সংক্ষিপ্ত
নিয়ম অনুযায়ী নভেল করোনাভাইরাসের (Novel Coronavirus)-এর নতুন রূপান্তরটির নাম হওয়া উচিত ছিল 'ন্যু' (Nu)। কিন্তু, চিনা (China) রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং-এর (XI Jinping) ভয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) নাম রাখল ওমিক্রন (Omicron)।
শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organisation) দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম সনাক্ত হওয়া কোভিডের নতুন রূপটির নামকরণ করেছে ওমিক্রন (Omicron)। সার্স-কোভ-২ (SARS-CoV-2) অর্থাৎ নভেল করোনাভাইরাসের (Novel Coronavirus) রূপান্তরগুলির নামকরণ করা হয় গ্রীক বর্ণমালার (Greek Alphabets) ক্রম অনুসারে। সেই নিয়ম অনুযায়ী নতুন রূপান্তরটির নাম হওয়া উচিত ছিল 'ন্যু' (Nu)। কিন্তু, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এই ক্ষেত্রে শুধু ন্যু নয়, পরের বর্ণ শাই (XI)-ও এড়িয়ে গেলেন। আর এর পিছনে চিনের (China) চাপ রয়েছে বলেই শোনা যাচ্ছে।
গত সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে আমেরিকায় (USA) হুহু করে ছড়াচ্ছিল করোনাভাইরাসের মিউ (Mu) ভেরিয়েন্ট। তাতে এমন কিছু মিউটেশন বা অভিযোজন ঘটেছিল, যাতে করোনাভাইরাস টিকা (Coronavirus Vaccine) ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু, ডেল্টা (Delta) ভেরিয়েন্টের অধিক সংক্রমণযোগ্যতার সামনে সে পরাস্ত হয় এবং ধীরে ধীরে প্রায় অবলুপ্ত হয়ে গিয়েছে এই ভেরিয়েন্টটি। তবে, তারমধ্যেই মাথাচাড়া দিয়েছে নতুন ভেরিয়েন্ট, বি.১.১.৫২৯ (B.1.1.529)। এতদিন পর্যন্ত যেভাবে এই ভেরিয়েন্টগুলির নামকরণ হয়েছে, তাতে এই নয়া ভেরিয়েন্টটির নাম হওয়া উচিত ছিল 'ন্যু'। বস্তুত, একটি নতুন কোভিড ভেরিয়েন্টের খবর আসার পর থেকে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিতে 'ন্যু' ট্রেন্ড করতেও শুরু করেছিল। কিন্তু, 'হু'-এর বিশেষজ্ঞরা সতর্কতার সঙ্গে ন্যু এবং শাই - গ্রিক বর্ণদুটি এড়িয়ে ওমিক্রন-কে বেছে নিয়েছেন।
আরও পড়ুন - Omicron Variant: টিকা কি কাজ করবে ওমিক্রনের বিরুদ্ধে, বড় বিবৃতি ফাইজার-বায়োএনটেকের
আরও পড়ুন - COVID-19 Vaccination: ১১৯ কোটির মাইলফলক পার করল ভারত, দৌড়ে তৃতীয় স্থানে বাংলা
আরও পড়ুন - Covid 19: করোনার নতুন রূপ ওমিক্রনের আতঙ্ক, পরিস্থিতি পর্যালোচনা প্রধানমন্ত্রী মোদীর
নামকরণে বাদ পড়ল ন্যু এবং শাই বর্ণদুটি
জানা গিয়েছে, গ্রিক অক্ষরের সঙ্গে ইংরেজি বর্ণমালার বিভ্রান্তি ঘটে, যাতে চিনের দিকে আঙুল না ওঠে, তার জন্যই এই দুটি গ্রিক বর্ণকে করোনার রূপভেদের নামকরণে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। নয়া ভেরিয়েন্টটির নাম ন্যু দিলে, পরেরটির নাম স্বাভাবিকবেই শাই দিতে হত। যার ইংরেজি বানান (Xi) আর চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর (XI Jinping) নামের বানান এক। কাজেই শাই ভেরিয়েন্টের বদলে সেটি শি ভেরিয়েন্ট বলে পরিচিত হওয়ার আশঙ্কা ছিল। এমনিতেই মহামারির প্রথম থেকে, তথ্য গোপন করার অভিযোগ উঠেছে চিনের বিরুদ্ধে। প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, করোনাভাইরাসকে চিনা ভাইরাস অবধি বলেছিলেন। নতুন করে করোনাভাইরাসের নাম যাতে 'শি ভাইরাস' না হয়, তার জন্যই এমনটা করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ডব্লুএইচওর (WHO)-র এক সূত্র সাফ জানিয়েছে, এই দুই গ্রিক বর্ণকে ইচ্ছাকৃতভাবেই বাদ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী করোনা ভেরিয়েন্ট নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করতেই এই ব্যবস্থা। এতে করে চিনের নাম কলঙ্কিত হতে পারত বলে মনে করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
তবে এই নিয়ে বিশ্বজুড়ে সমালোচার মুখে পড়েছে রাষ্ট্র সংঘের এই স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সংস্থাটি। মার্কিন সেনেটর টেড ক্রুজ (Senator Ted Cruz) টুইট করে বলেছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যদি চিনা কমিউনিস্ট পার্টিকে এতটাই ভয় পায়, তাহলে এরপর যখন বেজিং কোনও গোটা বিশ্বে বিপর্যয় সৃষ্টিকারী মহামারিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করবে, তখন তাদের কি আদৌ দোষারোপ করতে পারবে 'হু'? এই বিষয়ে বৈশ্বিক সংস্থাটির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।