সংক্ষিপ্ত
গবেষণাটি ইতিমধ্যেই 'পিএলওএস মেডিসিন' জার্নালে প্রকাশিতও হয়েছে। কেমব্রিজ এবং পিটারবোরো এনএইচএস ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের প্রায় ৩০ হাজার রোগীর স্বাস্থ্যের উপর দীর্ঘ পর্যবেক্ষণের মধ্য দিয়ে গোটা গবেষণা প্রক্রিয়াটির পরিচালনা করা হয়েছে।
বয়সকালে স্মৃতিভ্রম আজকালকার সমাজে একটা বড় অসুখ। এমনকী গোটা পৃথিবীতেই এই রোগের কারণে একটা বড় অংশের মানুষ মৃত্যুর কোলে ডোলে পড়ে। কিন্তু এই রোগের হাত থেকে মুক্তি পেতেই এবার নতুন রাস্তার সন্ধান দিলেন গবেষকেরা। এই বিষয়ে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বে একটি নতুন গবেষণা সামনে এসেছে। যাতে দাবি করা হয়েছে লিথিয়ামের কারণে কমতে পারে স্মৃতিভ্রম বা ডিমেনশিয়ার(Dementia) ঝুঁকি। এদিকে লিথিয়াম(Lithium) যৌগ, লিথিয়াম সল্ট নামেও পরিচিত। প্রাথমিকভাবে এটি মানসিক ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এগুলি বাইপোলার ডিসঅর্ডার এবং প্রধান বিষণ্নতাজনিত ব্যাধিগুলির চিকিত্সার জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এর কারণে আত্মহত্যার প্রবণতাও অনেকটাই কমানো যায় বলে দাবি গবেষকদের। এই লিথিয়ামই স্মৃতিভ্রম ঠেকাতে অন্যতম প্রধান মারণাস্ত্র হিসাবে কাজ করতে পারে বলে গবেষকদের দাবি।
এই গবেষণাটি ইতিমধ্যেই 'পিএলওএস মেডিসিন' জার্নালে প্রকাশিতও হয়েছে। কেমব্রিজ এবং পিটারবোরো এনএইচএস ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের প্রায় ৩০ হাজার রোগীর স্বাস্থ্যের উপর দীর্ঘ পর্যবেক্ষণের মধ্য দিয়ে পরিচালনা করা হয়েছে। মূলত যাদের বয়স পঞ্চাশের বেশি তাদের উপরেই চালানো হয় পরীক্ষামূলক ট্রায়াল। তাতেই দেখা যাচ্ছে যাদের উপর লিথিয়ামের প্রয়োগ করা হয়েছে তাদের স্মৃতিভ্রমের প্রবণতা অনেকটাই কমে গিয়েছে। সহজ কথায় ওই গবেষণায় দেখা গিয়েছে লিথিয়াম গ্রহণকারী রোগীদের ডিমেনশিয়া হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কম ছিল যারা গ্রহণ করেননি তাদের তুলনায়। যদিও লিথিয়াম গ্রহণকারী রোগীদের সামগ্রিক সংখ্যা কম ছিল বলেও গবেষণাপত্রেই উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে পশ্চিমের দেশগুলিতে জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ডিমেনশিয়া অন্যতম প্রধান একটি চিন্তার কারণ। কারণ ইউরোপের বার্ধক্যজনিত রোগে মৃত্যুর একটা বড় কারণ হিসাবে বরাবরই উঠে এসেছে দ্রুত স্মৃতি লোপ পাওয়ার মতো সমস্যা। পরিসংখ্যান বলছে বিশ্বব্যাপী ৫৫ মিলিয়নেরও বেশি মানুষের ডিমেনশিয়া রয়েছে। যার মধ্যে আলঝেইমার সবথেকে বেশি দেখতে পাওয়া যায় আম-আদমির মধ্যে।
আরও পড়ুন- ৪ রাজ্যে বড় জয়ের পর রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বেকায়দায় পড়তে পারে বিজেপি, কেন এমন বললেন মমতা
এদিকে সদ্য প্রকাশিত রিসার্চ নিয়ে গবেষণাপত্রের প্রধান লেখক কেমব্রিজের সাইকিয়াট্রি বিভাগের ডাঃ শানকুয়ান চেন বলেন, "ডিমেনশিয়া আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার কাঠামোর উপর সরাসরি চাপ তৈরি করছে। জনস্বাস্থ্য নিয়ে বাড়ছে চিন্তা।" তবে ধূমপান, অন্যান্য ওষুধের প্রতিক্রিয়ার পাশাপাশি অন্যান্য শারীরিক ও মানসিক রোগের কারণেই ডিমেনশিয়ার সমস্যা অনেকটাই বাড়ে। সেকথা নতুন করে মনে করানো হয়েছে এই গবেষণাপত্রে।
আরও পড়ুন- বিধানসভায় অশান্তি পাকাতে মমমতাই উষ্কানি দিচ্ছেন, ফের চাঁচাছোল আক্রমণে শুভেন্দু