শুক্রবার পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের নওশেরা জেলার একটি মসজিদের ভেতরে আত্মঘাতী বোমা হামলার খবর পাওয়া গেছে। 

শুক্রবার পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের নওশেরা জেলার একটি মসজিদের ভেতরে আত্মঘাতী বোমা হামলার খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, বহু মানুষ মারা গেছে এবং আহত হয়েছে। নওশেরা জেলায় শুক্রবার দারুল উলুম হাক্কানিয়া মাদ্রাসার প্রধান প্রার্থনা কক্ষে জোরালো আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটে। এই বিস্ফোরণে জমিয়ত উলেমা-ই-ইসলাম (জেইউআই-এস)-এর প্রধান মৌলানা হামিদুল হক হাক্কানিসহ কমপক্ষে চারজনের মৃত্যু হয়েছে, এবং অনেকে আহত হয়েছেন। হামলার পেছনে মূল সন্দেহভাজন আইএসকেপি।

পুলিশ আত্মঘাতী হামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছে

কেপি পুলিশের মহাপরিদর্শক জুলফিকার হামিদ জানিয়েছেন, বিস্ফোরণটি তখনই ঘটে যখন লোকেরা জুমার নামাজের জন্য জড়ো হয়েছিল। পুলিশের মতে, এই হামলায় তিন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। কেপি পুলিশ প্রধানের মতে, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে যে হামলার মূল লক্ষ্য ছিল মৌলানা হামিদুল হক হাক্কানি।

Scroll to load tweet…

মৌলানা হাক্কানির রাজনৈতিক ও ধর্মীয় যাত্রা

মৌলানা হামিদুল হক হাক্কানি ছিলেন প্রখ্যাত ইসলামি পণ্ডিত এবং জমিয়ত উলেমা-ই-ইসলাম-সমীর সভাপতি। তিনি একজন সাংসদও ছিলেন এবং ২০০২ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত জাতীয় পরিষদের সদস্য ছিলেন। তার পিতা মৌলানা সামিউল হককেও হত্যা করা হয়েছিল।

গত বছর, মৌলানা হাক্কানি তালেবান নেতাদের সাথে ধর্মীয় কূটনীতির অধীনে আলোচনার জন্য আফগানিস্তান সফর করেছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন যে এই সফর ইসলামাবাদ এবং কাবুলের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে সাহায্য করেছিল। 

আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে

হামলার পরপরই উদ্ধারকারীরা আহতদের নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যান। সরকার পেশোয়ার সহ সমস্ত হাসপাতালে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। খাইবার পাখতুনখোয়া সরকার স্বাস্থ্য বিভাগকে সমস্ত প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সুবিধা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে।

কড়া নিন্দা এবং তদন্তের নির্দেশ

পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি আসিফ আলী জারদারি এবং প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী কর্মকর্তাদের তাৎক্ষণিক তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার এবং আহতদের সর্বোত্তম চিকিৎসা সুবিধা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভিও এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে বলেছেন যে, এই ধরনের কাপুরুষোচিত আतঙ্কবাদী হামলা দেশের শান্তি ভঙ্গ করার উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে, তবে সরকার আতঙ্কবাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে।

কে ছিল হামলাকারী, এখনও জানা যায়নি

এখনও পর্যন্ত কোনও আतঙ্কবাদী সংগঠন এই আত্মঘাতী হামলার দায় স্বীকার করেনি। তদন্তকারী সংস্থাগুলি এই বিষয়টির গভীর তদন্ত করছে। এই হামলা পাকিস্তানে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিয়ে আবারও প্রশ্ন তুলে ধরেছে।