সংক্ষিপ্ত
যক্ষা একটি ব্যাক্টেরিয়া বাহিত রোগ। মাইক্রোব্যাক্টেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস নামক ব্যাক্টেরিয়া শ্বাসযন্ত্রকে সংক্রমিত করে ফলে যক্ষা রোগ হয়। এই ব্যাক্টেরিয়াও বাতাসে ভেসে বেড়ানো ড্রপলেটের মধ্যে দিয়ে শরীরে সংক্রমিত হয়ে থাকে। একজনের হাঁচি-কাশি থেকে দ্রুত এটি অন্যের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
কয়েক বছর আগেও যক্ষা রোগ (Tuberculosis) মানেই আঁতকে ওঠার মতো অবস্থা হত। যেন বিশাল বড় কিছু হয়ে গিয়েছে। যক্ষা রোগীর (Tuberculosis Patient) ধারে কাছে ঘেঁষতেও ভয় পেতেন অনেকেই। সম্পূর্ণ ভাবে একঘরে করে দেওয়া হত। পরিস্থিতি খুবই খারাপ হয়ে যেত। আর চিকিৎসার (Treatment) অভাবে অনেকের মৃত্যুও (Death) হত। কিন্তু, ধীরে ধীরে পরিস্থিতি এখন অনেকটাই বদলে গিয়েছে। এই রোগের সঙ্গে লড়তে শিখেছে মানুষ। বর্তমানে চিকিৎসার মাধ্যমে খুব সহজেই সারিয়েও ফেলা যায় এই রোগ। একটু সময় লাগে, তবে রোগ পুরোপুরি নিরাময় হয়ে যায়। মানুষের মধ্যে যক্ষা নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচার বাড়াতে প্রত্যেক বছর ২৪ মার্চ বিশ্ব যক্ষা দিবস (World TB Day 2022) পালিত হয়।
যক্ষা একটি ব্যাক্টেরিয়া (TB Bacteria) বাহিত রোগ। মাইক্রোব্যাক্টেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস (Common Infectious Diseases) নামক ব্যাক্টেরিয়া শ্বাসযন্ত্রকে সংক্রমিত করে ফলে যক্ষা রোগ হয়। এই ব্যাক্টেরিয়াও বাতাসে ভেসে বেড়ানো ড্রপলেটের মধ্যে দিয়ে শরীরে সংক্রমিত হয়ে থাকে। একজনের হাঁচি-কাশি থেকে দ্রুত এটি অন্যের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। যক্ষা রোগ নিয়ে মানুষের মধ্যে কিছু ভ্রান্ত ধারণাও রয়েছে, যা অবিলম্বে দূর করা ভীষণ জরুরি।
যক্ষা শুধুই ফুসফুস সংক্রমিত করে
যক্ষা শুধুমাত্র যে ফুসফুসে হয় তা একেবারেই নয়। আগে মানুষের ধারণা ছিল যে যক্ষা শুধুমাত্রই ফুসফুসে হত। কিন্তু, এখন সেই ধারণা একেবারেই বদলে গিয়েছে। যক্ষা শরীরের যে কোনও প্রান্তেই হতে পারে। আপনার একটা আঙুলেও হতে পারে। এছাড়া কিডনি, মস্তিষ্ক, হাড় এবং মেরুদণ্ডেও এই ব্যাক্টেরিয়া প্রভাব ফেলতে পারে। শুধুমাত্র লক্ষণগুলি একেবারে অন্যরকম হয়ে থাকে। ফুসফুসের বাইরে যে যক্ষা হয় তাকে এক্সট্রাপালমোনারি টিউবারকুলোসিস বলে। ফুসফুস কিংবা শ্বসনালীতে সংক্রমিত হলেই রোগীর শরীর থেকে তা অন্যের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। আর শরীরের যদি অন্য কোনও অংশে হয় তাহলে সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়ার কোনও সম্ভাবনা নেই।
আরও পড়ুন- রোগ প্রতিরোধের সচেতনতা বৃদ্ধিতে পালিত হচ্ছে বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস, রইল দিনটির তাৎপর্য
যক্ষা জিনবাহিত রোগ
এই ভ্রান্ত ধারণা এখনও পর্যন্ত বহু মানুষের মধ্যে রয়েছে। কিন্তু, এটি একেবারেই ঠিক নয়। সম্পূর্ণ ভুল। আপনার পরিবারে কারও যদি নাও হয়ে থাকে তাহলেও আপনার এই রোগ হতেই পারে। এই রোগ জিনবাহিত নয়। এই রোগের বিস্তারের ক্ষেত্রেও জিনের কোনও ভূমিকা নেই। এই ব্যাক্টেরিয়া যে কোনও সময় যে কাউকে সংক্রমিত করতে পারে। আসলে কোনওভাবে এই রোগের জীবাণু শরীরে প্রবেশ করলে তার থেকেই এটি হয়। তবে এই রোগ হলে চিন্তার কোনও কারণ নেই।
আরও পড়ুন- ঋতুস্রাবের দিনগুলিতে খুব কষ্ট পান, তাহলে অবশ্যই দেখে নিন আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞের ভিডিওটি
যক্ষার কোনও চিকিৎসা নেই
যক্ষা হলে এখনও অনেকের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। কিন্তু, এই ধারণা একেবারেই ঠিক নয়। এই রোগ হলে তেমন কিছুই হয় না। খুব সহজেই এই রোগ নিরাময়ে হয়ে যায়। প্রাথমিক পর্যায় এই রোগ ধরা পরলে ওষুধের মাধ্যমেই এই রোগের বিরুদ্ধে জয়লাভ করা সম্ভব। শুধুমাত্র খুব বেশি খালি পেটে থাকবেন না। তবে শরীরে কোনও সমস্যা হলেই অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
বিসিজি-এর টিকা নিলে যক্ষা হবে না
শিশুর জন্মের পরই বিসিজি-এর টিকা দেওয়া হয়। বিসিজি-এর টিকা শিশুদের মধ্যে যক্ষা সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়। যদিও, এই টিকা থেকে প্রাপ্তবয়স্করা কতটা সুরক্ষিত তা জানা যায়নি। যে শিশু টিকা নিয়েছে তার বড় বয়সে টিবি হবে না এমন কোনও মানে নেই। টিবি যখন খুশি হতে পারে। শুধুমাত্র খাওয়া দাওয়া ভালো করে করলেই এই রোগের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন- চার কলমেই কেল্লাফতে, শোয়ার ঘরে রাখলে ঘুরিয়ে দিতে পারে আপনার জীবনে উন্নতির গতিপথ
ধূমপান যক্ষারোগের কারণ
অনেকেই মনে করেন ধূমপান না করলে টিবির ঝুঁকি কম। এটা কিন্তু ঠিক নয়। ধূমপানই যক্ষা হওয়ার একমাত্র কারণ নয়। এইচআইভি, ডায়াবিটিস এবং কিডনি রোগ থাকলেও যক্ষা রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এমনকী, এগুলি না হলেও আপনার যক্ষা রোগ হতেই পারে। আসলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলেই এই রোগ বাসা বাঁধতে পারে শরীরে।