ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার মতে, 'ডিজিটাল হাওয়ালা'র আড়ালে পাকিস্তান জুড়ে ৩১৩টি নতুন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র মার্কাজ তৈরির জন্য অর্থ পাচার করা হচ্ছে।
মৌলানা মাসুদ আজহারের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জৈশ-ই-মোহাম্মদ (JeM) ইজিপয়সা এবং সাদাপে-এর মতো পাকিস্তানি ডিজিটাল ওয়ালেটের মাধ্যমে ৩.৯১ বিলিয়ন পাকিস্তানি রুপি (প্রায় ১৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) সংগ্রহ করেছে বলে জানা গেছে। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার মতে, 'ডিজিটাল হাওয়ালা'র আড়ালে পাকিস্তান জুড়ে ৩১৩টি নতুন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র মার্কাজ তৈরির জন্য অর্থ পাচার করা হচ্ছে।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন যে এই ওয়ালেটগুলির কিছু সরাসরি আজহারের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যুক্ত। এগুলি সন্ত্রাসবাদের অর্থায়নের মাধ্যম হয়ে উঠেছে। বেশ কিছু সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেইনে ফলোয়ার্সদের অর্থের জন্য অবদান রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। যার মাধ্যমে জৈশের ভেঙে গুঁড়িয়ে যাওয়া ঘাঁটিগুলিকে ফের তৈরি করার লক্ষ্যে একটি তহবিল সংগ্রহ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
২০১৯ সালের জাতীয় কর্মপরিকল্পনার অধীনে পাকিস্তান সরকার একবার দাবি করেছিল যে জৈশের আর্থিক জীবনরেখা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। মাসুদ আজহার এবং তার ভাইদের—রাউফ আসগর এবং তালহা আল সাইফ—এর ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলি নাকি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, নগদ লেনদেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং তহবিল সংগ্রহ বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু নেটওয়ার্কগুলির উপর নজরদারি থাকায়, জৈশ দ্রুত ডিজিটাল ওয়ালেটের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। আপাতত জইশ SWIFT-এর নজরদারি ব্যবস্থাগুলিকে একপাশে রেখে, নির্বিঘ্নে তার আর্থিক পুনরুত্থান অব্যাহত রাখতে পারে।
৭ মে ভারতের 'অপারেশন সিন্দুর'-এর পর এই নতুন তহবিল সংগ্রহের তাগিদ দেখা দেয়, যখন ভারতের হামলায় মার্কাজ সুবহানাল্লাহ এবং জৈশের আরও চারটি শিবির ধ্বংস হয়ে যায়, যার ফলে আজহারের শ্যালক এবং ভাগ্নে সহ ১৪ জন জঙ্গি নিহত হয়। প্রতিশোধ হিসেবে, জৈশ ৩১৩টি কেন্দ্র নির্মাণের জন্য তহবিল সংগ্রহের জন্য সমর্থকদের প্রতি ২১,০০০ পাকিস্তানি টাকা করে দান করার আহ্বান জানিয়ে একটি ডিজিটাল আবেদন চালু করে।
প্রচার নেটওয়ার্কে প্রচারিত একটি অডিওতে, ১৫ আগস্ট মার্কাজ উসমান ও আলীতে সমর্থকদের সমাবেশে তালহা আল সাইফকে বলতে শোনা যায়: “দান করুন এবং পুনর্নির্মাণের জন্য আপনার কর্তব্য পালন করুন।”
জানা গিয়েছে ২০০০-এরও বেশি ডিজিটাল ওয়ালেট ব্যবহার করা হচ্ছে, একটি সাদাপে অ্যাকাউন্ট তালহার মোবাইল নম্বরের সঙ্গে যুক্ত এবং আরেকটি ইজিপয়সা অ্যাকাউন্ট আজহারের ছেলে আব্দুল্লাহ পরিচালনা করেন। খাইবার পাখতুনখোয়ায়, জৈশের সৈয়দ সাফদার শাহ নাকি ওঘি, মানসেহরা জেলার একটি ইজিপয়সা ওয়ালেটের মাধ্যমে দান সংগ্রহ করছেন। হামাসের সঙ্গে জৈশের ঘনিষ্ঠতার কারণে, আশঙ্কা রয়েছে যে এই ডিজিটাল যুদ্ধ ভান্ডারের কিছু অংশ কালোবাজার থেকে আক্রমণকারী ড্রোন পাওয়ার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।


