প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধনী ব্যক্তিদের সম্পদ দ্রুত বাড়ছে, কিন্তু নতুন ধনী ব্যক্তির সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ছে না। কোভিড-১৯ মহামারীর পরে ভারতের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার "কে" আকৃতির হয়েছে, যেখানে ধনীরা আরও ধনী হয়েছে এবং দরিদ্ররা হচ্ছে আরও অভাবী ।

ভারত বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির মধ্যে অন্যতম হলেও, ব্লুম ভেঞ্চার্সের একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুসারে, দেশের ১৪০ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি মানুষের প্রয়োজনীয় খরচ মেটানোর মতো পর্যাপ্ত অর্থ নেই। এই প্রতিবেদনে ভারতের অর্থনৈতিক অবস্থার একটি উদ্বেগজনক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে ব্যবধান ক্রমাগত বাড়ছে। সেইসঙ্গে সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে মধ্যবিত্ত শ্রেণী ।

প্রতিবেদনের মূল বিষয় হল,ভারতে ১৪০ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে মাত্র ১৩-১৪ কোটি মানুষের অতিরিক্ত খরচ করার ক্ষমতা রয়েছে। প্রায় ১০০ কোটি মানুষের কাছে তার প্রয়োজনীয় খরচ মেটানোর মতো পর্যাপ্ত অর্থ নেই। আরও ৩০ কোটি মানুষ ধীরে ধীরে খরচ করতে শিখছেন, কিন্তু তাদের আর্থিক সংস্থান প্রয়োজনের তুলনায় সীমিত।

ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে বৈষম্য বাড়ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধনী ব্যক্তিদের সম্পদ দ্রুত বাড়ছে, কিন্তু নতুন ধনী ব্যক্তির সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ছে না। কোভিড-১৯ মহামারীর পরে ভারতের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার "কে" আকৃতির হয়েছে, যেখানে ধনীরা আরও ধনী হয়েছে এবং দরিদ্ররা হচ্ছে আরও অভাবী । গবেষণায় জানা যায়, ১৯৯০ সালে, শীর্ষ ১০ শতাংশ ভারতীয় দেশের মোট আয়ের ৩৪ শতাংশের মালিক ছিলেন, যা বর্তমানে ৫৭.৭ শতাংশে পৌঁছেছে। সবচেয়ে দরিদ্র ৫০ শতাংশ ভারতীয়ের আয় ২২.২ শতাংশ থেকে কমে ১৫ শতাংশে নেমে এসেছে। মধ্যবিত্তের সংকট বেড়েছে। মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মধ্যবিত্তের বেতন বাড়েনি। অথচ গত ১০ বছরে কর প্রদানকারী মধ্যবিত্তের আয় স্থির রয়েছে, সেইসঙ্গে মুদ্রাস্ফীতির কারণে অর্ধেকে নেমে এসেছে অনেকের আয় । মনে করা হচ্ছে, মধ্যবিত্তের সঞ্চয় গত ৫০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছেছে।

বাজারের পরিবর্তন কীভাবে হয়েছে?

কম দামের পণ্যের পরিবর্তে বিলাসবহুল পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। সাশ্রয়ী মূল্যের বাড়ির চাহিদা কমেছে, এবং বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টের চাহিদা বেড়েছে। দামি স্মার্টফোনের বিক্রি বাড়ছে, কিন্তু সস্তা মডেলের ক্রেতা কমছে। দামি বিনোদনমূলক অভিজ্ঞতার চাহিদা বাড়ছে।

ব্লুম ভেঞ্চার্সের প্রতিবেদনটি ভারতের অর্থনৈতিক অবস্থার একটি স্পষ্ট চিত্র তুলে ধরেছে। এটি অর্থনৈতিক বৈষম্য কমাতে এবং মধ্যবিত্তের সংকট নিরসনে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।