সংক্ষিপ্ত

পরণে চামড়ার জ্যাকেট, কালো সানগ্লাস এবং পিছনে একটি বিশালাকার ক্ষেপণাস্ত্র - স্লো মোশনে হেঁটে আসছেন কিম জং উন (North Korean dictator Kim Jong Un)। সিনেমায় নামলেন নাকি উত্তর কোরিয়ার (North Korea) সর্বময় নেতা? 
 

পরণে চামড়ার জ্যাকেট, কালো সানগ্লাস এবং তাঁর পিছনে একটি বিশালাকার ক্ষেপণাস্ত্র, হেঁটে আসছেন স্লো মোশনে - হলিউডি সিনেমায় নামলেন নাকি উত্তর কোরিয়ার একনায়ক কিম জং উন (North Korean dictator Kim Jong Un)? শুক্রবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি দেখলে সকলেরই প্রথমে এই কথাই মনে হবে। কিন্তু, এটা আসলে পিয়ংইয়ং-এর (Pyongyang) বৃহত্তম আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (Intercontinental Ballistic Missile) উৎক্ষেপণের সগর্ব ঘোষণা। ২০১৭ সালের পর এই প্রথম আরও একটি আইসিবিএম (ICBM) পরীক্ষা করল উত্তর কোরিয়া (North Korea)। যার ভিডিও তৈরি করা হয়েছে একেবারে হলিউডি স্টাইলে।

কী দেখা যাচ্ছে সেই ভিডিওয়? ক্যামেরার দিকে হাঁটছেন মুখ করে স্লো মোশনে হেঁটে আসছেন কিম জং উন। তাঁর দুই পাশে তাঁর দুই বিশ্বস্ত জেনারেল। আর পিছনে রয়েছে তাদের দৈত্যাকার হোয়াসং-১৭ ক্ষেপণাস্ত্র (Hwasong-17 missile)। এরপর পুরো সিনেম্যাটিক আবহ সঙ্গীতের সঙ্গে ক্যামেরার দ্রুত কাটে দুই জেনারেল এবং কিম-কে তাঁদের ঘড়ি দেখতে দেখা যায়। এরপর, ফের স্লো মোশন, কিম তাঁর সানগ্লাস খুলে সম্মতি দেন, সৈন্যরা বিশাল ক্ষেপণাস্ত্রটিকে পরীক্ষাস্থলে নিয়ে যাওয়া শুরু করে। 

আরও পড়ুন - Kim Jong-Un's Toilet: সঙ্গে শৌচাগার নিয়ে ঘোরেন কিম জং-উন, রক্ষীরা পাহারা দেয় তার মল-মূত্র

আরও পড়ুন - জল্পনা উস্কে দিয়ে প্রকাশ্যে কিমের স্ত্রী, পাঁচ মাস তাঁকে দেখা যায়নি কোনও অনুষ্ঠানে

আরও পড়ুন - North Korea Fires Missile: শক্তিশালী মিসাইল উড়িয়ে হুংকার কিমের, ২০২২ সালে ৭টি মিসাইল পরীক্ষা

এরপর মিসাইল লঞ্চ পর্যন্ত একটি নাটকীয় কাউন্টডাউন দৃশ্য ঘটে। তারপর, উত্তর কোরিয়া সেনারা ফায়ার বলে চিৎকার করে ওঠেন। অবশেষে, পরীক্ষার জন্য বোতামে চাপ দেওয়া হয়। সফলভাবে উড়ে যায় হোয়াসং-১৭ ক্ষেপণাস্ত্র, যাকে উত্তর কোরিয়া দানবিক ক্ষেপণাস্ত্র বলেছিল। তারপর উত্তর কোরিয় সেনা থেকে জেনারেল এবং কিমকে হাসিমুখে আনন্দ প্রকাশ করতে দেখা যায়।  

সেই ভাইরাল ভিডিও -

YouTube video player

বলাই বাহুল্য কিম জং উনের এই হলিউডি স্টাইলে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার ঘোষণাকারী ভিডিও, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এই নিয়ে বইছে মিমের ঝড়। তবে, সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ভিডিওকে অন্যভাবে পড়তে হবে। তাঁদের মতে, ভিডিওটির স্টাইল বলছে, পিয়ংইয়ং-এর তার সামরিক সক্ষমতার প্রতি আস্থা ক্রমে বাড়ছে। তারা নিজেদের সামরিক শক্তির প্রতি এতটাই আস্থাশীল যে, তারা ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার ঘটনাটিকে একটি সিনেমার দৃশ্যে পরিণত করতে এবং উপভোগ করতেও এখন স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে।

তবে, উত্তর কোরিয়ার নেতাদের সিনেমার প্রতি আগ্রহের ইতিহাস রয়েছে। কিমের বাবা তথা পূর্বসূরি কিম জং ইল (Kim Jong Il) একজন বড় সিনেমাপ্রেমী ছিলেন। ১৯৭৮ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার (South Korea) একজন চলচ্চিত্র পরিচালক এবং একজন অভিনেত্রীকে তিনি অপহরণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। লক্ষ্য ছিল, তাঁদের সহায়তায় উত্তর কোরিয়ার সিনেমা শিল্পের বিকাশ ঘটানো। এমনকী, বর্তমানে যখন গোটা দেশ দারিদ্রে ডুবে গিয়েছে, তখনও সেই দেশে চলচ্চিত্র ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিনিয়োগ করা হচ্ছে। তবে, অধিকাংশই, কিম ও তাঁর পরিবারের প্রশংসামূলক সিনেমা। 

তবে, এই সিনেমাসুলভ ভিডিওর আড়ালে, হোয়াসং-১৭ নামে দৈত্যাকার আইসিবিএমটির সফল পরীক্ষা হল, সেই দিকেও নদর রাখা দরকার বলে জানাচ্ছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রথম সামনে আনা হয়েছিল ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে। সামরিক বিশ্লেষকরা জানিয়েছিলেন এটি ভয়ঙ্কর শক্তিশালী। কিম সাফ জানিয়েছিলেন, এই ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করা হয়েছে, যাতে আমেরিকা তাঁর দেশে কোনও সামরিক পদক্ষেপ না নিতে পারে, তার জন্য।