সংক্ষিপ্ত
প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে অভিযোগ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই অভিযোগ খাজির করে দিয়েছে ডিভিসি।
ম্যান মেড বন্যার তত্ত্ব খারিজ করে দিল ডিভিসি বা দামোদার ভ্যালি কর্পোরেশন। ডিভিসির পক্ষ থেকে এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সুত্যব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আমরা প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ কিউসেক জল ধরে রেখেছি। যতটা সম্ভব জল ধরে রাখা হচ্ছে। কিন্তু গত কয়েক দিনে বাঁধের ওপরে ১০০ মিলিমিটার আর বাঁধের নিচে অববাহিকা অঞ্চলে ১৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ডিভিসি সর্বাধিক ১ লক্ষ ১৪ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছে। তার আগে কম জল ছাড়া হয়েছে। বাঁধ থেকে জল ছাড়ার সঙ্গে অতিরিক্ত বৃষ্টি জন্য়ই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ' মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় অভিযোগ করেছেন রাজ্যকে না জানিয়ে জল ছাড়ার কারণেই এই রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সংবাদ মাধ্যমের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছেও এই অভিযোগ করেছিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে অভিযোগ করেছেন যে প্রচুর পরিমাণে জল ছাড়ার কারণে রাজ্যে একটি Man Made Flood পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যদিও ডিভিসির দাবি অতিরিক্তি বৃষ্টির কারণেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
Good News: কৃষ্ণনগরের সরভাজা আর সরপুরিয়া, রসগোল্লার পর আরও দুটি মিষ্টি পেতে চলেছে GI তকমা
রাজ্যকে না জানিয়ে ডিভিসি জল ছাড়ে এই অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন সত্যব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন জল ছা়ড়ার সিদ্ধান্ত একা ডিভিসি নিতে পারে না। সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য একটি কমিটি রয়েছে। কেন্দ্রীয় জল কমিশনের সদস্য ছাড়াও সেই কমিটিতে থাকেন ডিসিভির চিফ ইঞ্জিনিয়র, পশ্চিমবঙ্গ আর ঝাড়খণ্ডের সেচ দফতরের চিফ ইঞ্জিনিয়াররা। এই কমিটিই সিদ্ধান্ত নেয় জলাধার থেকে কখন কতটা পরিমাণে জল ছাড়া হবে। কমিটির নির্দেশ পেলেই জলাধারের গেট খুলে জল ছেড়ে দেওয়া হয়।
কোভিডের সংক্রমণ রুখতে দ্রুত ব্যবস্থা নিন, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আর্জি মুখ্যমন্ত্রীকে
রাজ্য সরকার আর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ ডিভিসির জলাধারে পরি পড়ে গিয়েছিল। তাই কমে গেছে জলধারণ ক্ষমতা। রাজ্যের এই অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে নিয়ে ডিভিসির কর্তারা জানিয়েছেন ড্রেজিংএর প্রস্তাব দিয়ে একটি চিঠি লেখা হয়েছে কেন্দ্রকে। কিন্তু দেখা গেছে পলি পরিষ্কার করার জন্য প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। আর্থিকভাবে আর প্রযুক্তিগতভাবে এটি লাভজনক নয় এই কারণ দেখিয়ে এই প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় জল কমিশন। কমিশনের যুক্তির কথাও জানিয়েছে ডিভিসি। বাঁধের পলি পরিষ্কার করতে যেখানে খরচ হবে ৫০ হাজার কোটি টাকা সেখানে নতুন বাঁধ তৈরিতে খচর হবে ১০ হাজার কোটি টাকা। অন্য দিকে এক বছর বাঁধের ড্রেজিংএর তেমন কোনও উদাহরণও পাওয়া যায়নি। তাই এই প্রস্তাব খারিজ হয়ে গেছে বলেও জানিয়েছে ডিভিসি। পলি পরিষ্কার করা হলে বিপুল পরিমাণে পলি কোথায় রাখা হবে তা নিয়েও সমস্যা তৈরি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হয়েছে। ডিসিভির কর্তা জানিয়েছেন যে লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ডিভিসি তৈরি হয়েছিল তার ৩৬ শতাংশ এখনও বর্তমান রয়েছে। তবে সত্যব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন বন্যা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা পুরোপুরি এখন আর ডিভিসির হাতে নেই।
'তৃণমূলের ভাঁওতাবাজির বাংলা মডেল', পরপর ৮টি টুইটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জবাব দিল বিজেপি
ডিভিসির পক্ষ থেকে আরও জানান হয়েছেস প্রাথমিকভাবে মাইথন আর পাঞ্চেত জলাধারের আয়ু ধরা হয়েছিল ৭৫ বছর। কিন্তু সংস্কার করে সেই বাঁধ দুটির আয়ু বাড়িয়ে তা ১১০ বছর করা হয়েছে। ডিভিসির পক্ষ থেকে আরও জানান হয়েছে, ডিভিসি শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় জল কমিশনের নির্দেশ বাস্তবায়িত করে। তবে জল ছাড়ার আগে রাজ্য সরকারের সম্মতি নেয়। পাশাপাশি সতর্ক করে সংলগ্ন জেলাগুলিকেও। ডিভিসির পক্ষ থেকে পিটিআইকে বলা হয়েছে আবহাওয়ার পূর্বাভাস যা রয়েছে তাতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন রূপনারায়ণ আর হুগলি নদীর জল ধারণ ক্ষমতা কমেছে। যেসব নদীতে ২য়৫ লক্ষ কিউসেক জল ধারণের ক্ষমতা থাকার কথা সেই সময় নদী বর্তমানে মাত্র ১ লক্ষ কিউসের জলই ধারণ করতে পারে।