সংক্ষিপ্ত
রাজাপক্ষ তাঁর ও তাঁর পরিবারের নিরাপত্তার সাধারণে সাধারণ লাইনে দাঁড়িয়ে পাসপোর্ট স্ট্যাম্প করতে নারাজ ছিলেন। চারটে ফ্লাইট তাঁরা মিস করেন। তবে তারপর নৌঘাঁটিতে চলে যান। রাজাপক্ষের ভাইও দেশ ছাড়তে পারেননি।
পদত্যাগপত্রে সই করেছেন শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপক্ষে। তবে এখনই তা কার্যকর হচ্ছে না। সোমবারই নাকি তিনি পদত্যাগ পত্রে সই করেছেন। তবে তা কার্যকর হবে বুধবার থেকে। অর্থাৎ ১৩ জুলাই তারিখে তিনি সেই করেছেন। সোমবারই জল্পনা ছড়িয়ে পড়ে যে রাজাপক্ষে শ্রীলঙ্কা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। তবে রাষ্ট্রপতির ঘনিষ্ট সূত্র সেই দাবি অস্বীকার করেছে। একটি সূত্র বলছে শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি সেনাবাহিনীর নিরাপদ ডেরায় ছিলেন । মঙ্গলবার তিনি দেশ ছেড়ে চলে যান।
সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে মাত্তালা রাজাপক্ষে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কর্তব্যরত অভিবাসন কর্মীরা রাজাপক্ষে ও তাঁর স্ত্রীর পাসপোর্ট স্ট্যাম্প করার জন্য ভিভিআইপি স্যুটে যেতে অস্বীকার করেছেন। তিনি রাজাপক্ষ তাঁর ও তাঁর পরিবারের নিরাপত্তার সাধারণে সাধারণ লাইনে দাঁড়িয়ে পাসপোর্ট স্ট্যাম্প করতে নারাজ ছিলেন। তাঁদের ওপর হামলা হতে পারে বলও আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। সেই কারণে তাঁর স্ত্রীকে পরপর চারটে আন্তর্জাতি বিমান ছাড়তে হয়েছে। শেষপর্যন্ত তাঁরা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের পাশে একটি সামরিক ঘাঁটিতে রাত কাটিয়েছেন। সেখান থেকেই রাজাপক্ষে ও তাঁর স্ত্রী সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতে চলে গেছেন বলেও অনেকে মনে করছে। শ্রীলঙ্কার কোনও কর্মকর্তা এই বিষয়টি নিশ্চিত করেননি। তাই রাজাপক্ষে ও তাঁর স্ত্রী পরিবারের অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
একই অবস্থা হয়েছে রাজাপক্ষের ছোটভাই বাসিলের। তিনি শ্রীলঙ্কার অর্থমন্ত্রী ছিলেন। এপ্রিল মাসে অর্থনৈতিক সংকট যখন চরমে তখন তিনি পদত্যাগ করেন। মঙ্গলবার ভোরে বিমান বন্দরের কর্মীদের কোনও রকম সাহায্য না পাওয়ায় তিনিও দেশ ছেড়ে দুবাই যেতে পারেননি। বিমান বন্দরের এক কর্মী জানিয়েছে বেশ কয়েকজন যাত্রী বাসিলের প্লেনে ওঠার বিরুদ্ধে ছিল। আর সেই কারণেই প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীকে দ্রুত এয়ারপোর্ট ছেড়ে চলে যেতে হয়েছিল।
দীর্ঘ দিন ধরেই অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে শ্রীলঙ্কা। প্রবল চাপের কারণে গত মে মাসে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যেতে হয়েছে রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপক্ষের ভাই মাহিন্দ রাজাপক্ষেকে। তারপর গোতাবায়া প্রধানমন্ত্রীর পদে বসিয়েছিলেন তাঁরই বিশ্বস্ত রনিল বিক্রমাসিংহেকে। কিন্তু তারপরেই আর্থিক সংকট নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি।
বর্তমান গণবিক্ষোভে উত্তাল শ্রীলঙ্কা। বিক্ষোভকারীদের একমাত্র দাবি রাষ্ট্রপতি ও তাঁর পুরো মন্ত্রিসভাকে পদত্যাগ করতে হবে। রাজাপক্ষের পদত্যাগের দাবিতে লক্ষাধিক বিক্ষোভকারী জড়ো হয়েছে তাঁর সরকারি বাসভবনে। সরকারি বাড়ির পাশাপাশি রাষ্ট্রপতির অফিস থেকে শুরু করে সমস্তকিছুর দখল এখন বিক্ষোভকারীদের হাতে। এই অবস্থায় শনিবারই রাষ্ট্রপতিভবন ছেড়েছিলেন গোতাবায়া। একটি সূত্রের দাবি ছিল তিনি দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়ে গেছেন। দিও বর্তমানে স্পিকারের ঘনিষ্টসূত্রে জানা গেছেন গোতাবায়া সেনা বাহিনীর নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছেন। সেখান থেকেই যাবতীয় কাজকর্ম সামলাচ্ছেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ
অশোক স্তম্ভ বিতর্ক- জাতীয় প্রতীকের অপমান বলে তৃণমূলের আক্রমণ মোদী সরকারকে, মত দিল ডিজাইনাররা
অস্থির শ্রীলঙ্কায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ২০ জুলাই, এখনও সিংহাসন আঁকড়ে রয়েছেন রাজাপক্ষে
GTA-র বৈঠকের পরেই অন্য মেজাজে মমতা, ফুচকা তৈরি করে বিলি করলেন তিনি- দেখুন ছবিতে