৫,০০০ কোটি বরাদ্দ, ভারতীয় নৌবাহিনীর বৃহৎ সম্প্রসারণ নিয়ে বিরাট প্ল্যান কেন্দ্রের
ভারতীয় নৌবাহিনী ৫,০০০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি বৃহৎ সম্প্রসারণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এমডিএল জাহাজ নির্মাণ সংস্থাকে সম্প্রসারণের জন্য ৪,০০০ থেকে ৫,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে।

আরব সাগরে অপারেশন সিন্ধুর মাধ্যমে তার শক্তি প্রদর্শন করেছে ভারতীয় নৌবাহিনী। বর্তমানে ৫,০০০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি বৃহৎ সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে।
এর অংশ হিসেবে, ভারতের নৌবাহিনীর প্রতিরক্ষা উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী এমডিএল জাহাজ নির্মাণ সংস্থাকে সম্প্রসারণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ৪,০০০ থেকে ৫,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে।
এই পরিকল্পিত সম্প্রসারণ মাজাগাঁও ডক শিপবিল্ডার্স লিমিটেড (এমডিএল) কোম্পানির কার্যক্ষমতাকে সম্পূর্ণরূপে বদলে দেবে। মুম্বাই-ভিত্তিক এই জাহাজ নির্মাণ সংস্থাটি তার বর্তমান স্থানের কাছে ১০ একর সমুদ্র এলাকা পুনরুদ্ধার করে দুটি নতুন নির্মাণ সুবিধা তৈরির পরিকল্পনা করছে। এটি পরবর্তী প্রজন্মের যুদ্ধজাহাজ এবং উন্নত সাবমেরিন সহ বৃহৎ আকারের নৌবহর একসাথে নির্মাণ এবং মেরামত করতে ব্যবহৃত হবে।
এই উন্নয়ন এমডিএল-এর বর্তমান পরিচালনা ক্ষমতা ৪০,০০০ টন থেকে ৮০,০০০ টনে দ্বিগুণ করবে। এছাড়াও, ৩৭ একর জমিতে ২ লক্ষ টন ওজন পরিচালনা করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০৪৭ সালের মধ্যে ১৭৫টি প্রধান জাহাজ নিয়ে একটি নৌবাহিনী গড়ে তোলার ভারতীয় নৌবাহিনীর দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যে এই প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
দ্রুত নির্মাণ, উন্নয়ন এবং রক্ষণাবেক্ষণ চক্র নিশ্চিত করবে এই সম্প্রসারণ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। সে অনুযায়ী, এমডিএল গত বছর মুম্বাই বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ২৯ বছরের জন্য ১৫ একর জমি ইজারা নিয়েছে এবং নির্মাণ কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে।
বর্তমানে, এমডিএল একসাথে ১১টি সাবমেরিন এবং ১০টি যুদ্ধজাহাজ নির্মাণের ক্ষমতা নিয়ে কাজ করছে। এই সম্প্রসারণ ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য ১.০৬ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের দুটি উচ্চ-মূল্যের সাবমেরিন প্রকল্পকে সমর্থন করবে। এটি ভারতের পানির নিচে যুদ্ধ করার ক্ষমতাকে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করবে।
এই সম্প্রসারণের মাধ্যমে ভারত তার নৌবাহিনীকে শক্তিশালী করছে, যদিও ৩৭০ টিরও বেশি যুদ্ধজাহাজ নিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম নৌবাহিনী চীনের তুলনায় এখনও পিছিয়ে। তবে, এই সাম্প্রতিক পদক্ষেপ নয়াদিল্লির কৌশলগত পাল্টা পদক্ষেপের অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। দেশীয় শক্তি এবং অবকাঠামো আধুনিকীকরণের উপর গুরুত্ব দিয়ে এই বৈষম্য কমাতে চেষ্টা করছে ভারত।
১৭৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এমডিএল ভারতের প্রাচীনতম এবং গুরুত্বপূর্ণ জাহাজ নির্মাণ কেন্দ্রগুলির মধ্যে একটি। ১৯৬০ সালে জাতীয়করণের পর থেকে এটি ৩১টি প্রধান যুদ্ধজাহাজ এবং আটটি সাবমেরিন সহ ৮০০ টিরও বেশি জাহাজ সরবরাহ করেছে। এছাড়াও, ২১৪ টি জাহাজ আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের কাছে রপ্তানি করা হয়েছে।
এই বিশাল বিনিয়োগের মাধ্যমে, ভারতের সামুদ্রিক আধিপত্যের কৌশলে এমডিএল একটি কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করতে প্রস্তুত।
এটি কেবল সংখ্যায় নয়, স্বনির্ভরতা, গতি এবং অত্যাধুনিক প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির উপরও গুরুত্ব দিয়ে আগামী দশকগুলিতে ভারতকে একটি গুরুত্বপূর্ণ "নীল জলের নৌবাহিনী" হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রস্তুত।

