সংক্ষিপ্ত
কেকের মৃত্যুর পর এস এসএসকেমের ময়না তদন্তে উঠে আসছে যে কোনো টিপিক্যাল হার্ট এটাকে মৃত্যু হয়নি তার, ৭০% ব্লকেজ ছিল তাঁর হৃৎপিণ্ডে।
জীবনের মঞ্চে গেয়ে গেলেন শেষ গান, গান দিয়ে শুরু গান দিয়েই শেষ হলো তাঁর জীবন। মঙ্গল বার কলকাতার নজরুল মঞ্চে জীবন এর শেষ দম অবধি গান গেয়ে ভক্ত দের বিনোদন দিয়ে গেলেন কেকে ওরফে কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ নিজের জীবন দিয়ে। এমনি তাঁর পেশাদারিত্ব। জানা যাচ্ছে কোনো টিপিক্যাল হার্ট এটাকে মৃত্যু হয়নি গায়কের, তাঁর হৃৎপিণ্ডে ব্লকেজ ছিল আগে থেকেই, এস এস কে এম এর ময়না তদন্ত রিপোর্টে বলা হয় , ছোট ছোট শিরা উপশিয়ায় ব্লকেজ ছিলই, এবং বাঁদিকের ধমনী তে ৭০ শতাংশ ব্লকেজ ছিলই যা পারফর্ম করার সময় উত্তেজনা বশত আরো বেড়ে গিয়ে তাঁর হৃৎপিণ্ডের বাঁদিকের শিরা উপশিরা গুলি তে হঠাৎ রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে হার্ট এটাক হয় গায়কের। সেই মুহূর্তে যদি তাঁকে সিপিয়ার দেয়া হত তাহলে অবশ্যই তাঁকে বাঁচানো যেত।
গান করতে করতেই অসুস্থ বোধ করছিলেন কেকে, বারবার ঘাম মুচ্ছিলেন ও জল খাচ্ছিলেন, উদ্যোক্তাদের বলছিলেন কয়েক টি স্পট লাইট নিভিয়ে দেয়ার জন্য, হাত দিয়ে দেখাচ্ছিলেন এসির হাওয়া গায়ে লাগছে না। কিন্তু তাতেও ভ্রূক্ষেপ ছিলেন না অনুষ্ঠান উদ্যোক্তা দের। ওই গরম ও অস্বস্তির মধ্যেও তিনি কিন্তু গান থামিয়ে দেননি, বরং দর্শক দের উৎসাহ দিয়েছেন, গানের সাথে তাল মিলিয়ে নাচ করেছেন, দর্শক দের কেও তাঁর সাথে গাইতে অনুরোধ করেছেন, হাসিয়েছেন, গোটা মঞ্চের এদিক থেকে ওদিক দাপিয়ে বেড়িয়েছেন, উচ্ছসিত দর্শক রাও তাঁদের প্রিয় গায়কের গানের সাথে তাল তাল মিলিয়ে কোমর দুলিয়েছেন, গলা মিলিয়েছেন গানে।
আরও পড়ুন- ফুল দিয়ে সুসজ্জিত অ্যাম্বুলেস, শেষযাত্রার প্রস্তুতি শুরু, চোখের জলে শেষবিদায় কেকে-কে
ঘামে ভিজে গেছে তাঁর জামা, মুখ থেকে দরদর করে গড়িয়ে পড়ছে ঘাম, অথচ গান করতে করতে একবারও তিনি দর্শকদের বুঝতে দেননি কত টা অস্বস্তি ও কষ্ট হচ্ছিল তাঁর সেই মুহূর্তে। এত তাই পেশাদারিত্ব তাঁর, এত তাই কমিটেড তিনি, যে নিজের কমিটমেন্ট পূরণে কোনো শারীরিক কষ্ট কেও গুরুত্ব দেননি।
তাঁর স্ত্রী জ্যোতি লক্ষী কৃষ্ণা জানান যে সোমবার ই তাঁর হাতে ও কাঁধে ব্যাথা হচ্ছিল বলে কে কে তাঁকে জানান। চিৎসক দের মতে এই হাতে ব্যাথায় হার্ট এটাকের উপসর্গ। কিন্তু তিনি যে অগ্রিম নিয়ে ফেলেছেন তাঁর অনুরাগী দের যে তিনি কথা দিয়েছেন গান শোনানোর তাই হাজার কষ্ট সত্ত্বেও তিনি গান থামেননি বা মঞ্চ ছেড়ে চলে যাননি। সেদিন সন্ধ্যার শেষ গান টি করে তবেই মঞ্চ ছেড়েছিলেন, কে জানতো সেটি ই তাঁর জীবনের শেষ মঞ্চ শেষ কনসার্ট, তার পরেই তিনি পাড়ি দেবেন না ফেরার দেশে, আর চাইলেও আমরা তাঁর গলায় গান শুনতে পাব না, আর ভক্ত দের সেলফির আবদার মেটাবেন না তিনি, আর তাদের আবদারে গাইবেন না ইয়ারও দোস্তি বাড়ি হি হাসিন হ্যা। গায়কের প্রয়াণের কারন উদ্যোক্তা দের ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি হোক কিংবা হার্ট ব্লকেজ, আমরা হারিয়ে ফেললাম এক মুলবান রত্ন কে, কে জানতো মঞ্চে তাঁর গাওয়া, হাম রাহে ইয়া না রাহে কাল ইয়াদ আয়েঙ্গে ইয়ে পল গান টি এভাবে বাস্তবের সাথেও মিলে যাবে এত তাড়াতাড়ি।