- Home
- World News
- International News
- মার্কিন শুল্ক সঙ্ঘাতের আবহে কাছাকাছি ভারত-চিন! SCO-র মঞ্চে ঘুচবে মোদী-জিনপিং দূরত্ব?
মার্কিন শুল্ক সঙ্ঘাতের আবহে কাছাকাছি ভারত-চিন! SCO-র মঞ্চে ঘুচবে মোদী-জিনপিং দূরত্ব?
Modi On China: গালওয়ানের বরফ গলিয়ে দীর্ঘ সাতবছর পর লাল চিনে পা রাখলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানের বন্দর শহর তিয়াংজিং-এ বিশ্বনেতাদের সঙ্গে সাংহাই বৈঠকে যোগ দেবেন নমো। আজকের এই বৈঠক থেকেই জানা যাবে কোন পথে এগোচ্ছে ভারত-চিন সম্পর্ক।

দীর্ঘ সাতবছর পর চিনে পা রাখলেন নরেন্দ্র মোদী
গালওয়ান থেকে ডোকালাম চিনের সঙ্গে সীমান্ত ইস্যুতে বিগত ২০১৮ সাল থেকে ভারতের সম্পর্ক ছিল প্রায় তলানিতে। যদিও গত বছর রাশিয়ার মস্কোয় অনুষ্ঠিত ব্রিকস সম্মেলনে গিয়ে জিংপিং এর সঙ্গে একান্তে বৈঠকে সেই বরফ যে কিছুটা হলেও গলেছে তা বোঝা গেল শনিবার এসসিও বৈঠকে যোগ দিতে জাপান সফর সেরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর চিনের মাটিতে পা রাখার পর। ২০১৮ সালের পর সাতবছর পর বেজিং সফরে গেলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ৩১ ও ১ সেপ্টেম্বর সেখানে এসসিও বৈঠকে যোগ দেবেন তিনি। এছাড়াও আলাদা করে বৈঠকে বসতে পারেন চিনের রাষ্ট্রপতি জিংপিং-এর সঙ্গেও।
আমেরিকার সঙ্গে শুল্ক সঙ্ঘাতে কাছে এলো চিন!
ভারত-মার্কিন সম্পর্ক যখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কারণে তিক্ততায় পূর্ণ, তখন এই শীর্ষ সম্মেলন এবং মোদী-জিং-পুতিনের আলোচনা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মহল। কারণ, চিনের বন্দর শহর তিয়ানজিন আগামী দু'দিন বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে। কারণ এখানেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (SCO) সম্মেলন। এই সম্মেলনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, শি জিনপিং এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের মধ্যে হতে চলা দ্বিপাক্ষিক বৈঠক।
ভারতের সঙ্গে দূরত্ব ঘুচিয়ে কাছাকাছি চিন
সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষে রবিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে দুটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। পরের দিন অর্থাৎ ১ সেপ্টেম্বর সোমবার, প্রধানমন্ত্রী মোদী, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকগুলিতে দুই দেশের সম্পর্কের বিভিন্ন দিক, বাণিজ্য, অর্থনীতি এবং আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত সাত বছরে এটি প্রধানমন্ত্রীর প্রথম চীন সফর, যা উভয় দেশের সম্পর্ক মেরামতের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য সুযোগ হিসেবে মনে করা হচ্ছে।
মোদী-ট্রাম্প দ্বন্দ্বে উত্তপ্ত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক
সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণ ক্রমশ তীব্র হচ্ছে। ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে রাশিয়া থেকে ভারতের তেল কেনা নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার সরব হয়েছেন। এমনকি, হোয়াইট হাউসের উপদেষ্টা পিটার নাভারো তো আরও এক ধাপ এগিয়ে ইউক্রেন সংঘাতকে "মোদীর যুদ্ধ" বলে মন্তব্য করেছেন। এহেন পরিস্থিতিতে, এসসিও সম্মেলনে মোদীর উপস্থিতি এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিতে চলেছে। বিশেষত, যখন ট্রাম্পের মতো ব্যক্তিত্বরা ভারতকে ক্রমাগত আক্রমণ করছেন, তখন শি জিনপিং এবং পুতিনের মতো বিশ্বনেতাদের পাশে মোদীর উপস্থিতি নিঃসন্দেহে ট্রাম্পকে কড়া বার্তা দেবে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মহল।
ভারত-চীন সম্পর্কে নতুন মোড়?
এদিনের বৈঠকে সবার নজর রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক নিয়ে। গত বছর অক্টোবর মাসে রাশিয়ার কাজানে এক বহুপাক্ষিক সম্মেলনে মোদি ও শি-এর মধ্যে বহু বছর পর এক সংক্ষিপ্ত বৈঠক হয়েছিল। এর আগে, দুই দেশ এমনকি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চেও একে অপরকে এড়িয়ে চলত। তবে, সেই বৈঠক হয়েছিল লাদাখে ভারত ও চীনের মধ্যে চলা বিবাদমান দুটি স্থান থেকে সেনা সরানোর সিদ্ধান্তের পরেই। ২০২০ সালে গালওয়ানে সীমান্ত সংঘাতের পর দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছিল। সম্প্রতি, চলতি বছরের মে মাসেও ভারত চিনকে তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবেই দেখছিল, কারণ সেই সময়ে চিনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাকিস্তানকে সহযোগিতা করছিল। এই পরিস্থিতিতে, মোদী ও শি-এর বৈঠক দুই দেশের সম্পর্কের বরফ গলাতে কতটা কার্যকর হবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

