সংক্ষিপ্ত
লিভার সিরোসিস মানুষের যকৃতের দীর্ঘস্থায়ী রোগের ফল যা দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত থেকে সৃষ্টি হতে পারে এবং মারাত্মক পর্যায়ের সিরোসিসে যকৃৎ এর কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে মানুষের মৃত্যু ডেকে আনতে পারে।
কোনও মানুষের লিভারের সমস্যা (Liver Problem) হলেই, তার মদ্যপানের (Drinking Habits) অভ্যাসের দিকে আঙুল ওঠে। সেটাই স্বাভাবিক। লিভার (Liver) আমাদের শরীরের আমার একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যে অঙ্গ যাবতীয় দূষিত পদার্থ পরিশোধন করে আমাদের শরীরকে সুস্থ (Healthy) রাখতে সাহায্য করে। যে অঙ্গ একবার খারাপ হয়ে গেলে বেঁচে থাকা দুর্বিষহ হয়ে যায়। কিন্তু জানেন কি, মদ নয়, আরও কিছু পানীয় রয়েছে, যা লিভারের মারণ ক্ষতি করতে পারে। শুনলে হয়ত অবাক হয়ে যাবেন।
তবে একথা ঠিক যে অত্যাধিক পরিমাণে মদ্যপান করলে লিভার স্বাভাবিক ভাবে কাজ করে না। লিভারের মারাত্মক অসুখটির নাম হল লিভার সিরোসিস। লিভার সিরোসিস মানুষের যকৃতের দীর্ঘস্থায়ী রোগের ফল যা দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত থেকে সৃষ্টি হতে পারে এবং মারাত্মক পর্যায়ের সিরোসিসে যকৃৎ এর কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে মানুষের মৃত্যু ডেকে আনতে পারে। সিরোসিসের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এতে যকৃতের সুস্থ-সবল কলা ক্ষয়যুক্ত কলা বা নডিউল দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়ে যায় ফলে যকৃত আর কাজ করতে পারে না।
এই মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হয়ে সারা বছর প্রায় প্রাণ হারান কয়েক হাজার মানুষ। তবে একটু সচেতন থাকলেই এই মারাত্মক রোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। সামান্য সতর্কতাতেই লিভার সিরোসিসের মত মারাত্মক রোগের ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব।
১৯৪৮ সালে, বস্টনে ফ্রেমিংহাম হার্ট স্টাডি নামক একটি গবেষণা বলছে যে শুধু অ্যালকোহল নয় বাড়তি চিনি দেওয়া পানীয় বা অ্যালকোহলহীন সোডাও লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমার আশঙ্কা তৈরি করে। সপ্তাহে একদিন হলেও এই পানীয় খাওয়া যথেষ্ট ক্ষতিকারক শরীরের পক্ষে। যারা অ্যালকোহল পান করেন, তাদের তুলনায় যারা নিয়মিত ঠান্ডা পানীয় পান করেন, তাদের ফ্যাটি লিভারের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি বেড়ে যায়।
এর প্রতিকারে অর্গানিক শাক-সবজি ও ফল-মূল রাখতে হবে খাদ্যতালিকায়। যার ফলে আপনার লিভার সুস্থ থাকবে। একই সঙ্গে খাদ্যতালিকায় রাখুন রসুন,সাইট্রাস ফল, হলুদ,আখরোট, বিট,গাজর, গ্রিন টি, আপেল ও অ্যাভোকাডো। নিয়মিত সঠিক পরিমানে জল পান করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রতিদিন নিয়ম করে সঠিক পরিমানে জল পান করা উচিৎ। প্রতিদিন নিয়ম করে যোগাসন বা ব্যায়াম করুন। নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে লিভারকে সুস্থ রাখুন। প্রতিদিন অন্তত ২০ মিনিট ধরে শরীরচর্চা করুন। এতে শরীরের ইমিউনিটি বৃদ্ধি পায়।
একই সঙ্গে লিভারের কার্যক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। প্রসেসড ফুড একেবারেই খাওয়া উচিৎ নয়। সেই সঙ্গে প্রিজারভেটিভ যুক্ত এবং কৃত্রিম স্বাদ ও গন্ধযুক্ত টিনজাত বা বোতলজাত খাবারকে সরাসরি না বলতে হবে। কার এই ধরনের খাবার লিভারের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।