সংক্ষিপ্ত

দুই দিনের মিশর সফরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কায়রো বিমান বন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান মিশরের প্রধানমন্ত্রী। প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে দেখা করলেন মোদী।

 

দুই দিনের মিশর সফরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভারতীয় সময় শনিবার সন্ধ্যেবেলা মোদী কায়রো পৌঁছায়। সেখানে তাঁকে স্বাগত জানান মিশরের প্রধানমন্ত্রী মোস্তাফা মাডবাউলি। ২৬ বথর পরে কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক সফরে মিশর গেলেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এটাই মোদীরও প্রথম মিশর সফর। তাই এই সফর দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এদিন কায়রো বিমান বন্দরে মোদীকে বিশেষ সম্মান জানিয়ে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।

এদিন মোদী প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে দেখা করেন। প্রধানমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে রীতিমত উৎসাহী তারা। উষ্ণ অভ্যর্থনা দিয়ে বরণ করে নেন। এক ভারতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রীকে হিন্দি সিনেমার গানও শোনান। 'ইয়ে দোস্তি...'। গান শোনেন মোদী, তারিফও করেন। এদিন মোদীর সভায় উপস্থিত প্রবাসী ভারতীয় মহিলাদের পোশাক ছিল সম্পূর্ণ ভারতীয়। শাড়ি ছিল পরনে। অনেকেই আবার গয়না পরেও এসেছিলেন। মাথায় ছিল ফুলের মালা। সম্পূর্ণ ভারতীয় ঐতিহ্যের ছোঁয়া। দেখুন সেই ভিডিওঃ

 

বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, এদিনই রাত ৮টা ৪০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী মোদী মিশরের প্রধানমন্ত্রী মোস্তাফা মাডবাউলির সঙ্গে বৈঠক করবেন। দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে আলোচনা হবে। তারপরই মোদী দেখা করবেন মিশরে বসবাসকারী প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে। ১৯৯৭ সালের পর এই প্রথম কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মিশর সফর করছেন। তাই এই সফরের তাৎপর্য আর গুরুত্ব অনেক বলেও দাবি করেছে সাউথ ব্লক।

রবিবার প্রধানমন্ত্রী মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাতাহ আল সিসির সঙ্গে বৈঠক করবেন। চলতি বছর প্রজাতন্ত্র দিবসের বিশেষ কুচকাওয়াজে উপস্থিত ছিলেন মিশনের প্রেসিডেন্ট। স্বাধীনতার পর জোট নিরক্ষেপ আন্দোলনের সময় থেকেই মিশরের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক রয়েছে। তবে সম্প্রতি কাশ্মীরে জি-২০ বৈঠকে উপস্থিতি ছিলেন মিশরের রাষ্ট্রপতি। সেই আবহেই রবিবার মোদী বৈঠকে বসতে চলেছে তাঁর সঙ্গে। সূত্রের খবর অনুপস্থিতির বিষয় নিয়েও দুই রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে।

সূত্রের খবর শনিবার রাত ১০ট ২০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী মোদী মিশরের গ্র্যান্জ মুফতির সঙ্গে দেখা করবেন। মিশরের প্রথম সারির ব্যক্তিত্বদের সঙ্গেও আলোচনা করবেন তিনি। এই সফরেই প্রধানমন্ত্রী ১১ শতকে নির্মিত আল হাকিম মসজিদও পরিবর্শন করবেন। রবিবার বেলা ১টা নাগাদ প্রাচীন এই মসজিদে যেতে পারেন মোদী। এরপর দুপুর ২টো নাগাদ প্রধানমন্ত্রী যাবেন হেলিওপালিস ওয়ার সিমেন্টিতে। সেখানে প্রথম বিশ্ব যুদ্ধে নিহত ভারতীয় সেনাদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানাবেন তিনি। নিহত সেনারা মিশরকে রক্ষাকরার জন্যই আত্মত্যাগ করেছিল। এটি একটি স্মৃতিসৌধ, যা কমনওয়েলথ দ্বারা নির্মিত হয়েছে। ৩৭৯৯ জন ভারতীয় সেনার স্মারক এটি। এঁরা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় মিশরের বিভিন্ন স্থানে লড়াই করে মৃত্যু বরণ করেছিলেন।

মিশরের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকে পর দুই নেতা সমঝোতা স্মারকে স্বক্ষর করবেন। বিকেল সাড়ে ৫টা যৌথ সাংবাদিক বৈঠকও হতে পারে। সেখানেই দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলির নিয়ে বড় ঘোষণা হতে পারেষ সূত্রের খবর সুয়েজ ক্যানালের তীরবর্তী সুয়েজ ক্যানাল ইকোনামিক জোন-এর একাংশ ভারতীয় শিল্পপতিদের হাতে তুলে দিতে পারে মিশর সরকার। তাই নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে। বাণিজ্যিক দিক থেকে তো বটেই ভূকৌশলগত দিক থেকেও এই চুক্তি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এখনও সুয়েজ ক্যানালের গুরুত্ব অপরিসীম। ভূমধ্য সাগরের সঙ্গে ভারত মহাসাগর ও লোহিত সাগরের সঙ্গে সংযোগ রক্ষাকারী এই খাল দিয়েই প্রতিদিন ৫ লক্ষ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল জলফতে ভারতে আসে। রবিবারই মিশর থেকে তাঁর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।