পাকিস্তানে গাধার দাম আকাশছোঁয়া, যার ফলে গরিব মালিকদের জীবিকা হুমকির মুখে। চীনে এক বিশেষ ওষুধের ক্রমবর্ধমান চাহিদা এর কারণ।
চিনে গাধার কদর: চিনে গাধার চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে। এখানকার মানুষ গাধা পালন বা তার দুধের জন্য পছন্দ করছে না, বরং তাদের জবাই করে বিশেষ ওষুধ তৈরি করছে। Ejiao নামের এই ওষুধের চাহিদা বাড়ছে, যার ফলে চিন পাকিস্তানের মতো দেশ থেকে বিপুল সংখ্যক গাধা আমদানি করছে। চিনের গাধার ব্যাপক চাহিদার কারণে পাকিস্তানে গাধা পালনকারী গরিব মানুষ সমস্যায় পড়েছে। গাধার দাম আকাশছোঁয়া। এর ফলে এখন গাধা পালন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এতে জীবিকা হুমকির মুখে। এরকমই একজন গাধা মালিক আব্দুল রশিদ। বর্তমানে তিনি চরম সমস্যায়। গত সপ্তাহে টাইগার নামের তার গাধা দুর্ঘটনায় মারা যায়। এটি ছিল তার আয়ের একমাত্র উৎস।
গাধা না থাকলে গাড়ি কে টানবে। গাড়ি না চললে রশিদের আয় কোথা থেকে হবে। এখন রশিদের জন্য নতুন গাধা কেনা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। করাচি এবং পাকিস্তানের অন্যান্য অঞ্চলে একটি গাধার দাম ২ লাখ টাকা (পাকিস্তানি) পর্যন্ত পৌঁছেছে। আট বছর আগে রশিদ টাইগার নামের গাধাটি কিনতে ৩০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন।
রশিদ একা নন। পাকিস্তানের অনেক গরিব মানুষ যারা জীবিকার জন্য গাধার উপর নির্ভরশীল ছিল, এখন একই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। এর কারণ চিনে গাধার ক্রমবর্ধমান চাহিদা।
এজিয়াও কি?
এজিয়াও একটি চিনা ঐতিহ্যবাহী ওষুধ। এটি গাধার চামড়া থেকে তৈরি করা হয়। ধারণা করা হয় এটি ক্লান্তি দূর করতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, টিউমার কমাতে এবং রক্তাল্পতা নিরাময়ে সাহায্য করে। চিনের এজিয়াও শিল্পে ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। নিজ দেশে পর্যাপ্ত গাধা না থাকায় চিনা ক্রেতারা পাকিস্তানের দিকে ঝুঁকছে। এখানে গাধা সস্তা এবং সহজলভ্য।
গাধার সংখ্যায় তৃতীয় স্থানে পাকিস্তান
ইথিওপিয়া এবং সুদানের পরে গাধার সংখ্যায় পাকিস্তান তৃতীয় স্থানে। এখানে প্রায় ৫৯ লাখ গাধা রয়েছে, যাদের কাজে ব্যবহার করা হয়। পাকিস্তানে ইটভাটা এবং কৃষি থেকে শুরু করে পরিবহন এবং এমনকি কাপড় ধোয়ার কাজেও গাধা অনেক শিল্পের জন্য অপরিহার্য। উঁচু-নিচু রাস্তায় ভারী জিনিসপত্র বহন করতে এদের ব্যবহার করা হয়। এতে একটি গাধা থেকে প্রতিদিন ১,৫০০-২,০০০ টাকা (পাকিস্তানি) পর্যন্ত আয় হয়। এর অর্ধেক গাধার খাবার এবং যত্নে ব্যয় হয়।


