Pahalgam Terror Attack: অনেক দেশই সরকারিভাবে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার নিন্দা করে ভারতের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে। ব্যতিক্রম পাকিস্তান। এই হামলার নিন্দা করা দূর, উল্টে উস্কানি দিচ্ছে পাকিস্তান।

Shehbaz Sharif on Pahalgam terror attack: পহেলগাঁওয়ে (Pahalgam) জঙ্গি হামলার নিন্দা করা তো দূর, উল্টে যুদ্ধের (India-Pakistan War) উস্কানি দিলে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ (Pakistani Prime Minister Shehbaz Sharif)। মঙ্গলবার দুপরে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা (Terrorist Attack) হয়েছে। তারপর তিন দিন পেরিয়ে গিয়েছে। অবশেষে এ বিষয়ে মুখ খোলার সময় পেলেন পাক প্রধানমন্ত্রী। তবে একসঙ্গে ২৬ জন নিরীহ মানুষকে নৃশংসভাবে হত্যা করার ঘটনার নিন্দা করলেন না তিনি। উল্টে এই ঘটনায় নিজেদের পিঠ বাঁচানোর চেষ্টা করলেন। একইসঙ্গে তাঁরা যে ভারতীয় সেনাবাহিনীর (Indian Army) প্রত্যাঘাতের আশঙ্কা করছেন, সে কথাও বুঝিয়ে দিলেন। নিজেদের সেনাবাহিনীকে তৈরি রাখার কথা জানিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী। তিনি যুদ্ধের ইঙ্গিত করে ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

শান্তি চায় পাকিস্তান!

পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইশাক দার (Ishaq Dar) প্রকাশ্যে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের স্বাধীনতা সংগ্রামী বলেছেন। এই জঙ্গি হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের সরাসরি যোগ থাকার বিষয়টি প্রমাণিত হয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে নিজেদের মুখরক্ষা করার তাগিদে পাক প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘পাকিস্তান যে কোনও নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ তদন্তের জন্য তৈরি। শান্তিই আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা কখনও আমাদের অখণ্ডতা ও নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করব না।’ জঙ্গিদের আশ্রয় দেওয়া, মদত দেওয়া, প্রশিক্ষণ দেওয়া, ভারতে অনুপ্রবেশে সাহায্য করার জন্য সারা বিশ্বে কুখ্যাত পাকিস্তান। সেই দেশের প্রধানমন্ত্রী এখন চাপে পড়ে শান্তিকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলছেন। তাঁর এই বক্তব্য হাস্যকর বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল। কারণ, দশকের পর দশক ধরে কাশ্মীরে ছায়াযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার দায়স্বীকার করেছে পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবার (Lashkar-e-Taiba) ছায়া সংগঠন। ফলে পাক প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করা সম্ভব নয়। মুখে যতই আস্ফালন করুন না কেন, তিনি যে চাপে পড়েই এই বিবৃতি দিলেন, তা স্পষ্ট।

যুদ্ধের উস্কানি পাক প্রধানমন্ত্রীর

২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় (Pulwama) জঙ্গি হামলায় অন্তত ৪৪ জন সেনাকর্মীর মৃত্যু হয়েছিল। তারপর বালাকোটে (Balakot airstrikes) এয়ারস্ট্রাইক করে ভারতীয় বিমানবাহিনী। জঙ্গিদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। এবার পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পরেও একইরকম প্রত্যাঘাতের আশঙ্কা করছে পাকিস্তান। শরিফের কথাতেই তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘কারও মনে ভুল ধারণা রাখা উচিত নয়। আমাদের সশস্ত্রবাহিনী পুরোপুরি দক্ষ এবং দেশকে রক্ষা করার জন্য তৈরি। যে কোনও দুঃসাহসিক কাজের ক্ষেত্রে আমাদের দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষা করার জন্য তৈরি সশস্ত্রবাহিনী। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ক্রমাগত অনুপ্রবশ চালিয়ে যাচ্ছে ভারত। এর মাপা অথচ সাহসিকতাপূর্ণ জবাব দিয়ে নিজেদের দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছে আমাদের সশস্ত্রবাহিনী।’

সিন্ধু জলবণ্টন বন্ধ করা নিয়ে চাপে পাকিস্তান

ভারতের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি (Indus treaty) স্থগিত রাখা হচ্ছে। এর অর্থ, পাকিস্তানে আর সিন্ধুর জল যাবে না। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। পাকিস্তানের ৮০ শতাংশ কৃষিজমি সিন্ধুর জলের উপর নির্ভরশীল। এছাড়া পাকিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রও সিন্ধুর জলের উপর নির্ভর করে। এই জল বন্ধ হয়ে গেলে পাকিস্তানের কৃষি ও বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে প্রভাব পড়বে। এই কারণে ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়ে পাক প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পাকিস্তানের যে জল প্রাপ্য, তা কমিয়ে দেওয় বা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হলে তাঁরা পূর্ণশক্তিতে এর জবাব দেবেন। লস্কর-ই-তইবার প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ সইদও (Hafiz Saeed) কিছুদিন আগে সিন্ধুর জল নিয়ে ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। সিন্ধুর জল বন্ধ করে দিলে ভারতে রক্তগঙ্গা বইয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে এই জঙ্গি নেতা। ঘটনাচক্রে তার সঙ্গে পাক প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য মিলে যাচ্ছে। পাকিস্তানে সরকার ও সন্ত্রাসবাদীদের মধ্যে যে পার্থক্য নেই, তা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।