সংক্ষিপ্ত
রড মার্শকে বিশ্ব ক্রিকেটপ্রেমিরা মনে রেখেছেন তাঁর অনবদ্য ক্রিকেটীয় লড়াই, এক ঐতিহাসিক জুটিতে করা রেকর্ড এবং অবশ্যই ক্রিকেট ময়দানের এক চোখ-ধাঁধানো ব্যক্তিত্বের জন্য। ক্রিকেটের এমনই এক বর্ণময় চরিত্রকে হারাল ক্রিকেট বিশ্ব।
প্রয়াত রড মার্শ। বিশ্ব ক্রিকেটের কংবদন্তি উইকেটকিপার-দের তালিকায় উপরের দিকে নাম রয়েছে তাঁরা। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। সপ্তাহখানেক আগে কুইন্সল্যান্ডে হৃদরোগে আক্রান্ত হন মার্শ। এরপর অ্যাডিলেডের একটি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছিল। কোমাতেও চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু, বৃহস্পতিবার চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন শারীরিক অবস্থায় উন্নতি হচ্ছে। কিন্তু শুক্রবার সকালেই হাসপাতাল থেকে জানানো হয় যে প্রয়াত হয়েছেন রড মার্শ। তাংর স্ত্রী এবং তিন সন্তান বর্তমান। এরা হলেন- স্ত্রী রস এবং তিন সন্তান- পল, ড্যান এবং জেমি।
১৯৪৭ সালের ৪ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেছিলেন রড মার্শ। আর যেদিন তিনি প্রয়াত হলেন সেই দিনটিও ৪ তারিখ মানে তাঁর জন্মদিন। বিশ্ব ক্রিকেট রড মার্শ-কে মনে রেখেছে তাঁর ২২ গজের বর্ণময় ক্রিকেট ব্যক্তিত্বের জন্য। বলতে গেলে তাঁর সময়ের বিশ্ব ক্রিকেটের অনবদ্য স্টাইলিশ বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান ছিলেন রড মার্শ। ১৯৭০ সাল থেকে ১৯৮৪ সালের মধ্যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কেরিয়ারে মোট ৯৬টি টেস্ট খেলেছিলেন রড। টেস্ট ক্রিকেটে তাঁর করা ৩৫৫ রানের ইনিংসটা আজও ক্রিকেটপ্রেমীদের মনের মণিকোঠায় স্থান করে রয়েছে। টেস্ট ক্রিকেটে ৩টি শতরানও রয়েছে মার্শের।
বিশ্ব ক্রিকেটে মার্শ আরও একটি কারণে বারংবার আলোচনায় ফিরে আসেন। আর সেটা হল ডেনিস লিলি-র সঙ্গে তাঁর জুগলবন্দি। বিশ্ব ক্রিকেটের সেই সময়ের ত্রাস ফাস্ট বোলার লিলি। আর তাঁর দুরন্ত গতির সেই বল উইকেটের পিছনে লোফার জন্য গ্লাভস হাতে দাঁড়াতেন মার্শ। লিলি-র কেরিয়ারের একটা তাৎপর্যপূর্ণ উইকেট এসেছে কট অ্যান্ড বোল্ড-এ। যার ফলে বিশ্ব ক্রিকেটে এমন প্রবচনও চালু হয়েছিল যে 'কট মার্শ, বোল্ড লিলি'। কারণ লিলি ও মার্শের এই জুগলবন্দি ৯৫ বার হয়েছিল। যা একটা রেকর্ড। লিলি এবং মার্শের বন্ধুত্ব এতটাই গাঢ় ছিল যে ১৯৮৪ সাল একই সঙ্গে দুজনে অবসর ঘোষণা করেছিলেন।
আশির দশকে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটে লিলি, জেফ থমসন, চ্যাপেল ভাইরা একটা অতি জনপ্রিয় নাম হয়ে উঠেছিলেন। আর এই দলের মধ্যেই কিন্তু মার্শও ছিলেন। তাঁর জনপ্রিয়তাও ছিল ঈর্ষা করার মতো। খেলা ছাড়ার পর নতুন প্রতিভাদের তুলে আনা এবং তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া নিয়ে কাজ করতে শুরু করেছিলেন রড মার্শ। আজ ক্রিকেট বিশ্বে রড মার্শের ক্রিকেট অ্যাকাডেমি সকল ক্রিকেটারের কাছে এক বরেণ্য স্থান। রড মার্শের এই প্রতিভা প্রভাবিত করেছিল অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট বোর্ডকেও। তাই অ্যাডিলেডে নবীন প্রতিভাদের আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে আসতে একটি অ্যাকেডেমি খোলে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। আর সেই ক্রিকেট অ্যাকেডিমির মাথা করা হয়েছিল রড মার্শকে। রিকি পন্টিং থেকে শুরু করে গিলক্রিস্ট, ডেভিড ওয়ার্নারা ক্রিকেটের দুরন্ত সব দক্ষতায় নিজেদের শিক্ষিত করতে পেরেছিলেন রড মার্শের সহযোগিতায়।
আরও পড়ুন| কোহলিকে শততম টেস্টের টুপি তুলে দিলেন রাহুল দ্রাবিড়, তারপর বিশেষ বার্তা দিলেন বিরাট
আরও পড়ুন| দলে তিন স্পিনার, বিরাট-রোহিতের মাইলস্টোন টেস্টে টস জিতে ব্য়াটিং করছে ভারত
আরও পড়ুন| Virat Kohli 100th Test: বিরাট কোহলির শততম টেস্ট, ঐতিহাসিক ম্য়াচের সব আপডেট এক ক্লিকে