সংক্ষিপ্ত
আমেরিকার গবেষণা সংস্থা হিন্ডেনবার্গ তাদের রিপোর্টে দাবি করেছে, প্রায় এক দশক ধরে শেয়ারের দরে কারচুপি করছে আদানি গোষ্ঠী। এই পরিস্থিতিতে এই গোষ্ঠীতে আর বিনিয়োগ করতে চাইছে না বিশ্বের তাবড় সংস্থাগুলি।
শেয়ার বাজারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি গৌতম আদানির গোষ্ঠীর বড়সড় পতন। আমেরিকার গবেষণা সংস্থা হিন্ডেনবার্গ তাদের রিপোর্টে দাবি করেছে, প্রায় এক দশক ধরে শেয়ারের দরে কারচুপি করছে আদানি গোষ্ঠী। এই বিতর্কেই এখন উত্তাল ভারত। পরিস্থিতি সামাল দিতে অবশেষে নড়েচড়ে বসল কেন্দ্র সরকার। আদানি গ্রুপের আর্থিক রিপোর্ট এবং অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংক্রান্ত নথি পর্যালোচনা করা শুরু করল কেন্দ্রীয় কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রক। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার সূত্র অনুযায়ী, আদানির শেয়ার সংক্রান্ত বিবিধ তথ্য এবং নথি খতিয়ে দেখছেন কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞরা।
গত ২৪ জানুয়ারি মার্কিন শর্ট-সেলার হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। তাতে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শেয়ার কারচুপি, বিপুল অঙ্কের ঝুঁকিপূর্ণ ঋণের অভিযোগ তোলা হয়। সেই রিপোর্ট প্রকাশের পর থেকে দ্রুত নিম্নমুখী হয়েছে আদানি গোষ্ঠীর ৭টি সংস্থার শেয়ার।
ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় আদানি গোষ্ঠী বারবার হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টকে 'ভুয়ো' বলে উল্লেখ করেছে, বিনিয়োগকারীদের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তা সত্ত্বেও লোকসানের ভয়ে অতি দ্রুত আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার বেচে দিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। তার ফলেই হু হু করে নামছে শেয়ার দর। অবস্থা এমনই যে, মাত্র ৫ দিনেই শেয়ার বাজার থেকে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার গায়েব হয়ে গেছে। ফরাসি সংস্থা টোটাল এনার্জি জানিয়ে দিয়েছে, আদানি টোটাল গ্যাসে তাদের শেয়ার রাখার বিষয়টি নতুন করে বিবেচনা করা হয়নি। শুক্রবার সংস্থার তরফে জানানো হয়, এখনও তারা আদানি গোষ্ঠীতে বিনিয়োগের বিষয়টি পুনর্মূল্যায়ন করেনি। আমেরিকার ডাও জোন্সের ‘সাসটেনেবিলিটি সূচক’ থেকে আদানি এন্টারপ্রাইজ়েসকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে বিনিয়োগ রয়েছে LIC-র মতো রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থারও। রয়েছে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের পাহাড় প্রমাণ ঋণ। তাছাড়া একগুচ্ছ হেভিওয়েট সরকারি প্রকল্পের বরাত রয়েছে আদানি গোষ্ঠীর হাতে। শেয়ার বাজারে এমন ধসের পর, সেই প্রকল্পগুলির ভবিষ্যত কী? প্রশ্ন উঠছে রাজনীতির বিরোধী শিবিরে।
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে তলব করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। কোন ব্যাঙ্কের আদানি গোষ্ঠীতে কতটা বিনিয়োগ/ঋণ রয়েছে, তার হিসাব দিতে বলা হয়েছে। শুক্রবার আদানি পরিস্থিতি নিয়ে বিবৃতিও প্রকাশ করেছে RBI।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় আধিকারিকরা এই নথি পরীক্ষার প্রক্রিয়া শুরু করেন। এমনটাই দাবি এক সরকারি সূত্রের। ভারতের কোম্পানি আইনের ২০৬ নম্বর ধারার অধীনে সমগ্র প্রক্রিয়াটি শুরু হয়েছে। এই ধারায় সরকার চাইলে কোনও সংস্থার বিগত কয়েক বছরের আর্থিক নথি, যেমন ব্যালেন্স শীট, অ্যাকাউন্টের খাতা পর্যালোচনা করতে পারে। এছাড়া বোর্ড মিটিং, সংস্থার সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া ইত্যাদিও পর্যালোচনা করা যায়।
আরও পড়ুন-
অখিলেশ যাদবের কনভয়ে মারাত্মক দুর্ঘটনা, ধাক্কা মারতে মারতে দুমড়ে গেল একের পর এক গাড়ি
বাবুল সুপ্রিয়র কনভয়ের সাথে অটোর সংঘর্ষ, শুক্রবার সন্ধ্যায় বীরভূমে বড়সড় দুর্ঘটনা
আবার ১৫ ডিগ্রিতে নেমে গেল কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা, অধিকাংশ জেলাতেই পারদ স্বাভাবিকের নীচে