সংক্ষিপ্ত
- ভালবাসার এক নতুন অধ্যায় লিখলেন কর্ণাটকের এক প্রৌঢ়
- আধুনিক ভারতের শাহজাহান তকমা পেলেন তিনি
- নিজের প্রয়াত স্ত্রীর মোমের মূর্তি তৈরি করালেন ওই ব্যক্তি
- স্ত্রীর বাংলোতে থাকার সাধ পূরণ করতে মূর্তি বসালেন
বর্তমান বিশ্বে প্রকৃত ভালবাসার সন্ধান পাওয়া বিরল। সংবাদ মাধ্যমে বারবার প্রকাশিত হয় নানা খবর, যেখানে দেখা যায় প্রেমিকের হাতে খুন হয়েছেন প্রেমিকা, বা স্ত্রী ষড়যন্ত্র করে হত্যা করেছে স্বামীকে। সেখানে ভালবাসার এক নতুন অধ্যায় লিখলেন কর্ণাটকের ব্যবসায়ী শ্রীনিবাস গুপ্তা। বছর তিনেক আগে গত হয়েছেন স্ত্রী। কিন্তু নতুন বাংলোর উদ্বোধনে সেই স্ত্রীকেই হাজির করলেন তিনি। গৃহলক্ষ্মীর মোমের মূর্তিকে সাথে নিয়েই গৃহপ্রবেশ করলেন এই প্রৌঢ় শিল্পপতি।
বছর তিনেক আগে মেয়েদের সঙ্গে তিরুপতি যাওয়ার সময় পথ দুর্ঘটনায় মারা যান শ্রীনিবাস গুপ্তার স্ত্রী মাধবী। শ্রীনিবাসনের স্ত্রীর স্বপ্ন ছিল তাঁদের একটি বাংলো থাকবে। । প্রয়াত স্ত্রীর শখ পূরণ করতে তাই বিলাসবহুল একটা বাংলো কিনে নেন তিনি। বাংলোয় কী ভাবে স্ত্রীর স্মৃতি ধরে রাখা যায় সে ব্যাপারে নানা জনের পরামর্শ নেন ওই শিল্পপতি। অবশেষে শ্রীনিবাসের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় মহেশ নামের এক আর্কিটেক্টের। তিনিই ব্যবসায়ী শ্রীনিবাসকে বুদ্ধি দেন বাংলোয় স্ত্রীর মোমের মূর্তি বসানোর।
প্রয়াত স্ত্রী-র স্মৃতির উদ্দেশ্যে এবার নতুন বাংলোয় মোমের মূর্তি বসালেন কর্ণাটকের এই ব্যবসায়ী। গৃহপ্রবেশের দিন কোপ্পালে সেই নতুন মূর্তি উন্মোচন করে ফেললেন তিনি। বাংলোর লিভিং রুমে সোফায় বসানো রয়েছে মাধবীর মূর্তি। পরনে গোলাপি রঙয়ের সিল্কের শাড়ি। সঙ্গে মানানসই সোনার গয়না। মুখে লেগে স্নিগ্ধ হাসি। একঝলক দেখলে মনে হবে যেন সত্যিই অতিথি আপ্যায়নের জন্য হাসিমুখে বসে আছেন মাধবী। শিল্পীর নিপুণ কাজের দক্ষতায় বলে না দিলে বোঝা দায় যে ওটা মোমের মূর্তি।
আরও পড়ুন: ১০ রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি সবচেয়ে বেশি উদ্বেগজনক, মমতা-সহ মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে ফের বৈঠকে মোদী
বিখ্যাত শিল্পী রংঘনাভর এই মূর্তির ডিজাইনে সাহায্য করেছেন। প্রায় এক বছর সময় নিয়ে এই মূর্তি গড়েছেন বেঙ্গালুরুর বিখ্যাত শিল্পী শ্রীধর মূর্তি। নিজের স্ত্রী-র মূর্তির প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে শ্রীনিবাস জানিয়েছেন, “নতুন বাড়িতে স্ত্রীকে ফিরে পেয়ে দারুণ লাগছে। এটাই আমার স্বপ্নের বাড়ি। শিল্পী শ্রীধর মূর্তি একবছর ধরে আমার স্ত্রীর মূর্তি বানিয়েছেন। মূর্তির স্থায়িত্ব বাড়ানোর জন্য সিলিকন ব্যবহার করা হয়েছে।”
শ্রীনিবাস আরও জানান, “শিল্পীর কাজে আমি মুগ্ধ। মূর্তিতেও জীবন্ত লাগছে মাধবীকে। বাড়িতে অতিথি এসে সবসময় হাসিমুখে আপ্যায়ন করত ও। এ বার থেকে চোখের সামনেই থাকবে মাধবী। হোক না মূর্তি, তাও মনে হবে যে আমার স্ত্রী সবসময়ই আমার সঙ্গে আছে।”
এমন খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ পেতেই তা ভাইরাল রয়েচে। প্রয়াত স্ত্রী-র প্রতি শ্রীনিবাসের ভালবাসাকে কুর্নিশ করছেন নেটিজেনরা। শ্রীনিবাস যেন আধুনিক ভারতের শাহজাহান। যিনি মমতাজের মতই স্মরণীয় করে রাখলেন স্ত্রী মাধবীকে। শ্রীনিবাস তুলনা টেনে বলা হচ্ছে স্ত্রীর প্রতি স্বামীর ভালবাসা এমনই হওয়া উচিত। যিনি স্ত্রীর প্রয়াণের পরেও তাঁকে এ ভাবে জীবিত রাখতে চান স্বামী।