সংক্ষিপ্ত

ভারতের দ্রুততম বিচারের রেকর্ড হল বিহারের (Bihar) আরারিয়া জেলায় (Araria)। পকসো (POCSO) আদালত, এক আট বছরের শিশুকন্যার ধর্ষণের মামলার বিতার করে দোষীকে সাজা মাত্র একদিনে।
 

ভারতের বিচার ব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রিতা প্রবাদ প্রতীম। ওই হিন্দি সিনেমার জনপ্রিয় সংলাপ, 'তারিখ পে তারিখ', অর্থাৎ দিনের পর দিন শুনানি চলে, অপরাধীদের সাজা আর হয় না। এমনকী ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট (Fast Track Court) চালু হওয়ার পর, সেগুলিও যথেষ্ট ফাস্ট বা দ্রুত নয় বলেই অভিযোগ ছিল। তবে, এবার দেশের মধ্যে দ্রুততম রায়দানের নজির গড়ল বিহারের (Bihar) আরারিয়া জেলার (Araria) এক প্রোটেকশন অফ চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস বা পকসো (POCSO) আদালত। এক আট বছরের শিশুকন্যার ধর্ষণের মামলায় দোষীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হল। আর এর জন্য আদালতের কার্যক্রম চলল মাত্র একদিন!

অবিশ্বাস্য হলেও, এটাই সত্যি। পকসো আদালতের বিশেষ বিচারক শশীকান্ত রাই (Special Judge Shashi Kant Rai) মাত্র একদিনের শুনানিতেই ওই দোষীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। আমাদের দেশের ইতিহাসে পকসো আদালতের মাধ্যমে এই রায়ই দ্রুততম বলে জানা গিয়েছে। এর আগে ২০১৮ সালের অগাস্টে মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) দাতিয়া (Datia) জেলায় একটি ধর্ষণের মামলার বিচার শেষ হয়েছিল তিন দিনে। এতদিন, সেটিই ছিল ভারতের দ্রুততম বিচার (Fastest Trial in India) কার্যক্রমের ঘটনা৷ 

আরও পড়ুন - Bihar: মৃত ব্যক্তি জয়ী পঞ্চায়েত ভোটে, তাও আবার নিজেরই মৃত্যুর সহানুভূতির হাওয়ায়

আরও পড়ুন - Poverty Index: দেশের দরিদ্রতম রাজ্য বিহার, দারিদ্র সবথেকে কম কেরলে - কোথায় রয়েছে বাংলা

আরও পড়ুন - POCSO: ত্বর্কের স্পর্শই জরুরি নয়, শিশুদের যৌন নিপীড়ন মামলায় বোম্বে হাইকোর্টে রায় খারিজ সুপ্রিম কোর্টের

এই মামলায়, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সঙ্গে সঙ্গে দোষীকে ৫০,০০০ টাকা জরিমানাও করেছেন বিচারক শশীকান্ত রাই। সেইসঙ্গে নির্যাতিতা শিশুটির পুনর্বাসনের জন্য ৭ লক্ষ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন। গত ৪ অক্টোবরই এই আদেশ জারি করা হয়েছিল। তবে, অতি দ্রুত রায় দান করা হলেও, এই মামলা সংক্রান্ত আদেশনামা প্রকাশ হয়েছে ২৬ নভেম্বর।

জানা গিয়েছে, চলতি বছরের ২২ জুলাই ওই কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছিল। তার পরের দিন আরারিয়া মহিলা থানায় (Araria women's police station), এই বিষয়ে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। মামলাটির তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন আরারিয়া মহিলা থানার ইনচার্জ রিতা কুমারী। তদন্তের কাজ শেষ করে ৩ অক্টোবর ওই মামলার চার্জশিট পেশ করা হয়েছিল। একদিনেই, আদালত সাক্ষীদের বয়ান, বাদি-বিবাদি পক্ষের যুক্তি এবং পাল্টা যুক্তি নথিবদ্ধ করে। তারপর, অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। এরপর একইদিনে এই মামলার রায়ও দেওয়া হয়েছে। 

বিহার সরকারের স্বরাষ্ট্র দফতরের (Home Department, Bihar) প্রসিকিউশন বিভাগ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, 'এটি সম্ভবত দেশের প্রথম মামলা যেখানে একদিনেই বিচার করে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এর আগে, মধ্যপ্রদেশের দাতিয়া জেলায়, এক বিশেষ আদালত, ২০১৮ সালের ৪ অগাস্ট তিন দিনের বিচার কার্যক্রমের পর একটি ধর্ষণের মামলার রায় দিয়েছিল। বিহার এখন দোষীকে একদিনে বিচার করে যাবজ্জীবন সাজা দিয়ে, একটি জাতীয় রেকর্ড তৈরি করেছে'।