সংক্ষিপ্ত
হাসপাতালে ভর্তী হওয়ার আগে পর্যন্তও সব্যসাচীকে জরিয়েই ছিল অভিনেত্রীর জীবন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঠিক আগের দিন অর্থাৎ সব্যসাচীর জন্মদিনের দিনই সোশ্যাল মিডিয়ায় শেষ পোস্ট করেছিলেন তিনি।
সব্যসাচীর জন্মদিনের দিনই অন্ধকার নেমে এসেছিল ঐন্দ্রিলা সব্যসাচীর জীবনে। আলো ঝলমলে সেই বিকেলেও সব্যসাচী ভাবতে পারেননি চিরতরে হারিয়ে যাবে তাঁর জীবনের 'জীয়নকাঠি'। পাঁচ বছরের সম্পর্কে প্রত্যেক মুহূর্তে সব্যসাচীকে ঘিরে ছিল ঐন্দ্রিলার ভালোবাসা। হাসপাতালে ভর্তী হওয়ার আগে পর্যন্তও সব্যসাচীকে জরিয়েই ছিল অভিনেত্রীর জীবন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঠিক আগের দিন অর্থাৎ সব্যসাচীর জন্মদিনের দিনই সোশ্যাল মিডিয়ায় শেষ পোস্ট করেছিলেন তিনি। ম্যাচিং পোশাকে সব্যসাচীর সঙ্গে ছবি দিয়ে সেই পোস্টে ঐন্দ্রিলা লিখেছিলেন 'আমার বেঁচে থাকার কারণ...' এরপর আর কোনও পোস্ট করতে পারেননি অভিনেত্রী। তবে শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত ঐন্দ্রিলাকে আগলে রেখেছিলেন তাঁর 'জীয়নকাঠি' সব্যসাচী।
২০১৫ সালে প্রথম ক্যানসার ধরা পড়ে ঐন্দ্রিলার। তখন তিনি একাদশ শ্রেনীর ছাত্রী। মারণ রোগের সঙ্গে মুখে হাসি নিয়েই লড়েছিলেন অষ্টাদশী ঐন্দ্রিলা। লড়াইয়ে জিতেও ছিলেন তিনি। এরপর কেটে গিয়েছিল ছয় বছর। ঐন্দ্রিলার জীবনে আসেন সব্যসাচী। সম্পর্কের পাঁচ বছরের মাথায়ই ফের একবার আঘাত নেমে আসে সব্য-ঐন্দ্রিলার জীবনে। ২০২১ সালে ফের ক্যান্সার আক্রান্ত হন অভিনেত্রী। ফের লড়াই, ফের জয়। মারণ রোগকে ছাপিয়ে সব্যসাচীর হাত ধরেই জীবনের জয়গান গেয়েছিলেন অভিনেত্রী। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। সকলের অজান্তেই মারণ রোগ ফের বাসা বেঁধেছিল ঐন্দ্রিলার মাথায়। এবার আর ফিনিক্স হয়ে ফেরা হল না তাঁর। ক্যানসারের কাছে হার মানল অভিনেত্রীর জীবনীশক্তি। ২০ নভেম্বর সকলকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে ঐন্দ্রিলা।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, স্নায়ু চিকিৎসক থেকে রেডিয়েশন অঙ্কোলজিস্ট-সহ চিকিৎসকদের একটি গোটা দল মিলে প্রচেষ্টা চালায় ঐন্দ্রিলাকে সুস্থ করার। তবে এত চেষ্টা সত্ত্বেও শেষ রক্ষা হয়নি। অস্ত্রপচারের পর আবারও মস্তিষ্কের বাঁ দিকে স্ট্রোক হয় অভিনেত্রীর। পরে মাথার ডান দিকেও স্ট্রোক হয় তাঁর। অবস্থার ক্রমাগত অবনতি হতে থাকে। কমে আসে চেতনাও। বারবার হৃদরোগে আক্রান্ত হতে থাকেন তিনি। অবশেষে রবিবার দুপুরে ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ হয় তাঁর। আর যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারেননি তিনি। ১২টা ৫৯-এ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তৃতীবার আর ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করতে পারেননি ঐন্দ্রিলা। ডাক্তারদের বক্তব্য এই ধরণের ক্যানসার একবার ফিরে এলে তা নিরামূল করা খুবই কঠিন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নিরাময়ের পাঁচ বছরের মাথায় এই ক্যানসারের ফিরে আসার সম্ভাবনা থাকে।
আরও পড়ুন -
দুইবার মৃত্যুকে হারিয়ে ফিরেছিলেন ঐন্দ্রিলা,স্ট্রোক ছন্দপতন ঘটাল- জানুন অভিনেত্রীর কঠিন লড়াইয়ের কথা
স্কুলে গার্জেন কলের ভয় টতস্থ থাকতেন ঐন্দ্রিলার মা-বাবা, জেনে নিন প্রয়াত অভিনেত্রীর ছোটবেলা কেমন ছিল
মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়েছিল ক্যানসার, তৃতীয়বারের যুদ্ধে মারণ রোগের কাছে হার মানলেন ঐন্দ্রিলা