সংক্ষিপ্ত
- সংসদের উভয় কক্ষেই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, ২০১৯ পাস হয়েছে
- এই বিল নিয়ে সারা দেশে বিতর্ক চলছে
- উত্তর-পূর্বে বিশেষ করে অসমে তো অগ্নিগর্ভ অবস্থা
- একনজরে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক
সংসদের উভয় কক্ষেই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, ২০১৯ পাস হয়েছে। রাষ্ট্রপতি সম্মতি দিলেই এই বিলের প্রস্তাবিত সংশোধনী নাগরিকত্ব আইনে কার্যকর করা হবে। এই সংশোধনীর ফলে কারা নাগরিকত্ব পাবেন? কী বা সেই নাগরিকত্ব পাওয়ার শর্ত? নাগরিকত্ব পাওয়ার অর্থই বা কী? নাগরিকত্বব সংশোধনী বিলটি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক, একনজরে -
আরও পড়ুন - '৪৭-এর পর আরও এক স্বাধীনতার রাত, সদ্যজাত পাক হিন্দুর নাম হল 'নাগরিকতা'
নাগরিকত্ব বিলের ইতিহাস
২০১৬ সালে প্রথম নরেন্দ্র মোদী সরকারে সময়ই এই বিল লোকসভায় পাস হয়েছিল। রাজ্যসভায় গেলে অবশ্য বিলটি আটকে যায়। রাজ্যসভা বিলটিকে সিলেক্ট কমিটির কাছে পর্যালোচনার জন্য পাঠিয়ে ছিল। তারপর তিন বছর কেটে যাওয়ায় বিলটি বাতিল হয়ে যায়। শীতকালীন অধিবেশনেই ফের নতুন করে পেশ করা হয়েছিল নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল।
কীভাবে পার হল সংসদের গণ্ডি?
সোমবার লোকসভায় ১২ ঘন্টা ঘরে এই বিল নিয়ে আলোচনা চলে। তারপর ভোটাভুটিতে ৩১১-৮০ ভোটে বিলটি পাস হয়। তারপর বুধবার রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব বিল নিয়ে আলোচনা চলে ৮ ঘন্টা। তারপর পক্ষে ভোট পরে ১২৫টি, বিপক্ষে ১০৫।
আরও পড়ুন - বিল পাসের আগেই নাগরিকত্ব, জানেন ৩ বছরে কতজন আফগান ও পাকিস্তানি 'ভারতীয়' হয়েছেন
কারা বিলের পক্ষে ভোট দিলেন?
বুধবার, রাজ্যসভায় বিজেপি এবং জনতা দল (ইউনাইটেড), শিরোমণি অকালি দলের মতো এনডিএ সঙ্গীরা ছাড়াও এই বিলের পক্ষে ভোট দেয় এআইএডিএমকে, বিজেডি, টিডিপি এবং ওয়াইএসআর কংগ্রেস।
আরও পড়ুন - 'অমুসলিম শরণার্থী'র সংখ্যাটা ঠিক কত, রাজ্যসভায় কী হিসেব দিলেন অমিত শাহ
কারা পাবেন নাগরিকত্ব?
বিলে বলা হয়েছে ভারতের তিন প্রতিবেশী দেশ, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আগত অমুসলিম অর্থাৎ, হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ, পার্সি, ও খ্রীস্টানদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
==
বিলটি কি মুসলিম বিরোধী?
লোকসবার পর রাজ্যসভাতেও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করেছেন এই বিল একেবারেই মুসলিম বা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরোধী নয়। তাঁর দাবি ভারতের মুসলমানদের উপর এই বিলের কোনও প্রভাবই পড়বে না। তাঁরা যেমন ভারতের নাগরিক আছেন, তেমনই থাকবেন। তবে বহিরাগত মুসলিমদের জন্য ভারতের দরজা খোলা হবে না। বুধবার রাজ্যসভায় তিনি বলেন, 'সারা বিশ্বের মুসলিমদের তো আর ভারতে স্থান দেওয়া যাবে না। এভাবে দেশ চালানো যায় না।'
আরও দেখুন - দিনভর সংঘর্ষ, হামলা রেলস্টেশন থেকে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে, অগ্নিগর্ভ অসম
আরও পড়ুন - প্রতিবাদে ছাড়লেন চাকরি, নাগরিকত্ব বিলে 'ভয় দেখানো'র অভিযোগ বিশিষ্ট আইপিএস-এর
নাগরিকত্ব পাওয়ার শর্ত?
এর আগে ভারতের নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী ভারতের নাগরিকত্ব পেতে গেলে বিদেশী নাগরিকদের ভারতে অন্তত ১২ বছর থাকতে হত এবং নাগরিকত্বের আবেদন করার আগের একবছর একটানা এই দেশে থাকা বাধ্যতামূলক ছিল। নতুন সংশোধনী-তে ১২ বছরের সময়সীমা কমিয়ে ৫ বছরে নামিয়ে আনা হল।
নাগরিকত্ব অর্জনের অর্থ?
বিলে বলা হয়েছে যাঁরা ভারতের নাগরিকত্ব অর্জন করবেন
(ক) তাঁদের ভারতে প্রবেশের তারিখ থেকে ভারতের নাগরিক হিসাবে গণ্য করা হবে
(খ) অবৈধ অভিবাসন বা নাগরিকত্বের বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে যে আইনী কার্যক্রম চলছিল তা সব বন্ধ হবে
কোথায় কোথায় সিএবি কার্যকর হবে না?
সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের অন্তর্ভুক্ত অসম, মেঘালয়, মিজোরাম-এর আদিবাসী অধ্যূষিত এলাকা এবং ১৮৯৩ সালের বেঙ্গল ইস্টার্ন ফর্ন্টিয়ার রেগুলেশন-এ উল্লিখিত 'ইনার লাইন'-এর আওতায় থাকা এলাকাগুলিতে নাগরিকত্ব বিলের এই নয়া সংশোধনী কার্যকর হবে না।