সংক্ষিপ্ত
সিরাজুদ্দিনের নিজ গ্রামে প্রকল্পটি ন্যাশনাল বুক ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া (NBT) এবং জম্মু ও কাশ্মীর সরকার দ্বারা সমর্থিত হয়েছে।
ইংল্যান্ডের ভিলেজ লাইব্রেরির ধারণা মুগ্ধ করেছিল কাশ্মীরি যুবক সিরাজুদ্দিন খানকে। তারপর এই ভাবনাকে চাক্ষুস করার সুযোগ হয় মহারাষ্ট্রের একটি গ্রামে তৈরি ইংল্যান্ডের ভিলেজ লাইব্রেরির ধারণা সম্বলিত একটি লাইব্রেরি দেখে। তখন থেকেই এই ভিলেজ লাইব্রেরিকে নিজের গ্রামে নিয়ে আসার পরিকল্পনা করে ওই যুবক। অবশেষে উত্তর কাশ্মীরের বান্দিপুর জেলার ছোট্টো গ্রাম আরগামে ২২টিরও বেশি বাড়িতে লাইব্রেরি স্থাপন করেন এই যুবক। কাশ্মীরের একটি ছোট্টো গ্রাম আরগামের ছেলে সিরাজ্জুদিন খান। বেড়ে ওঠা পুনের সারহাদ ফাউন্ডেশনে। এটি হল সঞ্জয় নাহার পরিচালিত একটি এনজিও, যা সন্ত্রাসের শিকার কাশ্মীরি ছেলে ও মেয়েদের শিক্ষার আলোয় এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে। বর্তমানে পিএইচডি করছেন সিরাজউদ্দিন। ভিলেজ লাইব্রেরি প্রসঙ্গে সিরাজউদ্দিন জানিয়েছেন, ২০২০ সালে যখন গোটা বিশ্ব কোভিড মহামারিতে জেরবার তখনই প্রথম এই ভিলেজ লাইব্রেরি সম্পর্কে জানতে পারেন তিনি। পরবর্তীকালে মহারাষ্ট্রের বেল্লার গ্রামে একটি 'ভিলেজ লাইব্রেরি' খোলা হয়েছে বলেও জানতে পারেন সিরাজউদ্দিন। এবং লাইব্রেরি খোলা হয়েছে রাজ্য সরকারের সহায়তায়। এরপরই নিজের গ্রামে এই লাইব্রেরি খোলার কথা ভাবেন তিনি। সিরাজুদ্দিনের নিজ গ্রামে প্রকল্পটি ন্যাশনাল বুক ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া (NBT) এবং জম্মু ও কাশ্মীর সরকার দ্বারা সমর্থিত হয়েছে।
নয়াদিল্লিতে চলমান বিশ্ব বই মেলায় সরহাদ ফাউন্ডেশনের স্টলে আওয়াজ-দ্য ভয়েস-এর সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে, সিরাজউদ্দিন বলেন, 'বই আপনার চোখ খুলে দেয়। জ্ঞান আপনাকে জানাতে দেয় আপনি কোথায় দাঁড়িয়ে আছেন এবং আপনি কী করতে পারেন।' তিনি আরও জানিয়েছেন, ফলে গত দুই মাসে তিনি আরাগামের ১০০টি বাড়িতে ২২টিরও বেশি লাইব্রেরি স্থাপন করেছেন।'হর ঘর লাইব্রেরি'-এর পিছনে সিরাজুদ্দিনের ধারণা হল প্রতিটি পরিবারের একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে বইয়ের সংগ্রহ থাকা উচিত যাতে গ্রামের লোকেরা একে অপরের কাছে তথ্য এবং ধারণা বিনিময়ের জন্য এবং এমনকি বইয়ের জন্যও যেতে পারে। তিনি বলেছেন যে এই পদক্ষেপ শুধুমাত্র গ্রামবাসীদের ঐক্যই বাড়াবে না বরং নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছাকাছি থাকার কারণে তাদের সাধারণ সমস্যার সমাধান খুঁজতে তাঁদের একত্রিত করতে সাহায্য করবে।
পার্শ্ববর্তী কুপওয়ারার একটি গ্রামের হেলমতপোরার ২৬ বছর বয়সী মুবাশ্বির মুশতাকের সঙ্গে সিরাজুদ্দিনের আলাপ সেখানকার যুবকদের চিন্তাধারায়ও পরিবর্তন এনেছে এবং তাদের চিন্তার খোরাক দিয়েছে। সিরাজুদ্দিন বলেছেন, সরকার সকলকে চাকরি দেওয়ার অবস্থানে নেই। তাই স্বনির্ভরতার প্রয়োজন রয়েছে। তিনি এই মন্ত্র অনুসরণ করে চলেছেন। সারহাদ ফাউন্ডেশনের সহায়তায়, তিনি সম্প্রতি পুনেতে ফাউন্ডেশনের সদর দফতরে নিয়ন্ত্রণরেখার কাছাকাছি গ্রামের ২৫ জন মেয়েকে ইংরেজি, কম্পিউটার ইত্যাদি শিখিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে একটি লাইব্রেরি রাখার প্রচারাভিযান শেষ করার পরে, তিনি কাশ্মীরকে 'জ্ঞানের উপত্যকায়' পরিণত করতে অন্যান্য গ্রামে কাজ করার পরিকল্পনা করেছেন।
আরও পড়ুন -
ক্ষতি এড়িয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে কীভাবে নামবে মেঘা ট্রপিক্স ১, বড় চ্যালেঞ্জ ইসরোর সামনে