সংক্ষিপ্ত
মোল্লা বরাবদর বা আখুন্দজাদ নয়, নয়া আফগান রাষ্ট্রপ্রধান হতে যাচ্ছে মোল্লা মহম্মদ হাসান আখুন্দ। কে এই স্বল্পপরিচিত তালিবান নেতা?
গত কয়েক দিনের জল্পনার অবসান ঘটিয়ে মোল্লা মহম্মদ হাসান আখুন্দ-কে নতুন আফগান রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে মনোনীত করেছে তালিবানরা। সোমবার রাতেই এই খবর জানা গিয়েছিল। তার আগে এই পদের দৌড়ে এগিয়ে ছিল তালিবানদের রাজনৈতিক প্রধান মোল্লা আব্দুল ঘানি বরাবদর। মাঝে শোনা যাচ্ছিল তালিবান প্রধান হিবাতুল্লা আখুন্দজাদই হবেন রাষ্ট্রপ্রধান। কিন্তু, সকলকে চমকে দিয়ে উঠে এসেছে হাসান আখুন্দ-এর নাম। এখন প্রশ্ন হল কে এই হাসান আখুন্দ? আসুন চিনে নেওয়া যাক, সম্ভাব্য নয়া আফগান রাষ্ট্রপ্রধানকে।
মোল্লা মহম্মদ হাসান আখুন্দ, বর্তমানে তালিবানদের সর্বশক্তিশালী সিদ্ধান্তগ্রহণকারী সংস্থা, রেহবাড়ি শুরা বা নেতৃত্ব পরিষদের প্রধান। তাদের পরামর্শ মেনেই চলে তালিবান প্রধান আখুন্দজাদ। তালিবানরা জানিয়েছে, গত ২০ বছর ধরে সুনামের সঙ্গে রেহবাড়ি শুরার প্রধানের দায়িত্ব সামলাচ্ছে সে। হাসান আখুন্দ জন্মেছিল কান্দাহার। যে আফগান প্রদেশে জন্ম হয়েছিল তালিবান গোষ্ঠীর। শুধু তাই নয়, রাষ্ট্রসংঘ জানিয়েছে যে মূল ৩০ জনকে নিয়ে তালিবান গোষ্ঠীর পথ চলা শুরু হয়েছিল, তাদেরই একজন হাসান আখুন্দ। সেইসঙ্গে তালিবানি সশস্ত্র আন্দোলনেরও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।
"
তবে, সামরিক ক্ষেত্রে তার ভূমিকার থেকেও সে তালিবানদের মধ্যে একজন ধর্মীয় নেতা হিসাবেই বেশি পরিচিত। পাকিস্তানের বিভিন্ন মাদ্রাসায় পড়াশোনা করা আখুন্দ, তার চরিত্র এবং নিষ্ঠার জন্য তালিবান সদস্যরা তাকে অত্যন্ত সম্মান করে। ওয়াশিংটন ডিসির ন্যাশনাল সিকিউরিটি আর্কাইভ বলছে, সে পশ্চিমী শক্তিগুলি এবং মুজাহিদিন - দুই পক্ষের প্রতি সমান ঘৃণা পোষণ করে। আর তার জন্য়ই তালিানদের অন্যতম কার্যকর কমান্ডার হিসাবে বিবেচনা করা হয় তাকে।
সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদেও কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে তার। আগের তালিবানি সরকারে যখন মোল্লা মহম্মদ রব্বানী আখুন্দ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, সেই সময় বিদেশমন্ত্রী ছিল হাসান আখুন্দ। তারপর উপ-প্রধানমন্ত্রী হয়েছিল। ২০০১ সালে কান্দাহার প্রদেশের গভর্নর েবং মন্ত্রী পরিষদের ভাইস প্রেসিডেন্টের পদের দায়িত্বে ছিল। প্রতিরক্ষা, গোয়েন্দা, অভ্যন্তরীন বিষয়, সুপ্রিম কোর্ট, সংস্কৃতি ও যোগাযোগ, একাডেমি মন্ত্রকের তত্ত্বাবধান করত সে। ২০১০ সালে তাকে বন্দি করা হয়েছিল বলেও শোনা যায়।
তবে এতকিছুপ পরও, তালিবান নেতা হিসেবে খুব লো প্রোফাইলে থাকে মোল্লা হাসান আখুন্দ। তালেবান নেতা বরাদর, হাক্কানি এমনকী জাবিবুল্লাদের তুলনায় অত্যন্ত স্বল্প পরিচিত সে। তবে, কার্যকারিতায় অনেকের থেকেই গিয়ে, এমনটাই দাবি তালিবানদের।।
আরও পড়ুন- এবার তালিবানি ধর্ষণের শিকার পুরুষও - দেশ ছাড়ার টোপ দিয়ে তৈরি ফাঁদ, দেখুন ছবিতে ছবিতে
আরও পড়ুন - ২০ বছর পর সামনে এল আল-কায়েদার গোপন ষড়যন্ত্র - ৯/১১-র পরই ছিল আরও বড় হামলার ছক, দেখুন
বিভিন্ন উপদলের মধ্যে মতবিরোধে এখন পর্যন্ত যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে সরকার গঠন করতে পারেনি চরমপন্থী ইসলামি গোষ্ঠীটি। তিনটি তালিবান গোষ্ঠীর মধ্য়ে মূলত দ্বন্দ্বটা চলছে - মোল্লা বরাদরের নেতৃত্বাধীন দোহা ইউনিট, সিরাজুদ্দিন হাক্কানির জঙ্গিদল হাক্কানি নেটওয়ার্ক এবং তালিবানদের কান্দাহার গোষ্ঠী।