সংক্ষিপ্ত

পাকিস্তানের হিন্দু নেতা এবার ইমরান খানের দল ছাড়লেন। বলেন হিংসা মেনে নিতে পারছেন না। সেই কারণে দলত্যাগ। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চেয়েছিলেন।

 

জয় প্রকাশ পাকিস্তানের বিশিষ্ট হিন্দু নেতা। ইমরান খানের ঘনিষ্ট। তাঁর আরও একটি পরিচয় রয়েছে- তিনি পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির সংখ্যালঘু সেলের সদস্য। তিনি শুক্রবার পদত্যাগ করেছেন। গত ৮ মে দেশের সেনা বাহিনীর অফিসে ও সরকার ভবনে হামলার প্রতিবাদেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখনই পর্যন্ত জয় প্রকাশই শেষে পিটিআই নেতা যিনি ইমরান খানের গ্রেফতারির পর দেশের অরাজক অবস্থার পরে দল ছাড়লেন। শুক্রবার পিটিআরও সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি ৯ মে বিক্ষোভের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, 'পাকিস্তানের অস্তিত্ব সেনাবাহিনীর কারণে, এবং আমরাও পাকিস্তানের কারণেই রয়েছে।' তিনি আরও জানিয়েছেন ৮ মে পর্যন্ত দল ত্যাগের কথা তাঁর মনেই আসেনি। দল ছাড়ার কোনও ইচ্ছে ছিল না। কিন্ত ৯ মে ঘটনার কারণে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন জয় প্রকাশ।

তবে জয় প্রকাশের দলত্যাগ নিয়ে পাকিস্তানের নতুন করে উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করেছে। পিটিআই-এর সিন্ধু প্রদেশের নেতা জানিয়েছেন, জয় প্রকাশকে দিয়ে জোর করে এই কথা বলা হয়েছে। তাঁকে তাঁর বাসভবন থেকে ৪০ জন মুখোশধারী লোক তুলে নিয়েছে। তারপর তারাই ভিডিও করে তা আপলোড করেছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।

জয় প্রকাশের আগে পিটিআই সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী মুবিন খিলজি দল ছাড়েন। তিনি বলেন, ইমরান খানের গ্রেফতারির প্রতিবাদ শান্তিপূর্ণ হোক তা তিনি চেয়েছিলেন। কিন্তু গোটা পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। ভাঙচুর করা হয়, যা তিনি মেনে নিতে পারেননি। সেই কারণে দল ছাড়েছেন বলেও জানিয়েছেন মুবিন। তবে হিংসাত্মক ঘটনার পর থেকেই ইমরান খানের দল ক্রমশই কমজোরি হচ্ছে। একদিনে পুলিশের ধরপাকড় চলছে। অন্যদিকে একের পর এক নেতা দল ছাড়ছেন। পুলিশ দাবি করছে হিংসাত্মক ঘটনায় পিটিআই-এর ১০ জন সদস্য মারা গেছে, সেখানে পিটিআই দাবি করছে তাদের কমপক্ষে ৪০ জন সদস্য মারা গেছে। হিংসাত্মক ঘটনার কারণে এখনও পর্যন্ত পাকিস্তান থেকে ৭ হাজার পিটিআই কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যারমধ্যে শুধুমাত্র পঞ্জাবব প্রদেশ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৪ হাজার সমর্থককে।

গতকাল ইমরান খান ভিডিও বার্তায় বলেছেন, পাকিস্তানের রাজনৈতিক অস্থিরতা শেষ করার একমাত্র উপায় হল সাধারণ নির্বাচন। পিডিএম নেতারা ও নওয়াজ শরিফ , যিনি লন্ডনে লুকিয়ে রয়েছে, দেশের সংবিধানকে অপমান করছেন বলেও অভিযোগ করেন ইমরান খান। তিনি বলেন, পাকিস্তান সরকার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলিকে ধ্বংস করছে। পাকিস্তানের সেনা বাহিনীর য়ে বদনাম হচ্ছে তা নিয়েও তিনি উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন। ইমরান জানিয়েছেন, তিনি ও তাঁর দল দেশের লুণ্ঠিত সম্পদ বাঁচানোর স্বার্থ খুঁজছে। ইমরান বলেন, তিনি দেশের আসন্ন বিপর্যয়ের কথা ভেবে রীতিমত ভয় পাচ্ছেন। তাঁর দেশের দেশের ক্ষমতাবানদের কাছে তাঁর একটাই আর্জি 'যত দ্রুত সম্ভব সাধারণ নির্বাচন। নির্বাচনই একমাত্র দেশকে বাঁচাতে পারে।' তিনি আরও বলেন পুলিশ তাঁর বাড়ি ঘিরে রেখেছে। যেকোনও সময়ই তিনি গ্রেফতার হতে পারেন। তিনি আরও বলেন তাঁর বিরুদ্ধে একটি বড় ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। নেতৃত্বে রয়েছে দেশের জোট সরকার ও পঞ্জাবের তত্ত্বাবধায়ক সরকার।