সংক্ষিপ্ত
'হাম রাহে ইয়া না রাহে কাল, কাল ইয়াদ আয়েঙ্গে ইয়ে পল' কেকের এই গান যেন তাঁর জীবনেরই বাস্তব রূপ। মঞ্চে উঠে গান গেয়ে শ্রোতার মন ভোলানো মানুষটা গান গাইতে গাইতেই অসুস্থ হয়ে চিরবিদায় নিলেন। কেকের অকাল এই প্রয়াণে ভক্তদের মনে শুধুই শোকের ছায়া। তবে সত্যিই কি স্বাভাবিকভাবে মৃত্যু হয়েছে কেকের? না কি ভক্তকূলের এই অতিরিক্ত ভালোবাসাই হল কাল?
কলকাতায় পরপর ২ দিনের শো- এ গান গাইতে নজরুল মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন কেকে ওরফে কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ। প্রথমদিন অর্থাৎ সোমবার ঠাকুরপুকুর বিবেকানন্দ কলেজের কনসার্ট চলাকালীনই না কি খানিক অসুস্থ বোধ করেছিলেন কেকে। এমনই দাবি নজরুল মঞ্চের নিরাপত্তারক্ষীর। এরপর মঙ্গলবার গুরুদাস মহাবিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানেও খুব ভিড় হয়েছিল, প্রায় ৬-৭ হাজার দর্শকের সমাগম হয়েছিল নজরুল মঞ্চে। এমন কি পাঁচিল টপকে অনেকে ভিতরে ঢুকে পড়েছিল বলেও জানা গেছে। এদিন অতিরিক্ত ভিড়ের কারণেই কি নিজের শারীরিক অবস্থার যে অবনতি ঘটেছে তা সঠিকভাবে অনুভব করতে পারেন নি কেকে? উঠছে এহেন নানান প্রশ্ন।
শিল্পীর মৃত্যুর পর এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন তাঁর ম্যানেজার রীতেশ ভাট। তিনি জানান 'মঙ্গলবার অনুষ্ঠান চলাকালীন বারবার শরীর নিয়ে অভিযোগ করছিলেন কেকে, সমানে ঘামছিলেন, বলছিলেন ঠান্ডা লাগছে। সূত্রের খবর, অনুষ্ঠানের সময় স্পট লাইট অফ করতে বলেছিলেন গায়ক। মাঝে ১০ মিনিটের বিশ্রাম নেন এবং তারপর নিজেই ফের ফিরে এসেছিলেন স্টেজে, কিন্তু শেষ গানটা শেষ হওয়ার আগেই স্টেজের ধারে চলে এসেছিলেন কেকে। অবশেষে গতিবিধি ঠিক নেই বুঝে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ওনাকে নিয়ে হোটেলে রওনা দিই, উনি নিজেও হোটেলে যেতে চাইছিলেন, গাড়িতে উঠে ঘামলেও বলছিলেন ঠাণ্ডা লাগছে, তাই এসি বন্ধ করে দেওয়া হয়। হাতে-পায়ে ক্র্যাম্প ধরতে শুরু করে। হোটেলে ফিরে অনুরাগীদের ডাকে সাড়া দিয়ে ছবিও তোলেন কে কে।
আরও পড়ুন- 'এমনভাবে চলে যাওয়াটা মেনে নেওয়া যায় না', কেকেআর আকস্মিক প্রয়াণে শোকস্ত সঙ্গীত জগৎ
তিনি আরও বলেন যে 'হোটেলে ফিরে বমি করেছিলেন কেকে। এরপর হোটেলের ঘরে সোফায় বসতে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে যান তিনি, সঙ্গে সঙ্গে হোটেল কর্মীদের ফোন করা হয়, ওনারা হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন, হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা কেকে- কে মৃত বলে ঘোষণা করেন।' দেহের কপাল ও ঠোঁটে আঘাতের চিহ্ন ও ছিল কেকে- র, মঙ্গলবার রাতেই নিউ মার্কেট থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে। শারীরিক অসুস্থতা নাকি অন্য কোনও কারণে সঙ্গীতশিল্পীর মৃত্যু তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর। হিন্দি, বাংলা, তামিল, কন্নড়, মারাঠি, মালয়ালাম ও অসমীয়া ভাষায় একাধিক গান গেয়েছেন কেকে। শুধু হিন্দিতেই ২০০টিরও বেশি গান গেয়েছেন তিনি। কেকের মৃত্যুতে শোকের ছায়া বিনোদন জগতে। আরমান মালিক টুইটে লিখেছেন, '২০২২ সালটিই সংগীত জগতের জন্যি একটি কালো বছর। প্রথমে লতা জি, তারপর বাপ্পি দা, কিছুদিন আগেই সিধু পাজি, এরপর এখন কেকে স্যার, এই ক্ষতিগুলো পূরণ করা সম্ভব নয়।'