সংক্ষিপ্ত

নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভ ভিডিও করে যুবক প্রকাশ্যে জানিয়ে দেন যে তিনি খুশিকে খুন করেছেন। এরপর তিনি বলেন, ‘এবার আমি ওর কাছে যাচ্ছি’।

নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ভয়ঙ্কর ভিডিও করে পরিচিত এবং বন্ধুবর্গের কাছে আরও একটি ভয়ঙ্কর কাণ্ডের স্বীকারোক্তি করলেন এক যুবক। ফেসবুক লাইভে এসে সর্বসমক্ষে নিজের প্রেমিকাকে খুনের কথা জানালেন তিনি। এরপর নিজেকেও মেরে দিচ্ছেন বলে জানান ওই যুবক। তার আগে যে আত্মহত্যা করার জায়গার লাইভ লোকেশন (বর্তমান অবস্থান)-ও তিনি পাঠিয়ে দিয়েছেন, তাও জানিয়ে দেন তিনি। সম্পূর্ণ কথা জানানোর সময় তাঁর কপালের কাছে বাঁ হাতে ধরা ছিল একটি বন্দুক। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খণ্ডের রাঁচিতে।

এই শহরের মহিলা হস্টেলে বাস করতেন নিবেদিতা নামের এক ছাত্রী, যাঁর অপর নাম ছিল খুশি, বয়স ১৯ বছর। এই খুশির সঙ্গেই প্রণয়ঘটিত সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন ফেসবুক লাইভে আসা ওই যুবক, যাঁর নাম অঙ্কিত। সেই প্রেমের পরিণতি এমন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠল, যা দেখে স্তম্ভিত হয়ে গেছেন পুলিশ কর্তারাও। ফেসবুক লাইভে এসে ‘বাই বাই’ বলে নিজের মাথায় গুলি চালিয়ে দিলেন অঙ্কিত। সেই ভিডিও দেখে শিহরিত হয়ে উঠছেন নেটিজেনরা।

১৩ মে শনিবার রাঁচির অরগোড়া থানা এলাকার পটেল চকে অবস্থিত একটি মহিলা হস্টেলের সামনে প্রেমিকা নিবেদিতা ওরফে খুশিকে লক্ষ্য করে একের পর এক গুলি চালান অঙ্কিত। জানা গেছে, নিবেদিতাকে পর পর তিনটি গুলি করেছিলেন অঙ্কিত। একটি গুলি ছিটকে এসে নিবেদিতার বান্ধবী সৃষ্টির গায়েও লেগেছিল। তৎক্ষণাৎ হস্টেলের সামনে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন খুশি। আর, গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁর বান্ধবীকে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিবেদিতার সঙ্গে অঙ্কিতের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিগত কয়েকদিন ধরে অঙ্কিতের সঙ্গে কোনও রকম যোগাযোগ রাখছিলেন না নিবেদিতা (খুশি)। অঙ্কিতের ফোন ধরছিলেন না এবং মেসেজেরও কোনও উত্তর দিচ্ছিলেন না তিনি। শনিবার সন্ধ্যায় তাঁর বান্ধবী সৃষ্টিকে সঙ্গে নিয়ে পটেল চকের হস্টেলের কাছেই একটি দোকানে খাবার কিনতে গিয়েছিলেন নিবেদিতা।

সন্ধ্যা ৬টার কিছুক্ষণ পরে খাবার কিনে আবার হস্টেলে ফিরে আসার সময় খুশির রাস্তা আটকে দাঁড়ান অঙ্কিত। খুশি কেন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন না, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি। কিন্তু নিবেদিতা বা খুশি অঙ্কিতের কথার কোনও উত্তর না দিয়েই হস্টেলের দিকে হাঁটা শুরু করেন। তখনই তাঁর সামনে এসে বন্দুক বার করে একের পর এক গুলি চালান অঙ্কিত। একটি বুলেট একেবারে অঙ্কিতার চোখ ফুঁড়ে বেরিয়ে যায়। দু’টি গুলি তাঁর বুকে লাগে। আরেকটি গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে নিবেদিতার বান্ধবী সৃষ্টির গায়ে লাগে।

সন্ধেবেলা গুলির আওয়াজ শুনে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এলাকার মানুষজন। ভিড় হতে দেখে বাইকে উঠে সেখান থেকে পালিয়ে যান আততায়ী অঙ্কিত। স্থানীয় মানুষরাই পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে নিবেদিতা এবং সৃষ্টিকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা নিবেদিতাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এখন তাঁর বান্ধবী সৃষ্টির শারীরিক অবস্থা সংকটজনক। খুনের পরই অঙ্কিতের খোঁজ করতে শুরু করে পুলিশ। কিন্তু, তিনি কোথাও গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন। তার পর শনিবার রাতেই তিনি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভ ভিডিও করেন। যে বন্দুক দিয়ে তিনি নিবেদিতা বা খুশিকে খুন করেছিলেন বলে জানা গেছে, সেই বন্দুকটিই লাইভ ভিডিও করার সময় ধরা ছিল তাঁর বাঁ হাতে।

ফেসবুক লাইভে অঙ্কিত বলেন, “খুশিকে মেরে দিয়েছি। আমার লোকেশন পাঠাচ্ছি। আমার ৮৭ নম্বর ফোন চালু আছে। ওই নম্বরে কল করতে পারো। অনুরাধা দিদিকে আমার লোকেশন পাঠিয়ে দিয়েছি। খুশিকে খুন করেছি। এবার আমি ওর কাছে চলে যাচ্ছি। এখন আমি নিজেকে মারতে চলেছি। বাই বাই।” তার পরই নিজের মাথায় গুলি করে আত্মঘাতী হন অঙ্কিত। আরগোড়া এলাকার যে বাড়িতে তিনি ভাড়া থাকতেন, সেই বাড়ি থেকেই তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁর হাতে নিহত নিবেদিতা ওরফে খুশি বিহারের নওয়াদার বাসিন্দা। রাঁচিতে হস্টেলে থেকে তিনি পড়াশোনা করতেন বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুন-

খড়দহ স্টেশনে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, শনিবার রাতে শিয়াদহের গ্যালোপিং লোকালের ধাক্কা লেগে মৃত্যু
তোমাকে পাগলের মতো ভালোবাসি বেবি গার্ল: জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজকে কী ‘সুপার সারপ্রাইজ’ দেবেন সুকেশ চন্দ্রশেখর?

Karnataka Chief Minister: কে হবেন কর্ণাটকে কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী? রবিবারেই চূড়ান্ত ঘোষণা