সংক্ষিপ্ত
- করোনায় বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ২০ লক্ষ ছাড়াল
- সারাবিশ্বে প্রতিনিয়ত সংক্রমিত হচ্ছেন হাজারও মানুষ
- আধুনিক দেশগুলি ভাইরাস মোকাবিলায় নাজেহাল
- গবেষণা করতে গিয়ে জেরবার বিজ্ঞানীরাও
এই ভাইরাস সবার দেহে সমান প্রভাব ফেলে, সেটা আগেই জানিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। গবেষকরা বলে আসছেন, যাঁদের অন্য কোনোও রোগ রয়েছে, তাঁদের এই ভাইরাসে মৃত্যুঝুঁকি বেশি। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, এমন মানুষও মানুষ এই ভাইরাসে সংকটাপন্ন অবস্থায় পড়েছেন যাঁদের আগে থেকে কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা ছিল না।
আবার যাদের দেহে করোনার সংক্রমণের কোনো লক্ষণই দেখা যায়নি, তাঁদেরও অনেকেরই শরীরে করোনা পাওয়া গেছে। অনেকের ক্ষেত্রেই করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রতিক্রিয়া হচ্ছে মৃদু থেকে মাঝারি। আর প্রতি ৫ জনের মধ্যে ১ জনের বেলায় দেখা দিচ্ছে গুরুতর অসুস্থতা এবং গুরুতর আক্রান্তদের আধা থেকে এক-শতাংশের মৃত্যু হচ্ছে।
চিনে নিন বাস চালকের স্কুল ছুট কন্যাকে, যাঁর হাত ধরে বিশ্বে আবিষ্কার হয়েছিল করোনাভাইরাসের
করোনা মহামারীর মাঝে এবার হামের প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা, বন্ধের পথে ১১ কোটি শিশুর টীকাকরণ
মৃত্যু মিছিলে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রেকর্ড আমেরিকার, এবার 'হু' কে অনুদান বন্ধ করলেন ট্রাম্প
এই প্রকল্পের প্রধান তদন্তকারী অধ্যাপক রোরি কলিনস বলছেন, ‘আমরা হয়তো খুব দ্রুত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু আবিষ্কার করে ফেলতে পারি, যা হতে পারে গবেষকদের জন্য এক স্বর্ণখনি।’ অধ্যাপক কলিনস আরও বলছেন, করোনা সংক্রমিতদের মধ্যে পার্থক্যগুলো কী, তা জানার জন্য ইউকে বায়োব্যাংকে থাকা নুমনাগুলি পরীক্ষা করা হচ্ছে। মানুষের জিনগত গঠনে কী পার্থক্য আছে, এই পার্থক্যের সঙ্গে তাঁদের রোগ প্রতিরোধী বা ইমিউনিটি ক্ষমতার সম্পর্ক রয়েছে কিনা, তাঁদের পূর্ববর্তী স্বাস্থ্যগত অবস্থার মধ্যে কী কোনো ভিন্নতা আছে, সব কিছুই যাচাই করে দেখছেন বিজ্ঞানীরা।
আর এখানেই উঠছে প্রষ্ন। কোথায় লুকানো আছে এর রহস্য, তা খুঁজে বের করতে লাখো লাখো মানুষের ডিএনএ-কে কাজে লাগাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। ব্রিটেনের বায়োব্যাঙ্কে রয়েছে ৫ লক্ষ স্বেচ্ছাসেবক মানুষের রক্ত, থুতু ও প্রসাবের নমুনা। সঙ্গে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত এক দশকব্যাপী সময়ের তথ্য সংরক্ষণ। এর সঙ্গে এখন যোগ হয়েছে কোভিড ১৯ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য । এসব তথ্য আগে ক্যানসার , স্ট্রোক বা স্মৃতিভ্রংশ সম্পর্কে জানার জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। এবার তাতে যোগ হচ্ছে করোনাভাইরাস পজিটিভ টেস্ট সম্পর্কিত তথ্য এবং হাসপাতাল ও স্থানীয় চিকিৎসকদের মতামত। এই তথ্যভাণ্ডারে ঢুকতে পারেন পৃথিবীর নানা দেশের ১৫ হাজারেরও বেশি বিজ্ঞানী।
গবেষকরা একেকজন পুরো জিন তন্ন তন্ন করে পরীক্ষা করছেন– দেখছেন ডিএনএর মধ্যে কোথায় কোথায় অতিক্ষুদ্র সব পার্থক্য আছে। বিশেষ করে তাঁরা পরীক্ষা করে দেখছেন, এসিই-টু নামে একটি জিনকে, যা এক ধরনের রিসেপটর তৈরিতে সহায়তা করে। যার মাধ্যমে করোনাভাইরাস শ্বাসতন্ত্রে ঢুকে সেখানকার কোষগুলোকে সংক্রমিত করতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে করোনার এপিসেন্টার নিউইয়র্কের রকেফেলার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জঁ-লরেন্ট কাসানোভার নেতৃত্বে আরেকটি দলও এমন এক গবেষণা করছে। অধ্যাপক কাসানোভা বলছেন, "অতীত গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু লোকের ক্ষেত্রে যাঁদের ইমিউনিটির জন্মগত কোনোও ত্রুটি রয়েছে, তাঁদের ফ্লু বা হারপিসের মতো কিছু রোগ হলে তা গুরুতর চেহারা নিতে পারে। এমন হতে পারে যে এই জন্মগত ত্রুটি দশকের পর দশক দেহে সুপ্ত থাকতে পারে। যতদিন পর্যন্ত না তিনি ওই বিশেষ মাইক্রোবে সংক্রমিত হন, ততদিন এটি কেউ জানতেই পারে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কর্মসূচিতে এটিই দেখা হবে যে কোভিড ১৯-এর ক্ষেত্রেও এমন কিছু ঘটে কিনা।’