়ে হৃত গৌরব পুনরুদ্ধার করতে চাইছে সিপিএম, দেবজ্যোতি দাস তাঁদেরই একজন। দেবজ্যোতি এসএফআইয়ের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক ও সুবক্তা। খড়দহ বিধানসভা কেন্দ্র উত্তর ২৪ পরগনা জেলার রাজনীতির অন্যতম নির্ধারক। এই কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ ষষ্ঠ দফায়, ২২ এপ্রিল।