সংক্ষিপ্ত

কথা রেখেছেন লেফটেন্যান্ট ঋষি কুমার। চার জনের কাঁধে চেপে, কফিনবন্দী নিথর দেহ বাড়িতে পৌঁছেছে তাঁর।

মাকে কথা দিয়েছিলেন বোনের বিয়েতে বাড়ি ফিরবেন। ভারতীয় সেনা জওয়ান(Indian Army officer) তো...কথা দিয়ে কথা রাখবেন না, তা কি হয়। কথা রেখেছেন লেফটেন্যান্ট ঋষি কুমার (Lieutenant Rishi Kumar)। ঠিক সময়েই বাড়ি ফিরেছেন তিনি। তবে একটা বিরাট বদল নিয়ে ফিরেছেন ঋষি। চার জনের কাঁধে চেপে, কফিনবন্দী নিথর দেহ বাড়িতে পৌঁছেছে তাঁর। 

জম্মু ও কাশ্মীরের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে ভারতীয় সেনা বাহিনী টহল দিচ্ছিল। সেই সময়ই ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ এক সেনা আধিকারিক ও এক জওয়ানের মৃত্যু হয়। আহতদের সেনা বাহিনীর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই বিস্ফোরণে শহিদ হন লেফটেন্যান্ট ঋষি কুমার। জাতীয় পতাকায় দেহ মুড়ে কফিন বন্দী হয়ে নিজের বাড়িতে পৌঁছলেন তিনি।

পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন যে লেফটেন্যান্ট ঋষি ২৭ অক্টোবর তার মাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তিনি ছট পূজার জন্য বাড়ি ফিরে আসবেন কিন্তু তার ছুটি পুনর্নির্ধারিত হওয়ায় সেই প্রতিশ্রুতি রাখতে পারেননি। মৃত্যুর আগে এটাই ছিল মায়ের সাথে শেষ কথা। লেফটেন্যান্ট ঋষির পরিবার শোকে পাথর হয়ে রয়েছে। এই জওয়ানের বড় বোনও ভারতীয় সেনার সদস্য। 

লেফটেন্যান্ট ঋষি, বিহারের বেগুসরাইয়ের বাসিন্দা। ৩০শে অক্টোবর অপারেশন চলাকালীন একটি ল্যান্ডমাইনে পা রাখার পরেই বড় বিস্ফোরণ ঘটে। আরেক জওয়ান মনজিৎ সিং-এর সাথে শহিদ হন তিনি। ঋষি কুমার প্রায় দুই মাস আগে কাশ্মীরে ১৭ শিখ লাইট ইনফ্যান্ট্রির অংশ হিসাবে ভারতীয় সেনায় যোগ দিয়েছিলেন। ভারতীয় সেনাবাহিনীতে সবে মাত্র এক বছর পূর্ণ করেছিলেন ঋষি কুমার।

Yogi Adityanath-তালিবান ভারতের দিকে এগোলে এয়ারস্ট্রাইক তৈরি, হুমকি মুখ্যমন্ত্রীর

Fire Crackers Ban-বাজি বাজেয়াপ্ত অভিযান জেলায় জেলায়, বাঁকুড়ায় একদিনে গ্রেফতার ১৮

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং নিজেও বেগুসরাইয়ের বাসিন্দা, শহিদ অফিসারের সাহসিকতাকে স্যালুট করেছেন এবং পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার শহিদ অফিসারের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন এবং ঘোষণা করেছেন যে মৃত লেফটেন্যান্টের শেষকৃত্য পুলিশি পূর্ণ সম্মানের সাথে করা হবে।

উল্লেখ্য, সংবাদ সংস্থা পিটিআই- জানিয়েছে যে এলাকায় ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ হয়েছে সেখানে অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে ভারতীয় সেনা বাহিনী ল্যান্ডমাইন বসিয়ে রেখেছিল। তবে সেই ল্যান্ড মাইনে বিস্ফোরণ হয়েছে কিনা তা এখনও নিশ্চিত করেনি সেনা বাহিনী। নওশেরা সেক্টর রাজৌরি জেনলার অধীন। যা জম্মুর পিরপঞ্জাল অঞ্চলের অংশ। এই এলাকায় কিন্তু গত তিন সপ্তাহ ধরে সেনা অভিযান চলছে। তাই এখনও নিশ্চিত নয় কী ভাবে এই ঘটনা ঘটেছে। সেনা সূত্রের খবর গোটা ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। 

সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মীর একের পর এক সাধারণ নাগরিকদের টার্গেট করছে জঙ্গিরা। এই ঘটনায় তারা হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে সকলকেই টার্গেট করেছে। জঙ্গিদের নিশানায় যেমন ছিল কাশ্মীরি পণ্ডিতরা। তেমনই  ছিল ভিন রাজ্য থেকে কাজের খোঁজে যাওয়া শ্রমিকরা। পাশাপাশি স্থানীয় ব্যবসায়ীদেরও টার্গেট করেছিল জঙ্গিরা। তারপরই জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামে ভারতীয় সেনা ও জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ। কেন্দ্রীয় স্বারাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহর সফরের সময়ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত ছিল। একের পর এক এনকাউন্টারে বেশ কয়েকজন জঙ্গিকে নিকেশ করে। পাল্টা শহিদ হয়েছেন ভারতীয় নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনীর জওয়ানরা।