আজ নিজের জন্মভিটে পরাউঙ্খ গ্রামে যান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ বিমান থেকে নামার পরই জন্মভিটের মাটি ছুঁয়ে প্রণাম করেন  রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর এই প্রথম জন্মভিটেতে গেলেন তিনি গ্রামে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গেই আবেগে ভাসেন রাষ্ট্রপতি

দেশের এক নম্বর নাগরিক তিনি। থাকেন রাইসিনা হিলসে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে। গোটা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও তাঁর মন পড়ে থাকে গ্রামের বাড়িতেই। আর সেই শিকড়ের টানেই আজ উত্তরপ্রদেশের কানপুর দেহাতের পরাউঙ্খ গ্রামে পা রাখলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। বিমান থেকে নামার পরই জন্মভিটের মাটি ছুঁয়ে প্রণাম করেন তিনি। 

আরও পড়ুন- করোনা টিকা নিয়ে দ্বিধা কাটাতে মোদীর মুখে 'মা'-এর কথা, জেনে নিন তাঁর 'মন কি বাত'

কানপুর দেহাতের পরাউঙ্খ গ্রামে জন্ম কোবিন্দের। সেখানেই কেটেছে তাঁর শৈশব, যৌবন। রাষ্ট্রপতি পদে আসীন হওয়ার পর থেকে আর ওই গ্রামে যাওয়া হয়নি। বহুবার চেষ্টা করেছেন কিন্তু, করোনার জন্য তা পিছিয়ে গিয়েছে। অবেশেষে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হতেই নিজের জন্মভিটেতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন তিনি। তবে ঠিক করেছিলেন বিমানে নয়, সফর করবেন ট্রেনে। আর সেই মতোই ২৫ জুন দিল্লির সফদরজং স্টেশন থেকে কানপুরের উদ্দেশ্যে ট্রেন ছেড়েছিল। ট্রেনের এই যাত্রার সঙ্গে সঙ্গে নিজের পুরোনো দিনগুলিতে ফিরে গিয়েছিলেন দেশের এক নম্বর নাগরিক। কানপুর স্টেশন পৌঁছানোর আগে দুটি জায়গাতে দাঁড়িয়েছিল ট্রেন। ঝিঞ্ঝক ও কানপুর দেহাতের রুয়ায়। সেখানে স্কুলের সহপাঠী, পরিচিত মানুষ ও আগে যাঁদের সঙ্গে সমাজসেবা মূলক কাজ করেছেন তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন রাষ্ট্রপতি। বেশ কিছুক্ষণ তাঁদের সঙ্গে সময় কাটান। একসঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলির স্মৃতিরোমন্থন করেন। 

আরও পড়ুন- 'মন কি বাত'-এ মিলখা সিংকে স্মরণ মোদীর, করোনা পরিস্থিতিতে চিকিৎসকদের অবদানকে কুর্নিশ

এরপর ফের রওনা দেন কানপুরের দিকে। অবশেষে আজ নিজের জন্মভিটেতে পা রাখেন তিনি। আর পা রাখার সঙ্গে সঙ্গেই আবেগে ভাসতে শুরু করেন রাষ্ট্রপতি। পরাউঙ্খের হেলিপ্যাডে নামার পরই মাটি ছুঁয়ে প্রণাম করেন। তাঁকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও রাজ্যপাল আনন্দিবেন প্যাটেল। এরপর দেহাতবাসীর উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় আবেগঘন হয়ে পড়েন কোবিন্দ।

Scroll to load tweet…

তিনি বলেন, "আমি স্বপ্নেও কখনও ভাবিনি যে আমার মতো গ্রামের একটা সাধারণ ছেলে দেশের সর্বোচ্চ দফতরের দায়িত্ব সামলাবে। কিন্তু, আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সেটাকে সম্ভব করেছে। আজ আমি যতটুকু পেয়েছি তার পিছনে এই মাটি, এই গ্রামের অনেক অবদান রয়েছে। এই অনুষ্ঠানে আমি দেশের সব স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রণাম জানাচ্ছি।" 

আরও পড়ুন- ৪১ বছর ছিলেন জঙ্গলে - মহিলাদের অস্তিত্ব সম্পর্কেই ধারণা ছিল না, দেখুন 'বাস্তবের টারজান'কে

আগামীকাল কানপুর থেকে ট্রেনে লখনউ যাবেন কোবিন্দ। এরপর সেখান থেকে বিমানে দিল্লি ফিরবেন তিনি। তবে তিনিই প্রথম রাষ্ট্রপতি নন যিনি ট্রেন সফর করলেন। দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদও রাষ্ট্রপতি পদে শপথ নেওয়ার পর ট্রেনে করে নিজের জন্মস্থানে গিয়েছিলেন। তখন অবশ্য বিমানের তেমন ব্যবস্থা ছিল না। গোটা দেশই তিনি ভ্রমণ করেছিলেন ট্রেনে। এরপর দেশের প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালাম ২০০৬ সালে দিল্লি থেকে ট্রেনে করে দেরাদুনে গিয়েছিলেন। আর তার ১৫ বছর পর ফের ট্রেনে সফর করলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।