সংক্ষিপ্ত
অবশেষে ক্রিকেটকে (Cricket) বিদায় জানালেন হরভজন সিং (Harbhajan Singh)। শুক্রবার অবসরের (Retirement) ঘোষণা করেন ভাজ্জি। সব ধরনের ক্রিকেট থেকে বিদায়ের কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) জানান ভারতীয় তারকা স্পিনার (Indian Star Spinner)। কেরিয়ারে বিতর্ক তার পিছু ছাড়েনি। জেনে নিন ভাজ্জির ক্রিকেট কেরিয়ারের বিতর্কিত অধ্যায় ( controversial chapter)।
দীর্ঘ সময় ধরে ভারতীয় দলের (Indian Team)বাইরে। আইপিএলেও (IPL) হয়ে পড়েছেন অনিয়মিত। দলে থাকলেও পারফরমেন্সের ধার আর আগের মত নেই। বয়সও ৪০ পেরিয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ক্রিকেটকে কবে বিদায় জানাবেন ভারতীয় তারকা স্পিনার হরভজন সিং (Harbhajan Singh) সেই অপেক্ষাই করছিল সকলে। সঠিক সময়ের অপেক্ষা করিছেলন খোদ ভাজ্জি। ২০১৬ সালে শেষবার ভারতীয় দলের জার্সি গায়ে তুলেছিলেন টার্বুনেটর। তারপর থেকে আর জাতীয় দলে ডাক আসেনি। শেষবারের মত জাতীয় দলে একটি ম্যাচ খেলার ইচ্ছে থাকলেও তা পূরণ হল না আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৭১১ উইকেটেপ মালিকের। শুক্রবার সোশ্যাল মিডিয়ায় পোষ্ট করে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসরের (Retirement) ঘোষণা করে দিলেন ভারতের হয়ে দুটি বিশ্বকাজ জয়ী দলের সদস্য। নিজের দীর্ঘ ক্রিকেট কেরিয়ারে যেমন সাফল্য এসেছে,তেমন বিতর্কও নিত্যদিন সঙ্গী ছিল ভাজ্জির। ক্রিকেট ইতিহাসের একাধিক বড় বড় বিতর্কে নাম জড়িয়েছে হরভজনের। ক্রিকেটর থেকে অবসর ঘোষণার দিনে আরও একবার ফিরে দেখা সই ভাজ্জির কেরিয়ারের সেই সকল বির্কিত অধ্যায়।
'মাঙ্কিগেট' বিতর্ক-
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ইতিহাসে যে সকল বিতর্কগুলি চিরকাল মানুষের স্মরণে থেকে যাবে তাদের মধ্যে অন্যতম হল মাঙ্কিগেট বিতর্ক। ২০০৭-০৮ সালে অনিল কুম্বলের নেতৃত্বে টেস্ট সিরিজ খেলতে অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিল ভারতীয় দল। সেই সিরিজে প্রথম থেকেই খারাপ আম্পায়ারিংয়ের শিকার হয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। বিশেষ করে অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসের একাধিক নিশ্চিৎ আউট নাকোট করে দিয়েছিলেন আম্পয়াররা। সেখান থেকেই দুই দলের মধ্য একটা বিরোধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সিডনি টেস্টে হরভজন সিংহের বিরুদ্ধে ‘মাঙ্কি’ বলার অভিযোগ করেন সাইমন্ডস। এর জেরে হরভজনকে তিন ম্যাচে নির্বাসিত করা হয়। ভারতীয় দল অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করে। হরভজনের উপর থেকে নির্বাসন তুলে না নিলে অস্ট্রেলিয়া সফর অসমাপ্ত রেখেই দেশে ফেরার হুঁশিয়ারি দেয় ভারতীয় দল। শেষপর্যন্ত হরভজনের নির্বাসন উঠে যায়। সাইমন্ডসের অবশ্য এখনও দাবি, হরভজন তাঁকে ‘মাঙ্কি’ বলেছিলেন। হরভজনও অনড় রয়েছে নিজের বক্তব্যে। এই বিতর্ক নিয়ে এখনও আলোচনা ওঠে ক্রিকেট আড্ডায়। কে আসল দোষী তা এখনো অজানা।
শ্রীসন্থকে চড় হরভজনের-
ভারতীয় দলের সতীর্থ হরভজন সিংয়ের শ্রীসন্তকে কুখ্যাত চড় মারার কান্ড কারুরই অজানা নয়। আইপিএলের প্রথম মরশুমেই মুম্বই ইন্ডিয়ান্স এবং কিংস ইলেভেন পঞ্জাব (বর্তমানে পঞ্জাব কিংস) ম্যাচের পর বিতর্কিত ঘটনাটি ঘটে। অভিযোগ, শ্রীসন্থ হরভজনের সামনে উল্লাস দেখাতে গেলে শ্রীসন্থকে সপাটে চড় মারেন ভাজ্জি। মাঠেই কাঁদতে দেখা যায় শ্রীসন্থকে। যা নিয়ে কম জল ঘোলা হয়নি।হরভজনকে ১১ ম্যাচের জন্য নির্বাসিতও করা হয়। তবে হরভজনের অবসরের দিনেই সেই শ্রীসন্থই ভাজ্জিকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন। ট্যুইটে লেখেন, ‘তুমি শুধু ভারত নয়, বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার। তোমাকে জানতে পারা এং তোমার সঙ্গে ক্রিকেট খেলা আমার কাছে খুবই সৌভাগ্যের বিষয়। তোমার সঙ্গে কোলাকুলিগুলো (আমার স্পেলগুলির আগে) আমার চিরজীবন মনে থাকবে। তোমার জন্য অনেক ভালবাসা এবং তোমার প্রতি অনেকটা সম্মান।’
আরও পড়ুনঃHarbhajan Singh Retirement: সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা হরভজন সিংয়ের
হরভজন ও মহম্মদ ইউসুফ সংঘর্ষ-
২০০৩ সাল দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বিশ্বকাপে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত ও পাকিস্তান। যেই ম্য়াচে ভারত জয় পেয়েছিল। ম্য়াচে হরভজন না খেললেও, ম্য়াচের আগে একটি ঘটনারকারণে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন ভাজ্জি। কারণ ম্যাচের আগে একসঙ্গে খেতে গিয়েছিলেন হরভজন,দ্রাবিড়, কুম্বলে, শ্রীনাথ। একই সময়ে তাদের পেছনের টেবিলে বসে খাচ্ছিলেন সঈদ আনোয়ার, ওয়াসিম আক্রম, শোয়েব আখতার ও মহম্মদ ইউসুফ। অভিযোগ,মহম্মদ ইউসুফ হরভজনকে লক্ষ্য কটুক্তি করে ও ধর্ম নিয়ে অপমানজনক কথা বলেন। তা সুনে রেগে গিয়ে ভাজ্জি মারতে যান বলে অভিযোগ। একে অপরের দিতে কাঁটা চামচ নিয়ে তেড়ে যান। সেই সময় দুই দলের অন্যান্য ক্রিকেটারদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে উত্তপ্ত বাক্য-বিনিময় চলে দীর্ঘক্ষণ।