সংক্ষিপ্ত
আইপিএল 2022: গুজরাট টাইটানস-এর বিরুদ্ধে অভিষেক ম্যাচেই, চাপের মুখে দুর্দান্ত ব্যাটিং করলেন আয়ুশ বাদোনি। কে তিনি?
মহম্মদ শামির বিস্ফোরক স্পেলে ৫ ওভারের মধ্যেই ২৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুকছিল লখনউ সুপার জায়ান্টস। কিন্তু, দীপক হুডার সঙ্গে জুটি বেঁধে আইপিএল-এর নয়া দলকে বিপদমুক্ত করলেন এক অখ্যাত ক্রিকেটার আয়ুশ বাদোনি। পঞ্চম ওভারে নামলেন, ব্যাট করলেন একেবারে শেষ ওভার পর্যন্ত। করলেন ৪১ বলে ৫৪। ইনিংসে রয়েছে ৪টি চার ও ৩টি ছয়। দেখে মনেই হয়নি, তিনি আইপিএল-এর প্রথম ম্যাত খেলছেন। এরপর, সকলেরই মনে একটাই প্রশ্ন, কে এই আয়ুশ বাদোনি, কোথা থেকে তাকে পেল লখনউ সুপার জায়ান্টস?
এদিন কিন্তু, ক্রিজে নেমে থিতু হতে কিছুটা সময় নেন বাদোনি। শুরুতে, ২২ বল খেলে মাত্র ১৩ রান করতে পেরেছিলেন। এরপর তিনি গিয়ার পরিবর্তন করেন। বিশেষ করে গুজরাট টাইটানস দলের অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়ার বিরুদ্ধে অত্যন্ত নির্মম ব্যাটিং করেন তিনি। পান্ডিয়ার শেষ ওভারে একটি ছক্কা এবং দুটি চার মেরে ১৫ রান তোলেন। এমনকী রেয়াত করেননি বিশ্বের এক নম্বর টি-টোয়েন্টি বোলার রশিদ খানকেও। গোটা পৃথিবী জুড়ে ব্যাটাররা যখন রিদের বল পড়তে হিমশিন খায়, সেখানে তার গুগলিকে আয়ুশ বেছে নিলেন ছয় মারার জন্য। অথচ, আইপিএল ২০২২ নিলামে, লখনউ সুপার জায়ান্টস তাঁকে সই করিয়েছে মাত্র ২০ লক্ষ টাকায়।
বাদোনি আদতে উত্তরাখণ্ডের হলেও, ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেন দিল্লির হয়ে। আসলে দেরাদুনে জন্ম হলেও, তাঁর বড় হওয়া দিল্লিতেই। ২০২১ সালেই দিল্লির হয়ে মুস্তাক আলি ট্রফিতে টি-২০ অভিষেক হয়েছিল তাঁর। বিজয় শঙ্কর, কেদার যাদব বা রবীন্দ্র জাদেজাদের মতো আয়ুশও একজন ইউটিলিটি প্লেয়ার। অর্থাৎ, ব্যাটিং-এর পাশাপাশি কয়েক ওভার বোলিং এবং ভাল অ্যাথলেটিক ফিল্ডার - দলে ত্রিমাত্রিক অবদান রাখতে পারেন। আক্রমনাত্মক ব্যাটিং এবং তাঁর অলরাউন্ড দক্ষতাই আয়ুশ বাদোনিকে লখনউ টিম ম্যানেজমেন্টের নজরে এনেছিল।
এর আগে ২০১৮ সালে তিনি সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছিলেন। ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে অভিষেক ম্যাচেই শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে অপরাজিত ১৮৭ রান করেছিলেন, সঙ্গে নেন ৬টি উইকেট। ওই বছর এশিয়া কাপের ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাত্র ২৮ বলে অপরাজিত ৫২ রান করেছিলেন। পরপর চার বলে চারটি ছক্কা মেরে সকলের নজর কেড়েছিলেন। আইপিএল খেলরা জন্য তিনি নিজের বোলিং তুনে ক্যারাম বলও যোগ করেছেন।
এদিনের ইনিংসের পর তিনি জানিয়েছেন, কেলার সময় অর্ধশতরানের কথা তিনি ভাবেননি। তিনি শুধু মন দিয়ে ব্যাটিং করছিলেন। শুরুতে একটু ঘাবড়ে ছিলেন। গতকাল রাতে চাপে ঘুমও হয়নি। কিন্তু, প্রথম চার পাওয়ার পর থেকেই তাঁর আত্মবিশ্বাস বাড়ে। শুরুতে বল কাটও করছিল, তবে ছয় ওভারের পরে পিচ ফ্ল্যাট হয়ে যায়। তারপর থেকে তিনি শুধু তাঁর স্বাভাবিক খেলা খেলে গিয়েছিলেন। পঞ্চাশ হওয়ার পরই তিনি প্রথম টের পান, অর্ধশতরান করেছেন।